নাজমুল হোসেন শান্ত পরিচয় বাইয়োগ্রাফি

নাজমুল হোসেন শান্ত

নাজমুল হোসেন শান্ত একজন বাংলাদেশী প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটার। বর্তমানে নাজমুল হোসেন শান্তকে নিয়ে গুগলের প্রচুর সার্চ করছে। নাজমুল হোসেন শান্তর ক্যারিয়ার জীবন সম্পর্কে আজকে আলোচনা করব। ঘরের ক্রিকেটে নাজমুল হোসেন শান্তর অবদান পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার অবদান সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব।

নাজমুল হোসেন শান্তর প্রোফাইল

নাজমুল হোসেন শান্ত ২৫ মে ১৯৯৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাড়ি রাজশাহী জেলায়। তিনি বাংলাদেশের একজন প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটার। তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেটের লিস্ট এ ক্যাটাগরির প্লেয়ার,  বা হাতি ব্যাটসম্যান এবং ডান হাতে ফাস্ট বোলার হিসেবে পরিচিত। ২০১৬ আইসিসি অনূর্ধ্ব ১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপের জন্য ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশের অনূর্ধ্ব ১৯ ক্রিকেট দলের প্লেয়ার হিসেবে নির্বাচিত হন। টি-টোয়েন্টি ফরমেটে বাংলাদেশীদের মধ্যে ঘরোয়া ক্রিকেটে সেঞ্চুরির দিক থেকে সাব্বির রহমানের পরেই নাজমুল হোসেন শান্তর অবস্থান।

নাজমুল হোসেন শান্তর ক্যারিয়ার সূচনা

রাজশাহী জেলা থেকে উঠে এসেছেন তিনি এছাড়া তার ক্রিকেট জীবন শুরু হয় ক্লেমন রাজশাহী ক্রিকেট একাডেমির মাধ্যমে।  এই ক্রিকেট একাডেমি তার বাড়ি থেকে বিশ কিলোমিটার দূরে ছিল কিন্তু তারপরেও তিনি সাইকেলে করে অথবা পায়ে হেঁটে একাডেমিতে আসতেন।

নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যক্তিগত জীবন

ব্যক্তিগত জীবনে নাজমুল হোসেন শান্ত বিবাহিত। তিনি ২০২০ সালে সাবরিনা সুলতানা রত্নাকে বিয়ে করেন। এটা ছিল কোভিড 19 এর লকডাউনের সময়।

নাজমুল হোসেন শান্তর বিকশিত হওয়ার গল্প

উচ্চ ব্যাকলিফ্ট সহ মার্জিত বাঁ হাতি খেলোয়াড় নাজমুল হোসেন ২০১৪ থেকে রাজশাহীর অভ্যন্তরীণ ম্যাচে খেলা শুরু করেন ‌। তিনি অল্প বয়সেই সকলের নজর কাটতে সক্ষম হন, স্কুল পর্যায়ে একটি খেলায় একদিনের ম্যাচে ডাবল সেঞ্চুরি করার পর আরো বেশি নজরে আসেন। ২০১৪ সালে ১৫ বছর বয়সে সাউথপা অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপের জন্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। এছাড়া ২০১৫ সালের মৌসুমে রাজশাহী বিভাগের হয়ে প্রথম শ্রেণীর সেঞ্চুরি তালিকাভুক্ত করেন।

২০১৬ সালের দিকে মূলত নাজমুল হোসেন শান্তর কেরিয়ার ফুলতে শুরু করে। অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপের মাধ্যমে তার নাম  সবচেয়ে বেশি ছড়ায়। এছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকা এবং স্কটল্যান্ড এর বিপক্ষে সেরা পুরস্কার পেয়েছিলেন নাজমুল। সে সময় 259 রাম সংগ্রহ করে তার দলকে তৃতীয় স্থানে এনেছিলেন। সে বছরই বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের চতুর্থ আসরে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স তাকে দলে নেয়। টাইমাল মিলস, তাসকিন এবং মোহাম্মদ নবীর বিপক্ষে অভিষেক ম্যাচে তিনি একটি ফিফটি করেন।

