ঈদুল আযহার নিয়ত ও নিয়ম দোয়া ও তাকবীর
মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব হলো বছরে দুইটি ঈদ ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা। মুমিন মুসলিমরা সকলেই বছরে দুইটি ঈদ পালন করে থাকেন। তাই মুসলমানদের ঈদের দিনে কিছু নিয়ম রয়েছে যেমনঃ ঈদের দুই রাকাত নামাজ পড়া নামাজের নিয়ত নামাজের নিয়ম নামাজের দোয়া নামাজের ফজিলত এসব সম্পর্কে আজকে আলোচনা করব।
ঈদের নামাজ এবং বিস্তারিত সকল বিষয় অনেকেই ভুলে যান তাই আজকে তাদের জন্য আমাদের এই পোস্ট। কারণ বছরে দুইটি ঈদের নামাজ পড়া হয় তাই অনেকের মনে থাকেনা। ঈদের নামাজ পড়া মুসলিমদের জন্য ওয়াজিব। ঈদের নামাজ পড়ার জন্য নামাজের নিয়ম নিয়ত দোয়া ফজিলত তাকবীর ইত্যাদি নিয়ে আজকে আলোচনা করব বিস্তারিত জেনে নিন।
ঈদুল আযহা বা ঈদের নামাজের নিয়তঃ
نَوَيْتُ أنْ أصَلِّي للهِ تَعَالىَ رَكْعَتَيْنِ صَلَاةِ الْعِيْدِ الْفِطْرِ مَعَ سِتِّ التَكْبِيْرَاتِ وَاجِبُ اللهِ تَعَالَى اِقْتَضَيْتُ بِهَذَا الْاِمَامِ مُتَوَجِّهًا اِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيْفَةِ اللهُ اَكْبَرْ
উচ্চারণ: ‘নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তাআলা রাকাআতাইন সালাতিল ইদিল ফিতরি মাআ সিত্তাতিত তাকবিরাতি ওয়াঝিবুল্লাহি তাআলা ইকতাদাইতু বিহাজাল ইমামি মুতাওয়াঝঝিহান ইলা ঝিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি ‘আল্লাহু আকবার’।
‘ অর্থ : আমি ঈদুল ফিতরের দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ অতিরিক্ত ৬ তাকবিরের সঙ্গে এই ইমামের পেছনে কেবলামুখী হয়ে আল্লাহর জন্য আদায় করছি- ‘আল্লাহু আকবার’।
ঈদুল আযহার ঈদের নামাজ পড়ার নিয়মঃ
- ১. ঈমামের সঙ্গে তাকবিরে তাহরিমা ‘আল্লাহু আকবার’ বলে উভয় হাত বাঁধা।
- ২. তাকবিরে তাহরিমার পর ছানা পড়া-
- ‘সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা ওয়া তাবারাকাসমুকা ওয়াতাআলা যাদ্দুকা ওয়া লা ইলাহা গাইরুকা।
- ৩. এরপর অতিরিক্ত ৩ তাকবির দেওয়া।
- ৪. এক তাকবির থেকে আরেক তাকবিরের মধ্যে তিন তাসবিহ পরিমাণ সময় বিরত থাকা।
- ৫. প্রথম ও দ্বিতীয় তাকবিরে উভয় হাত উঠিয়ে তা ছেড়ে দেওয়া।
- ৬. তৃতীয় তাকবির দিয়ে উভয় হাত তাকবিরে তাহরিমার মতো বেঁধে নিতে হয়।
- ৭. আউজুবিল্লাহ-বিসমিল্লাহ পড়া
- ৮. সুরা ফাতেহা পড়া
- ৯. সুরা মিলানো। এরপর নিয়মিত নামাজের মতো
দ্বিতীয় রাকাতঃ
- ১. বিসমিল্লাহ পড়া
- ২. সুরা ফাতেহা পড়া
- ৩. সুরা মিলানো।
- ৪. সুরা মিলানোর পর অতিরিক্ত ৩ তাকবির দেওয়া।
- ৫. প্রথম ও দ্বিতীয় তাকবিরে উভয় হাত উঠিয়ে তা ছেড়ে দেওয়া।
- ৬. তৃতীয় তাকবির দিয়ে উভয় হাত তাকবিরে তাহরিমার মতো বেঁধে নিতে হয়।
- ৭. এরপর রুকুর তাকবির দিয়ে রুকুতে যাওয়া।
- ৮. সেজদা আদায় করে
- ৯. বৈঠকে বসা; তাশাহহুদ, দরূদ, দোয়া মাসুরা পড়ে সালাম ফেরানোর মাধ্যমে নামাজ সম্পন্ন করা।
- ১০. নামাজের সালাম ফেরানোর পর তাকবির পড়া-
اَللهُ اَكْبَر اَللهُ اَكْبَر لَا اِلَهَ اِلَّا اللهُ وَاللهُ اَكْبَر اَللهُ اَكْبَروَلِلهِ الْحَمْد
উচ্চারণ : ‘আল্লাহু আকবর, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবর ওয়া লিল্লাহিল হামদ।’
১১. নামাজের পর ইমাম সাহেবের দুইটি খুতবা দেওয়া।
ঈদের নামাজ পড়ার পর ইমাম খুতবা দেবে আর মুসল্লিরা খুতবা মনোযোগের সঙ্গে শুনবে। অবশ্য অনেকেই খুতবা না দেওয়ার ব্যাপারে শিথিলতার কথা বলেছেন। খুতবা না দিলেও ঈদের নামাজ আদায় হয়ে যাবে বলে মত দিয়েছেন।
অতিরিক্ত তাকবির অতিরিক্ত তাকবিরের ক্ষেত্রে অন্যান্য মাজহাবসহ অনেকেই প্রথম রাকাতে তাকবিরে তাহরিমাসহ ৭ তাকবির আর দ্বিতীয় রাকাআতে
৫ তাকবিরে দিয়ে থাকেন। যদি কেউ অতিরিক্ত
৬ তাকবির দেয় কিংবা অতিরিক্ত এগারো তাকবির দেয় তাতে নামাজের অসুবিধা হবে না বরং নামাজ হয়ে যাবে।
ঈদুল আযহা ঈদের নামাজের তাকবির পড়া
ঈদের চাঁদ দেখার পর থেকে অর্থাৎ ৩০ রমজান ইফতারের পর প্রথম কাজই হচ্ছে তাকবির তথা আল্লাহর কৃতজ্ঞতাজ্ঞাপন করা। আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে তাকবির পড়া। এটিই ঈদের প্রথম কাজ। আল্লাহ তাআলা কোরআনুল কারিমেও তাকবির পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন এভাবে-
وَلِتُكْمِلُواْ الْعِدَّةَ وَلِتُكَبِّرُواْ اللّهَ عَلَى مَا هَدَاكُمْ وَلَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ ‘
আর তোমাদের আল্লাহ তাআলার মহত্ত্ব বর্ণনা কর, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর।’( সুরা বাকারা : আয়াত ১৮৫) তাকবির হলো-
اَللهُ اَكْبَر اَللهُ اَكْبَر لَا اِلَهَ اِلَّا اللهُ وَاللهُ اَكْبَر اَللهُ اَكْبَروَلِلهِ الْحَمْد
উচ্চারণ : ‘আল্লাহু আকবর, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবর ওয়া লিল্লাহিল হামদ।’
মহান আল্লাহতালা মুমিন মুসলমানদেরকে ঈদের নামাজ পড়ার তৌফিক দান করুন।
ঈদুল আযহা, ঈদুল আযহা, ঈদুল আযহার বয়ান, ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা ব্যানার, ঈদুল আযহা নামাজের নিয়ত, ঈদুল আযহার আলোচনা