লো প্রেসার হলে কি খাবার খাওয়া উচিত
আজকের পোস্ট এর মধ্যে রয়েছে লো প্রেসার হলে কি খাবার খাওয়া উচিত সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিন। হাই প্রেসার লো প্রেসার দুটোই শরীরের জন্য খুবই মারাত্মক। আপনার শরীরের রক্তচাপ যদি বেশি হয় বা কম হয় দুটি ক্ষতিকারক।
এজন্য শরীর সুস্থ রাখার জন্য রক্তের চাপ হলো ১২০/ ৮০ রক্তচাপ যদি স্বাভাবিকের চেয়ে কম হয় সে ক্ষেত্রে হৃদপিন্ড মস্তিষ্ক শরীরের অন্যান্য অংশে রক্ত প্রভাব কমে যায়। মাথা ঘোরানো মাথা ঝিমঝিম করা দুর্বলতা এমনকি মৃত্যু পর্যায় পারে ।
নিচের কয়েকটি লক্ষ যদি আপনার শরীরের দেখা দেয় তাহলে অবশ্যই আপনি চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করতে হবে। লো প্রেসার হলে কি খাবার খাওয়া উচিত জেনে নিন।
- বমি বমি ভাব
- মাথা ধরা
- অবসাদ
- মাথা ঘোরানো
- জ্ঞান না থাকা
- দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া
উপরে উল্লিখিত বিষয়গুলো যদি আপনার লো প্রেসার এর কোন লক্ষণ হয়ে থাকে সে ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
অল্প অল্প করে বারবার খাবার খেতে হবেঃ
অতিরিক্ত খাবার না খেয়ে অল্প অল্প করে খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। কিছুক্ষণ পর পর যদি খাবার খেতে থাকেন তাহলে পেটে ক্ষুধা কম লাগবে যার ফলে আপনার লো প্রেসারের সমস্যা দেখা দেবে না। খোদা করে যদি আপনি থাকেন সেক্ষেত্রে আপনার লো প্রেসারের সমস্যা দিবে এবং অসুস্থ হয়ে পড়ে যাবেন। যাদের লো প্রেসার রয়েছে তারা দিনে 6 বার খাবার খাওয়ার অভ্যাস করুন।
লবন খাওয়াঃ
লবণ অতিরিক্ত খাওয়ার কারণে শরীরের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে কিন্তু যাদের লো প্রেসার রয়েছে তারা একটুও পরিমাণের চেয়ে একটু বেশি লবণ খেতে পারেন। যাদের হাইপ্রেশার রয়েছে তারা লবণ খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বলেছেন প্রতিদিন একজন মানুষের 1 চা-চামচ লবণ খাওয়া দরকার। তা হতে পারে ফল বা সবজি এর সাথে। খাদ্য তালিকা থেকে পুরোপুরি বাদ দেওয়া হলে আপনি সুস্থ থাকবেন না। গরমের সময় যদি লেবুর পানিতে লবণ দিয়ে খেলে ফেলুন শরীর ভালো থাকবে।
লো প্রেসারের কারণে লেবুর শরবত এবং সেলাই খেতে পারেন।
তরল জাতীয় খাবারঃ
প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খেতে হবে। যে কোনো ফলের রস ডাবের পানি বেলের শরবত লেবুর শরবত ইত্যাদি খাওয়ার অভ্যাস করুন। যাদের লো প্রেসার রয়েছে তারা বেদানার শরবত খেতে পারেন খুবই কার্যকরী।
তুলসী পাতাঃ
তুলসী পাতা তে রয়েছে ভিটামিন সি ম্যাগনেসিয়াম পটাশিয়াম। তুলসী পাতা লো প্রেসার নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে । তুলসী পাতা রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। প্রতিদিন সকালে 4 থেকে 6 টি তুলসী পাতা চিবিয়ে চিবিয়ে খাওয়ার অভ্যাস করুন।
আমন্ড দুধঃ
সারা রাতের জন্য আমন্ড দুধ ভিজিয়ে রাখুন 6 থেকে 7 টি। ঘুম থেকে উঠে আমরুদ পেস্ট করে একসাথে গরম দুধ মিশিয়ে খেতে পারেন। আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করবে।
কফিঃ
স্ট্রং কফি, হট চকোলেট, কমল পানীয়সহ যে কোনো ক্যাফেইন সমৃদ্ধ পানীয় দ্রুত ব্লাড প্রেসার বাড়াতে সাহায্য করে। হঠাৎ করে লো প্রেসার দেখা দিলে এক কাপ কফি খেতে পারেন। যারা অনেক দিন ধরে এ সমস্যায় ভুগছেন, তারা সকালে ভারী নাশতার পর এক কাপ স্ট্রং কফি খেতে পারেন।