জাতীয় দলে নাজমুল হোসেন শান্তর অভিষেক

২০১৬ সালের নিউজিল্যান্ড সফরে জাতীয় দলের প্রস্তুতিমূলক ক্যাম্পে নির্বাচকেরা নাজমুলকে বেছে নিয়েছিলেন। কেউ ঈদের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টের শুরুতে মমিনুল হকের ইনজুরির পর নাজমুলকে বাংলাদেশের টেস্ট দলে যোগ করা হয়। ক্রাইস্টচার্চে অভিষেকে তিনি ১৮ এবং ১২ রান করতে পেরেছিলেন।

ঘরোয়া ক্রিকেটে নাজমুল হক শান্তর অবদান

ঘরোয়া ক্রিকেটে 8 নভেম্বর ২০১৬ তারিখে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ার্স এর হয়ে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ এ অভিষেক হয়।

২০১৭-১৮ জাতীয় ক্রিকেট লীগে রাজশাহী বিভাগের হয়ে ঢাকা মেট্রোপলিসের বিপরীতে সেরা উদ্বোধনী জুটি হিসেবে 341 রান করে রেকর্ড তৈরি করেন।

এছাড়া ২০১৭-১৮ ঢাকা প্রিমিয়ার বিভীষণ ক্রিকেটে ১৬ টি খেলায় ৭৪৯ রান নিয়ে তিনি টুর্নামেন্টের সেরা রান সংগ্রহকারী হিসেবে রেকর্ডভুক্ত ছিলেন।

২০১৮-১৯ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের নিলামে খুলনার টাইটানস এর স্কোয়াডে অন্তর্ভুক্ত হন ২০১৮ এর অক্টোবর মাসে। এছাড়া ২০১৯-২০ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়ায় ট্রেনিং নিয়ে যারা অংশগ্রহণ করেছিলেন তাদের মধ্যে নাজমুল হোসেন শান্তর নাম অন্তর্ভুক্ত ছিল। ২০১৯ সালের প্রিমিয়ার লিগে খুলনা টাইগার্স হয়ে খেলার জন্য নির্বাচিত হন।

এরপর ২০২০ এ বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপ প্রতিযোগিতায় ১২ নভেম্বর অনুষ্ঠিত খেলোয়াড় নিলামে মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহী শান্ত কে নিলামে কিনে নেয়। এবং সেবার তিনি রাজশাহী দলের অধিনায়কত্ব করেন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নাজমুল হোসেন শান্তর অর্জন

এবার আমরা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নাজমুল হোসেন শান্তর কি কি প্রাপ্তি রয়েছে সে সম্পর্কে আলোচনা করব।

প্রথমত ২০১৬ সালের নভেম্বরে নিউজিল্যান্ড সফরে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অস্ট্রেলিয়ার ট্রেনিং ক্যাম্পের জন্য 22 সদস্যের দলে তাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। সেই সঙ্গে ২০১৭ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপরীতে দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচের পূর্বে থাকে বাংলাদেশের টেস্ট স্কোয়াডে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। আর এভাবেই তিনি টেস্ট ম্যাচের প্রথম আন্তর্জাতিক অভিষেক এর স্বাদ গ্রহণ করেন।

অন্যদিকে 2018 সালে এশিয়া কাপের পূর্বে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড যে ৩১ জন সদস্যের প্রাথমিক দল ঘোষণা করে এবং পরবর্তীতে ১২ জন খেলোয়াড়কে অভিষেক ঘটানো হয় তাদের মধ্যে তিনি একজন ছিলেন।

একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে হয়ে প্রথম অভিষেক ঘটে 2018 সালে 20 ডিসেম্বর। যদিও 2018 এসএসসি উদীয়মান এশিয়া কাপের পর দল থেকে ছিটকে পড়েন কিন্তু পরবর্তীতে ২০১৯-২০ বাংলাদেশ ত্রিদেশীয় সিরিজে আবারো ডাক পায়।

আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলায় প্রথম অভিষেক ঘটে ২০১৯ এর ১৮ই সেপ্টেম্বর জিম্বাবুয়ের বিপরীতে খেলার সময়।

তথ্যসূত্রঃ উইকিপিডিয়াইএসপিএনক্রিকবাজ

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *