Islamic

কোরবানির নিয়ম | কত টাকা থাকলে কোরবানি দিতে হবে | কোরবানির গোশত বন্টন

1 min read
কোরবানির নিয়ম
আসসালামু আলাইকুম আজকে আমরা আলোচনা করব।   কোরবানি নিয়ম কারণ সম্পর্কে। মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব হচ্ছে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা।  এই দুইটি মুসলমান অনেক আনন্দ করে থাকে।  তাই তাদের উদ্দেশ্য  আজকের এই আলোচনা।  এবং কোরবানির ঈদে আমরা পশু কোরবানি দিয়ে থাকে।  আমরা সকলেই জানি যে কোরবানির কিছু নিয়ম রয়েছে ।আজকে আলোচনা করব কোরবানি করার কিছু নিয়ম সম্পর্কে।
 তাহলে চলুন আর দেরি না করে খুব অল্প সময়েই জেনে নেই কোরবানির নিয়ম সম্পর্কে ।আজকে আপনাদের সঙ্গে আলোচনা করবো।
কোরবানি করার সকল নিয়ম জেনে নিন।  কোরবানির সময় হল  যিলহজ্বের 10 তারিখ 12 তারিখ পর্যন্ত। যার অর্থ হলো তিন দিন দুই রাত।
 হুজুর  আকরাম ( সাল্লাল্লাহু  আলাইহি ওয়াসাল্লাম) স্বয়ং তার মৃত  উম্মতের পক্ষ থেকে কুরবানী করেছেন।  তাই এটা তার জন্য সৌভাগ্যের বিষয় হবে যার পক্ষে সম্ভব হুজুরের কারীমের জন্য কোরবানি করা। { বাহারে শরীয়ত}
প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর জন্য কোরবানি দেওয়া অনেক উত্তম। গরু উদ্ধার কোরবানি করলে নফল হিসাবে এক ভাগ।

কোরবানির পশুর বয়স/  কোরবানির নিয়ম

আপনি যদি কোরবানির জন্য ছাগল কোরবানি দিয়ে থাকেন তাহলে কমপক্ষে এক বছর হতে হবে। যদি গরু কোরবানি দিতে চান তাহলে তার বয়স হতে হবে দুই বছর।  এবং উট কুরবানি দিতে চাইলে  তার বয়স  লাগবে  5 বছর।  যেমন কোরবানি দেওয়ার জন্য পশুর বয়সঃ  ছাগল কোরবানি বয়স লাগবে 1 বছর । গরু কোরবানি জন্য বয়স লাগবে দুই বছর। উট  কোরবানি জন্য বয়স লাগবে 5 বছর। এই হল পশু কোরবানি দেওয়ার বয়স সমূহ।
কোরবানির জন্য  পরশু বাছাই করতে সুন্দর ও নিযুক্ত এর মানে হল এটি একটি উত্তম কাজ। তাই পশু কোরবানি দেওয়ার জন্য আপনাকে সুন্দর ও নিযুক্ত পশু বাছাই করতে হবে।  যেমনঃ পশু অন্ধ, খোঁড়া  ও যাবেহ করার স্থানে যেতে সক্ষম, লেজ সিং  ও কান পা ভাঙ্গা ও দুর্বল ইত্যাদি এসব পশু কোরবানির জন্য উপযুক্ত নয়।

কুরবানীর চামড়া সম্পর্কে নিয়ম

কোরবানির পশুর চামড়া, ফুলের মালা, রশি , প্রকৃত   সদকা করে দিতে হবে। কোরবানির পশুর চামড়া নিজের ব্যবহারের জন্য আপনি চাইলে রাখতে পারেন।  যেমন বিছানা, জায়নামাজ ইত্যাদি বানাতে পারবেন।  এখানে  আরও  একটি নিয়ম রয়েছে কুরবানী করা পশুর  চামড়া বিক্রি করে এর মূল্য নিজ কর্মের ব্যয় করতে পারবেন না।

মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে কুরবানীর নিয়ম

আপনি যদি মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে কুরবানী দিতে চান তাহলে মাংস উপরোল্লিখিতনিয়মে বন্ধন করা উত্তম।

কত টাকা থাকলে কোরবানি দিতে হবে

‘পরিবারের খরচ মেটানোর পর যদি জিলহজ মাসের ১০, ১১ ও ১২ তারিখ নির্ধারিত পরিমাণ স্বর্ণ বা রুপা থাকে কিংবা নির্ধারিত পরিমাণ স্বর্ণ বা রুপার বাজার দর অনুযায়ী ৫০ হাজার থেকে ৪ লাখ টাকা থাকে ওই ব্যক্তির জন্য কুরবানি করা আবশ্যক।’
হিজরি বছরের জিলহজ মাসের ১০, ১১ ও ১২ তারিখ কুরবানির পশু জবাই করতে হয়। কুরবানি দেওয়ার জন্য শর্ত হলো এ দিনগুলোতে পরিবারের জীবিকা নির্বাহের খরচ ছাড়া অতিরিক্ত নিসাব (নির্ধারিত) পরিমাণ সম্পদ বা টাকার মালিক হলেই তার ওপর কুরবানি আবশ্যক।

কোরবানি ফরজ কাদের জন্য

স্বাভাবিক জ্ঞানসম্পন্ন, প্রাপ্তবয়স্ক, মুসলিম যদি ‘নিসাব’ পরিমাণ সম্পদের মালিক থাকেন, তাঁদের পক্ষ থেকে একটি কোরবানি দেওয়া ওয়াজিব বা আবশ্যক। নিসাব হলো সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণ বা সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপা অথবা এর সমমূল্যের নগদ টাকা ও ব্যবসার পণ্য বা সম্পদ।

কোরবানির পশু কেমন হতে হবে

কোরবানির জন্য ছাগল, ভেড়া ও দুম্বার বয়স ১ বছর হতে হয়; গরু ও মহিষের বয়স ২ বছর এবং উটের বয়স ৫ বছর হতে হবে। দুম্বার ১ বছর পূর্ণ না হলেও যদি ১ বছরের মতো হৃষ্টপুষ্ট হয় তাহলে চলবে। উল্লিখিত পশুগুলো নর-মাদি যা-ই হোক না, তা দ্বারা কোরবানি হবে। কোরবানির পশু যেমনঃ গরু, ছাগল, ভেড়া বা দুম্বা তরতাজা ও হৃষ্টপুষ্ট হওয়া উত্তম।

কোরবানির পশু জবেহ করার নিয়ম

কোরবানির পশু জবাই করার জন্য যদি নিয়ম জানা থাকে তাহলে জবাই করা মুস্তাহাব। আপনি যদি কোরবানির নিজে না করতে পারেন তাহলে আপনি অন্যের দ্বারা বা অন্যের সাহায্য নিয়ে কোরবানি সম্পন্ন করতে পারবেন। এর জন্য আপনাকে কোরবানির পশু জবাই করার সময় সামনে থাকতে হবে।  পশু জবাই করার সময় আপনি যদি নিজের সামনে থাকেন তাহলে তা হবে উত্তম একটি কাজ। জবাইয়ের সময় নিম্নলিখিত  লক্ষনসমূহের  ব্যাপারে বিশেষ লক্ষ্য রাখতে হবে অবশ্যইঃ
(ক) শ্বাসনালী (খ)  খাদ্যনালী (গ) রক্ত চলাচলের  নালীদ্বয়।
বক্ষস্থল হতে গলদেশের মধ্যবর্তী কোন স্থানে জবেহ করা বাঞ্চনীয়। জবেহ’র পূর্বে ছুরি খুব ধারালো করে নিতে হবে। তারপর কোরবানির পশুর মাথা দক্ষিণ এবং পেছনের দিক উত্তর দিকে রেখে কেবলামুখী করে শায়িত করে দোয়া পড়বেন।

কোরবানির দোয়া আরবী | কোরবানির দোয়া

দোয়াঃ “ইন্নী ওয়াজ্জাহ্তু ওয়াজহিয়া লিল্লাজি ফাত্বারাস সামাওয়াতী ওয়াল আরদা হানীফাঁও ওয়ামা আনা মিনাল মুশরিকীন, ইন্না সালাতী ওয়ানুসুকী ওয়া মাহ্য়ায়া ওয়ামামা-তী লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন। আল্লাহুম্মা মিনকা ওয়ালাকা বিস্মিল্লাহি আল্লাহু আকবর” বলে কোরবানির পশু জবেহ করার পর পাঠ করবেন- “আল্লাহুম্মা তাক্বাব্বাল মিন্নী (অংশীদার থাকলে- ‘ওয়া মিন’ বলার পর প্রত্যেকের নাম ও বাপের নাম বলবেন) কামা তাক্বাব্বালতা মিন খলীলিকা ইব্রাহীমা আলাইহিস্ সালাম ওয়া হাবীবিকা মুহাম্মদিনিল্ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।”

কোরবানি সম্পর্কে হাদিস কুরবানী দিবসে করণীয় / কোরবানির নিয়ম কানুন।

হাদীস শরীফ: হুজূর আক্বদাস (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ঈদুল ফিত্বরের দিন মিষ্টি জাতীয় কিছু আহার করে ঈদগাহে তাশরিফ নিয়ে যেতেন, কিন্তু ঈদুল আযহার দিবসে নামায আদায় না করা পর্যন্ত কিছুই আহার করতেন না। [তিরমিজী, দারেমী ও ইবনে মাজাহ]

আকিকা/ কোরবানির নিয়ম কানুন

কোরবানির ঈদ আসার আগ মুহূর্তে আমরা আকিকা দেওয়ার  জন্য বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকি  যেমন কোরবানির সাথে আমরা  আকিকা আদায়  করে থাকি। আপনি যদি ছেলে   সন্তানের জন্য আকিকা করতে  চান ।  তাহলে আপনাকে মনে রাখতে হবে ছেলে সন্তানের জন্য কুরবানীর পশুতে অংশ।  আর আপনি মেয়ে    সন্তানের জন্য আকিকা করতে চান তাহলে কুরবানীর পশুর এক ভাগ আকিকার মাংস পিতা মাতা ইত্যাদি খেতে পারবেন।  এতে কোন সন্দেহ নেই।  আকিকার হুকুম কোরবানির চামড়ার হুকুমের আওতায় পড়বে।
আল্লাহ তায়লা হযরত ইব্রাহীম আঃ এর খাতিরে আমাদের কোরবানী কবুল করুন। কোরবানীর নিয়ম মেনে সবাইকে আল্লাহর রাস্তায় কোরবানী দেওয়ার তৌফিক দান করুন।আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে ইসলামের সকল নিয়ম কানুন মেনে চলার তৌফিক দান করুন। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন

যাদের উপর কুরবানী ওয়াজিব | কোরবানি সম্পর্কে হাদিস

কুরবানি আল্লাহর প্রেমের নির্দশন। যুগে যুগে আল্লাহ প্রত্যেক আম্বিয়া কেরামগণের ওপরেই এই দায়িত্ব ন্যস্ত করেছেন। যার ধারাবাহিকতা এখনও প্রবাহমান। আল্লাহ সামর্থ্যবান মুসলমান আকিল, বালিগ, মুকিম পুরুষ ও নারীর ওপর কুরবানি করাকে ওয়াজিব করেছেন।যাদের ওপর কুরবানি ওয়াজিব তা তুলে ধরা হলো-
যারা কুরবানী করবেন
  • ১. কুরবানি ওয়াজিব হওয়ার জন্য নেসাব পরিমাণ মাল পূর্ণ এক বছর থাকা জরুরি নয়। অর্থাৎ যে ব্যক্তি ১০ জিলহজ ফজর হতে ১২ জিলহজ সন্ধ্যা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক থাকবে, তার ওপর কুরবানি ওয়াজিব।
  • ২. পারিবারিক ব্যয় নির্বাহের জন্য যে পরিমাণ জমি বা ফসলের দরকার তা থেকে অতিরিক্ত জমি বা ফসলের মূল্য অথবা যে কোনো একটির মূল্য যদি নিসাব পরিমাণ সম্পদের মূল্যের সমান হয়। তাহলেও কুরবানি ওয়াজিব।
  • ৩. পরিবারের সব সদস্যের যদি আলাদা-আলাদাভাবে নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়, তবে সবার ওপর আলাদাভাবেই কুরবানি ওয়াজিব।
  •  ৪. গরিব ব্যক্তি যদি কুরবানির নিয়্যাতে গরুক ক্রয় করে তবে তার ওপরও কুরবানি ওয়াজিব।
  •  ৫. উদ্দেশ্য হাসিলে কুরবানির মান্নত করলে সে উদ্দেশ্য পূর্ণ হলেও কুরবানি করা ওয়াজিব।
  • ৬. নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক যত সম্পদের অধিকারী হোক না কেন তার ওপর একটি কুরবানিই ওয়াজিব। সম্পদ বেশি বলে একাধিক কুরবানি করতে হবে এমন কোনো বিধান নেই। অবশ্য একাধিক কুরবানি করলে অনেক ছাওয়াব লাভ হয়।
যে অবস্থায় যার ওপর সাদাকায়ে ফিতর ওয়াজিব,সে অবস্থায় ওই ব্যক্তির উপর কুরবানী ওয়াজিব। প্রত্যেক প্রত্যেকদিন ধনী ধ্বনি প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ মস্তিষ্ক নর-নারীর উপর কুরবানী ওয়াজিব করা হয়েছে।

কোরবানির গোশত বন্টনের নিয়ম

আব্দুল্লাহ বিন ওমর (রা.) এর একটি আছার— ‘এটা আল্লাহ পাক হতে অনুগ্রহ; কোরবানির মাংস পুরোটা নিজেরা খাওয়া যাবে, দরিদ্রদের দান করা যাবে বা পুরোটা উপহার হিসেবে আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব ও প্রতিবেশীদের বিতরণ করা যাবে। এছাড়া ইবন মাসঊদ (রা.) কুরবানীর গোশত তিনভাগ করে একভাগ নিজেরা খেতেন, একভাগ যাকে চাইতেন তাকে খাওয়াতেন এবং একভাগ ফকির-মিসকিনকে দিতেন বলে উল্লেখ রয়েছে। ইসলামের বিভিন্ন ইমামগণও কুরবানির গোশতকে তিনভাগ করাকে মুস্তাহাব বলে উল্লেখ করেছেন।
আজকের এই আলোচনা থেকে আপনারা জানতে পেরেছেন যে কুরবানীর নিয়ম কানুন সম্পর্কে। সকলের কাছে সুস্বাস্থ্য কামনা করে আজকের মত এখানেই শেষ করছি।  খুব  অল্প  সময়ের মধ্যে আপনার জানতে  পারবেন যে কোরবানির নিয়ম কানুন সম্পর্কে।  তাই আমাদের এই পোস্ট  ভালো করে পড়ে নিন।
Rate this post
Mithu Khan

I am a blogger and educator with a passion for sharing knowledge and insights with others. I am currently studying for my honors degree in mathematics at Govt. Edward College, Pabna.

Leave a Comment

x