প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন নিয়ম

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন নিয়ম

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন নিয়ম  সম্পর্কে আপনার জানার থাকলে আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে জানতে  পারবেন । যারা প্রবাসে বসবাস করেন  তাদের প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন নিয়ম  সম্পর্কে জানার প্রয়োজন রয়েছে । তাই আজকে আমরা প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন নিয়ম  সম্পর্কে এ টু জেড ধারণা নেওয়ার চেষ্টা করব।  আশা করছি এই পোস্টটি সম্পূর্ণ টা পড়লে তা আপনি প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন নিয়ম  সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা পাবেন।

ঋণের প্রকৃতি : প্রবাসী কর্মসংস্থান ঋণ প্রকল্প

২।ঋণ সীমা: চাকুরীর জন্য বিদেশ গমনের নিমিত্ত প্রকৃত বিমান ভাড়া, শ্রম ও জনশক্তি এবং প্রবাসী কল্যান ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিয়োগকারী সংস্থাকে সরকারী নিয়মানুযায়ী প্রদেয় কমিশন, সার্ভিস চার্জ ও অন্যান্য চার্জসহ প্রকৃত খরচের ১০০%, তবে তা হবে সর্বোচ্চ ৩.০০ (তিন) লক্ষ টাকা পর্যন্ত।

৩।ঋণের মেয়াদ:৩ (তিন ) মাস গ্রেস পিরিয়ডসহ ২৪ (চব্বিশ)/৩৬ (ছত্রিশ) মাস। চাকুরীর কন্ট্রাক্ট ফর্মে বর্ণিত মেয়াদানুযায়ী ঋণের মেয়াদ নির্ধারিত হবে।

৪।সুদের হার: ১২% সরল সুদ হারে আরোপ ও আদায়যোগ্য। তবে সুদ নীতিমালা অনুযায়ী তা পরিবর্তনযোগ্য। কোন কিস্তি খেলাপী না হলে আরোপিত সুদের উপর ২% রিবেট দেয়া হবে।

৫।ঋণ প্রাপ্তির যোগ্যতা: বিদেশে চাকুরীর জন্য চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হিসেবে কার্যানুমতিপ্রাপ্ত ও ভিসাপ্রাপ্ত শুধুমাত্র বাংলাদেশী নাগরিক এ ঋণ পাওয়ার যোগ্য। তবে ঋণ মঞ্জুরীর পূর্বে ঋণ আবেদনকারী ও জামিনদাতার নিজ/স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে সিআইবি প্রতিবেদন সংগ্রহ করতে হবে। যে রিক্রুটিং এজেন্সীর মাধ্যমে বিদেশে চাকুরী নিবেন সে এজেন্সীকেও জনশক্তি রপ্তানীর ক্ষেত্রে গ্রহনযোগ্য ও সুনামের অধিকারী হতে হবে।

৬।ঋণের্ আবেদন: ঋণগ্রহীতাকে ব্যাংকের নির্ধারিত ফরমে ও লিখিত স্বাক্ষরযুক্ত আবেদন করতে হবে। আবেদনপত্রের সাথে নিম্নবর্নিত কাগজপত্রাদি দাখিল করতে হবে।

ক) সংশ্লিষ্ট সিটি কর্পোরেশন/পৌরসভা/ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক ইস্যুকৃত আবেদনকারীর নাগরিকত্ব সনদপত্র।

খ) ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি।

গ) পাসপোর্ট সাইজের ৩ (তিন) কপি সত্যায়িত ছবি।

ঘ) পাসপোর্টের সত্যায়িত ফটোকপি।

ঙ) বিদেশে চাকুরীর নিয়োগপত্রের সত্যায়িত ফটোকপি।

চ) নিয়োপত্রের সঠিকতা সম্পর্কে বাংলাদেশ সরকারের শ্রম ও জনশক্তি এবং প্রবাসী কল্যান ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রনালয়ের অনুমোদনপত্রের ফটোকপি।

ছ) শ্রম ও জনশক্তি এবং প্রবাসী কল্যান ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রনালয় কর্তৃক আবেদনকারীর অনুকূলে ইস্যুকৃত বিদেশ গমনের কমিশন/সার্ভিস চার্জের বিবরণ সম্বলিত প্রতয়ন পত্র।

জ) মাসিক বেতন থেকে প্রেরনযোগ্য অর্থের পরিমান ও চাকুরীর মেয়াদকাল সম্পর্কে শ্রম ও জনশক্তি এবং প্রবাসী কল্যান ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রনালয়ের গমন পত্র। প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে অভিবাসন ঋণ নেওয়ার যোগ্যতা, শর্ত, কাগজপত্র ও সুদের হার। দেখা যায় যে, বাংলাদেশের অনেক লোকবল বিদেশে উপার্জনের জন্য যেতে জমিজমা, ভিটেমাটি বিক্রি করে দেন।

এভাবে নিজের জমি বা অন্যান্য সম্পদ বিক্রি করার ফলে অনেকেই বিপদগ্রস্ত হয়েছেন। জমিজমা এবং অন্যান্য সম্পদ যাতে বিক্রি করতে না হয় সে দিকে লক্ষ্য করে বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক (Probashi Kallyan Bank) একটি বিশেষ ঋণ বা লোন (Loan) প্রদান প্রদান করে। আপনি যদি এই লোন নেওয়ার জন্য উপযুক্ত মনে করেন এবং এই লোন আপনার প্রয়োজন হয় তাহলে ব্যাংকে সরাসরি আবেদন করুন। প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের ‘অভিবাসন ঋণ’ নেওয়ার জন্য কোনো ধরনের প্রসেসিং ফি বা কোনো ধরনের চার্জ দিতে হয় না। বিদেশপামী কর্মীদের সহজ শর্তে জামানতবিহীন অভিবাসন খণ গ্রহণে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র বা ডকুমেন্টস।

বিনামুল্যে সরবরাহকৃত ব্যাংকের নির্ধারিত আবেদন ফরমে আবেদন দাখিল।

  • ঋণ আবেদনকারীর ৪ কপি পাসর্পোট সাইজের ছবি
  • জাতীয় পরিচয়পত্রেএ ফটোকপি
  • বর্তমান ঠিকানা এবং স্থায়ী ঠিকানাসহ পৌরসভা/ ইউনিয়ন পরিষদের সার্টিফিকেট এর ফটোকপি
  • আবেদনকারীর পাসপোর্ট, ভিসার কপি ও ম্যানপাওয়ার স্মার্ট কার্ডের ফটোকপি এবং লেবার কন্ট্রান্ট পেপার (যদি থাকে, বাধ্যতামূলক নয়)
  • ২ (দুই) জন জামিনদারের ১ (এক) কপি করে পাসপোর্ট সাইজের ছবি, জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি, বর্তমান ঠিকানা এবং স্থায়ী ঠিকানাসহ পৌরসভা/ইউনিয়ন পরিষদের সার্টিফিকেট এর ফটোকপি
  • জামিনদারদের যে-কোনো ১ জনের স্বাক্ষরকৃত ব্যাংকের ৩ টি চেকের পাতা
  • ঋণ গ্রহণের পূর্বে অত্র ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট শাখায় হিসাব খুলতে হবে।

ঋণ সীমা।

  • নতুন ভিসার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৩.০০ (তিন) লক্ষ টাকা
  • রি-এন্ট্রি ভিসার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ২.০০ (দুই) লক্ষ টাকা।

ঋণের মেয়াদ।

  • নতুন ভিসার ক্ষেত্রে খণের মেয়াদ সর্বোচ্চ ০৩ (তিন) বছর
  • রি-এন্ট্রি ভিসার ক্ষেত্রে খণের মেয়াদ সর্বোচ্চ ০২ (দুই) বছর।

ধাপের পরিশোধসূচী।

২ (দুই) মাস গ্রেস পিরিয়ড বাদ দিয়ে মাসিক কিস্তিতে পরিশোধযোগ্য।

সুদের হার।

প্রবাসীন কল্যাণ ব্যাংকের অভিবাসন ঋণের সুদের হার ৯% (সরল সুদ)।

সেবা প্রদানের সময়সীমা। প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন নিয়ম

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন নিয়ম এর ক্ষেত্রে সেবা প্রদানের সময়সীমা সম্পর্কে যা বলা হয় । যথাযথ কাগজপত্রসহ আবেদনকারীর আবেদন করার পর তা যাচাই ও অন্যান্য প্রক্রিয়াকরণ শেষ হতে ৭ কর্মদিবসের বেশি লাগে না। এ ক্ষেত্রে অভিবাসন ঋণ বা লোনের আবেদনকারী আবেদনের পর ৭ কর্মদিবিসের মাথায় লোন পেয়ে যাবেন।

কত টাকা চার্জ লাগে?

প্রবাসী কল্যান ব্যাংকের অভিবাসন ঋণ বা লোন গ্রহণের জন্য কোনো ধরনের সার্ভিস চার্জ নেই। আবেদন থেকে শুরু করে লোন পাওয়া পর্যন্ত সমস্ত প্রক্রিয়াকরণ বিনামূল্যে করা হয়।

ব্যাংক ঋণ: কাজের জন্য বিদেশ যেতে বাংলাদেশিরা যে ঋণ সুবিধা নিতে পারেন।

বাংলাদেশ থেকে কাজের জন্য যারা প্রবাসে যেতে চান বা প্রবাস থেকে দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছেন, তাদের আর্থিক সহায়তার জন্য সরকারি ব্যাংকগুলোর সহায়তা নিতে আহ্বান জানিয়েছে সরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। প্রায় দশ বছর আগে প্রবাসীদের সহায়তায় বাংলাদেশে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক চালু করা হয়।

এ পর্যন্ত সেই ব্যাংক থেকে ৫৩ হাজারের বেশি মানুষকে ঋণ দিয়েছে ব্যাংক

ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বলছে, যারা কাজের জন্য বিদেশে যেতে চান, কিন্তু আর্থিক সঙ্গতির অভাব রয়েছে, তারা বিনা জামানতে এই ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে পারেন।এছাড়া বাংলাদেশের কর্মসংস্থান ব্যাংক নামের আরেকটি ব্যাংক থেকেই দেশে ফিরে আসা প্রবাসীরা ঋণ নিয়ে নিজেদের উন্নয়নে কাজে লাগাতে পারেন।

প্রবাসীদের সহায়তায় যেসব ঋণ রয়েছে।

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন জানিয়েছেন, প্রবাসীদের জন্য এই ব্যাংকের মূলত চারটি স্কিম রয়েছে। এগুলো হলো অভিবাসন ঋণ বা মাইগ্রেশন ঋণ, পুনর্বাসন ঋণ, বঙ্গবন্ধু অভিবাসী বৃহৎ পরিবার ঋণ, বিশেষ পুনর্বাসন ঋণ। এসব স্কিমের আওতায় কোন রকম জামানত ছাড়াই একজন প্রবাসে গমনেচ্ছু ব্যক্তি অন্তত দুই বছর মেয়াদে তিন থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ নিতে পারেন।বিদেশে গিয়ে কাজ করে এই ঋণের টাকা শোধ করা যায়।

আবেদন করার জন্য যা যা দরকার।

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন নিয়ম এর ক্ষেত্রে যা করতে হবে তা হলো। ব্যাংকের নির্ধারিত ফর্ম পূরণ করে ঋণের জন্য আবেদন করতে হয়। সেই সঙ্গে সত্যায়িত ছবি, জাতীয় পরিচয় পত্র ও পাসপোর্টের ফটোকপি, বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা সম্বলিত পৌরসভা বা ইউনিয়ন পরিষদের সার্টিফিকেটের ফটোকপি দিতে হবে। সেই সঙ্গে ঋণের দুই জন জামিনদারের জন্যও এসব কাগজপত্র দিতে হবে। ব্যাংকে একটি সঞ্চয়ী হিসাব খুলতে হবে এবং বিদেশ থেকে ওই হিসাবের মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠাতে হবে। সেই সঙ্গে বিদেশের কাজের বিবরণ, ভিসা, এজেন্সির প্রত্যয়ন পত্র, বিমান টিকেট ইত্যাদি কাগজপত্র দিতে হয়। সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, মরিশাস, ব্রুনাই, কাতার,ইতালি, ইউরোপের জন্য নয় শতাংশ সুদে দুই বছরের জন্য ঋণ পাওয়া যায়। তবে সিঙ্গাপুরের ক্ষেত্রে এক বছরের মধ্যে ঋণ শোধ করতে হবে।