কিশমিশ:
হাইপার টেনশনের ওষুধ হিসেবে প্রাচীনকাল থেকেই ব্যবহৃত হয়ে আসছে কিশমিশ। এক-দুই কাপ কিশমিশ সারা রাত পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। সকালে খালি পেটে কিশমিশ ভেজানো পানি খেয়ে নিন। এছাড়া পাঁচটি কাঠবাদাম ও ১৫ থেকে ২০টি চিনাবাদাম খেতে পারেন।
যষ্টিমধু:
আদিকাল থেকেই যষ্টিমধিু বিভিন্ন রোগের মহৌষধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এক কাপ পানিতে এক টেবিল চামচ যষ্টিমধু দিয়ে পান করুন। এছাড়া দুধে মধু দিয়ে খেলেও উপকার পাবেন। বিটের রস: বিটের রস হাই ও লো প্রেসার- উভয়টির জন্য সমান উপকারী।
এটি রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে ভূমিকা রাখে। হাইপার টেনশনের রোগীরা দিনে দুই কাপ বিটের রস খেতে পারেন। এভাবে এক সপ্তাহ খেলে উপকার পাবেন।
লো প্রেশার বা নিম্ন রক্তচাপের কারণঃ
সঠিক খাবার না খাওয়াঃ
সঠিকভাবে সঠিক সময়ে সঠিক খাবার যদি না খেতে পারেন সে ক্ষেত্রে আপনার লো প্রেসার এর সমস্যা দেখা দেবে। আমাদের শরীরের নির্দিষ্ট পরিমাণের খাবারের চাহিদা রয়েছে। সময় সময়মতো আর সঠিক ভাবে সে খাবার না খাওয়ার কারণে লো প্রেসারের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
পানিশূন্যতাঃ
বিভিন্ন কাজে এবং প্রচুর পরিমাণে গরমের কারণে শরীর থেকে পানি চলে যায় এজন্য প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। প্রচুর পরিমাণে পানি খাওয়ার অভ্যাস করুন এবং হাই পেশার 2 ঠিক থাকবে। লো প্রেসার নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খাওয়ার অভ্যাস করুন।
দুশ্চিন্তাঃ
অতিরিক্ত টেনশন ব্যর্থতার কারণে লো প্রেসারের সমস্যা দেখা দিতে পারে। মানসিক অসুস্থতার কারণে বিভিন্ন ধরনের চিন্তা ভাবনার কারণে শরীরের অনেক ঘাটতি হয়ে যায় যার ফলে লো পেশার সমস্যা দেখা দেয়। লো প্রেসার নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্য চিন্তা মুক্ত থাকুন।
অতিরিক্ত পরিশ্রমঃ
অতিরিক্ত পরিশ্রম করার জন্য আপনার লো পেশার সমস্যা দেখা দিতে পারে। পরিশ্রম সবসময় শরীরের সাথে সহনীয় মাত্রায় হতে পারে। আর তা মাত্র ছাড়া ছাড়ালে লো প্রেসার হতে পারে।
অপর্যাপ্ত ঘুমঃ
ঘুম কমের কারণে লো প্রেসারের সমস্যা দেখা দেয়। সময়মতো যদি ঘুম না হয় তাহলে লো প্রেসারের সমস্যা দেখা দেয়। তাই পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমের প্রয়োজন। আপনি যদি ঘুমও 7 সাথে 8 ঘণ্টা সঠিক ঘুমা লো প্রেসার থেকে মুক্তি পাবেন। লো প্রেসার নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্য অবশ্যই আপনাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাতে হবে।
অপুষ্টিঃ
আপনার শরীরের যদি অপুষ্টি দেখা দেয় সেক্ষেত্রে লো প্রেসারের সমস্যা হবে। শরিরে পুষ্টি না থাকার কারণে লো প্রেসার এর জন্য অনেক মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। তাই শরীর পুষ্টি বাড়ানো উচিত। তাহলে আপনি লো প্রেসার নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারবেন।
বদ হজমঃ
বদহজমের লক্ষণ যদি হয়ে থাকে সে ক্ষেত্রে আপনার লো প্রেসারের সমস্যা দেখা দিবে নিশ্চিত। তাই বদহজম নিয়ন্ত্রণ লো প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
ডায়রিয়াঃ
ডায়রিয়ার সময় যদি বমি বমি ভাব দেখা যায় মাথা ঘোরানো ইত্যাদি হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে আপনাকে বুঝে নিতে হবে আপনার লো প্রেসার সমস্যা দেখা দিচ্ছে।
রক্তশূন্যতাঃ
আপনার শরীরের যদি রক্তশূন্যতা দেখা দেয় সে ক্ষেত্রে লো প্রেসারের সমস্যা দেখা দেবে। তাই রক্ত শূন্যতা ঠিক রাখতে পারো লো প্রেসার থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে ।
রক্তপাতঃ
আপনার শরীরের যদি কোথাও কেটে যায় বা অন্য কোনো কারণে জন্য রক্ত অতিরিক্ত হয় সে ক্ষেত্রে লো প্রেসারের সমস্যা দেখা দিবে।
হরমোনের ভারসাম্যহীনতাঃ
কিছু কিছু লোকের হরমোনের ভারসাম্যহীনতা রয়েছে তাদের লো প্রেসারের সমস্যা দেখা দেয়।
গর্ভকালীন অবস্থায়ঃ
গর্ভকালীন অবস্থায় প্রত্যেকটির নারীদের প্রথম ছয় মাসে হরমোনের প্রভাবে কারণে পেশার হয়ে । পরবর্তীতে সমস্যা ঠিক হয়ে যায়।
অন্যান্যঃ
এছাড়াও হার্টের সমস্যা, অ্যাড্রিনাল গ্রন্থির সমস্যা, শরীরে তাপমাত্রার তারতম্য, গ্যাসট্রিকের সমস্যা, কোন দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত থাকা, নার্ভের সমস্যা ইত্যাদি কারণেও প্রেশার লো হয়। বেশ কিছু ওষুধের পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ার কারণেও প্রেশার লো হতে পারে।
লো প্রেসার এর লক্ষণঃ
অনেক সময় দেখা যায় ভাষা থেকে উঠে দাঁড়ালে চোখ ঝাপসা লাগে এবং মাথা ঘোরে থাকে এই সমস্যাটা হয়েছে লো প্রেসারের কারণে।
- মাথা ঘুরানো এবং মাথা হালকা ব্যথা
- লো প্রেসার হলে মাথা ঘুরাবে এবং অজ্ঞান হয়ে যাবে
- লোকের কারণে এর কারনে চোখে ঝাপসা অন্ধ অন্ধকার ভাব
- লো প্রেসার হলে বমি হতে পারে
- লো প্রেসারের কারণে খুব বেশি পানির পিপাসা লাগতে পারে
- শারীরিক ও মানসিক অবসাদ
- লো প্রেসার হলে ঘনঘন শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যা হয়
- প্রসাব কমে যাওয়া লো প্রেসার এর লক্ষণ
- অস্বাভাবিক দ্রুত হৃদ কম্পন হওয়া।
লো প্রেসার হলে কি খাবার খাওয়া উচিত
খাবার স্যালাইনঃ
প্রেসার লো হলে বা কমে গেলে খাবার স্যালাইন খাওয়ার চেষ্টা করুন। লো প্রেসার হলে খাবার স্যালাইন খাওয়ার কারণে প্রেসার নিয়ন্ত্রণ হবে। লো প্রেসার এর রোগীদের খাবার স্যালাইন খুবই কার্যকরী।
বাদাম ও মধুঃ
লো প্রেসার যাদের রয়েছে তারা বাদাম ও মধু খাওয়ার অভ্যাস করুন। লো প্রেসারের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য কাজুবাদাম কাঠবাদাম পেস্তা বাদাম খাওয়ার চেষ্টা করুন।
পুদিনা পাতাঃ
লো প্রেসার নিয়ন্ত্রণ রাখতে পুদিনা পাতা খুবই কার্যকরী। ন প্রেসার নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্য পুদিনা পাতা ব্যবহার করুন।
ব্যায়ামঃ
লো প্রেসার হাই পেশার 2 টা ঠিক রাখার জন্য ব্যায়াম করা খুবই জরুরী। প্রেসারের রোগীদের ব্যায়াম করা খুবই দরকার। লোকেশন দেখা দিলে খাবার খাওয়ার সাথে সাথে শারীরিক পরিশ্রম করতে হবে। তবে লো প্রেসার ঠিক রাখার জন্য সঠিক সময়ে খাবার খেতে হবে।
তাজা শাকসবজিঃ
শাক সবজিতে রয়েছে ভিটামিন সি ভিটামিন ডি ভিটামিন ও এসিড ইত্যাদি তাই প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি খাওয়ার অভ্যাস করুন। হাই প্রেসার লো প্রেসার নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্য অবশ্য শাকসবজি খেতে হবে প্রচুর পরিমাণের।