পুনর্বাসনের জন্য আর্থিক সহায়তা

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন নিয়ম এর ক্ষেত্রে পুনর্বাসনের জন্য আর্থিক সহায়তা একটি অন্যতম মাধ্যম। বিদেশ থেকে যারা দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছেন, তাদের জন্য রয়েছে এই ব্যাংকের পুনর্বাসন প্রকল্প। কৃষি ঋণ, মুরগীর খামার, মৎস্য চাষ, বায়োগ্যাস প্লান্ট, সৌর জ্বালানি, তথ্যপ্রযুক্তি, নারী উদ্যোক্তা ইত্যাদি খাতে পুনর্বাসনের জন্য ঋণ পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে আবেদনকারীকে প্রমাণ করতে হবে যে তিনি বিদেশ থেকে দেশে চলে এসেছেন। তার বৈধ কাগজপত্র বা ট্রাভেল ডকুমেন্ট থাকতে হবে। বিদেশ থেকে আসার পাঁচ বছরের মধ্যে এই ঋণের জন্য আবেদন করতে হবে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে যারা দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছেন,তাদের জন্য বিশেষ পুনর্বাসন ঋণ চালু করেছে সরকার। এই ব্যাংকের মাধ্যমে সেটি পাওয়া যাবে। দুইশ কোটি টাকার তহবিলের এখন পর্যন্ত অর্ধেকের কম বিতরণ হয়েছে। চার শতাংশ সুদে বিদেশ থেকে ফিরে আসা কর্মীরা এই ঋণ নিয়ে দেশে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে উদ্যোগ নিতে পারেন।

সেই সঙ্গে প্রবাসীদের পরিবারের সদস্যরা ‘বঙ্গবন্ধু অভিবাসী বৃহৎ পরিবার ঋণ’ থেকে ঋণ নিয়ে আর্থিক ক্ষতি বা ধকল কাটাতে চেষ্টা করতে পারেন। এক্ষেত্রে মৎস্য, প্রাণী, কুটির শিল্প ইত্যাদি খাতে ঋণ দেয়া হবে। জামানত বিহীন সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ নেয়া যাবে। তবে দুই লাখের বেশি হলে জামানত লাগবে। প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন জানিয়েছেন, বিদেশে যাওয়ার পরে ঋণ গ্রহীতারা তাদের স্বজনদের কাছে টাকা পাঠান। সেখান থেকেই ঋণের অর্থ শোধ হয়ে যায়। এই পর্যন্ত প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে ৫৩ হাজার ৩১৬জনকে প্রায় ৭৬০ কোটি টাকা ঋণ দেয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে ঋণ পরিশোধ না করায় তফসিলভুক্ত করতে হয়েছে মাত্র পাঁচ হাজারের কিছু বেশি ঋণ গ্রহীতাকে। এর বাইরে বিদেশ থেকে আসা বেকার প্রবাসীরা কর্মসংস্থান ব্যাংকের সহায়তাও নিতে পারেন। সেখান থেকে ব্যবসা, কৃষি, কুটির শিল্প, ইত্যাদি খাতে কর্মসংস্থানের জন্য সহজ শর্তে ঋণ দেয়া হয়।

আশা করি আজকের আলোচনার মাধ্যমে আপনারা বুঝতে  পেরেছেন প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন নিয়ম সম্পর্কে।  যদি প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন নিয়ম সম্পর্কে আরো কিছু জানার থাকে তাহলে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন ।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *