গ্যাস্ট্রিক কমানোর উপায় বা মুক্তির উপায়

গ্যাস্ট্রিক কমানোর উপায় বা মুক্তির উপায়

গ্যাস্ট্রিক কমানোর উপায় । আমাদের শরীরে অতিরিক্ত গ্যাস্ট্রিক এর সমস্যা বেড়ে যাচ্ছে । ছোট-বড় সবারই বর্তমান গ্যাসের সমস্যা হয়ে  গ্যাস্ট্রিক থেকে দূরে থাকার জন্য কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে  । যেমন অতিরিক্ত মসলা, মিষ্টি ,ভাজাপোড়া, সোয়াবিন তেল খাওয়া, অতিরিক্ত  ভাজাপোড়া ,সবজি,প্রচুর ,আচার ,পান, আবার কেউ যদি মদ পান করে ।  অনেকে সিগারেট খায় । দীর্ঘদিন খাবার ফ্রিজে রেখে খাওয়া । অতিরিক্ত তেল জাতীয় খাবার খাওয়া ।  এবং বাইরের খাবার খেয়ে আমাদের  দেহে প্রচুর গ্যাসের সমস্যা দেখা দেয় । এরপর গ্যাসের সমস্যা অধিকাংশ বেড়ে যায় ।

 

গ্যাস্ট্রিক কমানোর উপায় বা মুক্তির উপায়  । গ্যাস্ট্রিকের লক্ষণ ও প্রতিকার

আরো অনেক কিছুতে আপনার গ্যাসের সমস্যা দেখা দিতে পারে তবে এসব সবসময় মেনে চলতে হবে ।  খাবারের আগে বা পরে অনেকেরই বুকে জ্বালা পোড়া করে শুধু গ্যাস্টিকের জন্য  ।  তাই আমাদের রসালো ভিজা জাতীয় খাবার খেতে হবে ।  এবং অতিরিক্ত পানি পান করা খুব দরকার । গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হলে আপনি কখনো অবহেলা করবেন না ।

গ্যাস্টিকের জন্য আপনার শরীরের অনেক বড় ক্ষতি হতে পারে ।  যেমন লিভারএর সমস্যা ।  ক্যান্সারের লক্ষণ, ফুসফুস হার্টের সমস্যা ইত্যাদি । গ্যাস্ট্রিক কমানোর উপায় । গ্যাস্টিকের জন্য আপনার শরীরের বিভিন্ন ধরনের রোগ দেখা দিতে পারে ।  রোগগুলো হবে খুব বড় বড় আপনার দেহকে একদম শেষ করে দেবে । তাই আমরা সকলেই   একটু সচেতন  হই । এসবের কারণে আপনার বিপদ অনেক গুণে বেড়ে যেতে পারে ।

ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ক্ষেত্রে গ্যাস্ট্রিক 95 পার্সেন্ট পর্যন্ত দায়ী । পেটের ভেতরের কোষগুলো অনেক ক্ষতি হয় । এইসব গ্যাস্ট্রিকের অনেক বড় বিপদ জনক ।

গ্যাস্ট্রিক এর লক্ষণ কি। গ্যাস্ট্রিক কমানোর উপায়।গ্যাস্ট্রিক আলসার এর লক্ষণ। গ্যাস্ট্রিক থেকে মুক্তির উপায়

গ্যাস্ট্রিক বা  এসিডিটি কি

গ্যাস্ট্রিক কমানোর উপায় । গ্যাস্ট্রিক বা এসিডিটির হল,  পাকস্থলীতে এসিডের পরিমাণ বেড়ে যায় ।  সাধারণত মসলা খাবার ভাজা জাতীয় খেলে এই সমস্যা দেখা দেয় ।  কারণ হজম করতে এসিডের এর দরকার হয়। এর ফলে ক্লোরিন ও হাইড্রোজেনের সঙ্গে মিশে হাইড্রোক্লোরিক এসিড তৈরি করে ।

তাই অতিরিক্ত এসিড থেকে পেটে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দেয় ।  এ থেকে সৃষ্টি হয় পেটের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা যেমন ফোলা ফোলা ভাব, পেটে জ্বালাপোড়া, পেট ব্যথা, বমি বমি ভাব, খাবারের অরুচি এই রকম সমস্যা ইত্যাদি।

তবে কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা যন্ত্রণা কমাতে সাহায্য করে ।  আসুন সেগুলো জেনে

নেই ।

১.গ্যাস্ট্রিক দূর করার জন্য আপনি খেতে পারেন ভেষজ চা। এই চা হজম কে সাহায্য করে গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা কমায় । এর উপাদানের মধ্যে আদা পুদিনা ও লেবু ইত্যাদি ।

২ লবঙ্গ

গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা, পেট ফাঁপা, পেট ফোলা ভাব, কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা এর জন্য আপনি খেতে পারেন লবঙ্গ । লবঙ্গ খাওয়ার পর এলাচের সঙ্গে লবঙ্গের গুঁড়া মিশিয়ে এক কাপ চা   খেতে পারেন । অতিরিক্ত গ্যাসের সমস্যা দূর হবে ।

৩.আদা

গ্যাস্টিকের জন্য আদা খুব কার্যকরী ।গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করার জন্য আপনি পরিমাণমতো আদা কুচি করে লবণ দিয়ে খান । অল্প সময়ের মধ্যে গ্যাস্ট্রিক দূর হতে সাহায্য করবে ।

৪.  ধনেপাতা

আমরা সাধারণত ধনেপাতা দিয়ে বাঁধনে গুড়া দিয়ে তরকারি রান্না করে থাকি । অনেকে হয়তো জানি না ধনেপাতা দিয়ে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করা যায় ।  গ্যাস্টিকের জন্য ধনেপাতা খুব কার্যকারী । ধনেপাতা এসিডিটির সমস্যা ভালোভাবে কাজ করে । পরিমাণমতো ধনেপাতা জুস করে খেয়ে নিন ।

৫ .দই

আমরা সব সময় দই খেয়ে থাকি ।  কিন্তু অনেকেই হয়তো জানেন না দই  দিয়ে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করা যায় ।  দই ব্যাকটোরিয়া ও হজম শক্তি সহায়তা করে । পরিমান মত পানি নিয়ে এর সঙ্গে দই মিশিয়ে নিন ।  এর সঙ্গে আপনি আরো দুটি জিনিস ব্যবহার করতে পারেন । ভাজা জিরা ও সামান্য পরিমাণের বিট লবণ ব্যবহার করে  স্বাদ বাড়াতে  পারেন । এখানে চাইলে আপনি আপেল খেতে পারেন  ।

৬ ঠান্ডা দুধ গ্যাস্টিকের খুব উপকারী

আন্ডার দুধ পাকস্থলী এসিডকে গ্যাস্ট্রিক থেকে নিয়ন্ত্রণ রাখে।এক গ্লাস ঠান্ডা দুধ পান করুন ।  গ্যাস দূর হবে । তো এখন থেকে গ্যাস্ট্রিক দূর করার জন্য সবচেয়ে সহজ উপকরণ দুধ এর ব্যবহার বাড়িয়ে দিন

৭. দারচিনি   গ্যাস্ট্রিক দূর করে

হজম এর জন্য খুব ভালো ।  এক গ্লাস পানি নিয়ে এর সঙ্গে আধা চা চামচ দারচিনি মিশিয়ে নিন ।

৮. শসা গ্যাস্ট্রিক দূর করতে সাহায্য করে

সাধারণত আমরা শসা দিয়ে সালাদ খেয়ে থাকি ।  কিন্তু আমরা হয়তো অনেকে জানিনা যে শসা দিয়ে গ্যাস্ট্রিক দূর করা যায় ।  তাই তাদের জন্য এই উপাদান ।  আপনার শসা ঠাণ্ডা অবস্থায় খেতে পারেন । এতে আপনার গ্যাসের সমস্যা দূর হবে ।

৯. পেঁপে গ্যাস্ট্রিকের জন্য খুব কার্যকারী

পেঁপেতে রয়েছে  পাপায়া নামক এনজাইম যা হজমশক্তি বাড়ায় ।  তাই নিয়মিত পেঁপে খাওয়ার অভ্যাস করলে গ্যাসের সমস্যা কমে যাবে ।

১০. কমলা ও কলা গ্যাস্ট্রিক দূর করে

কমলা  ও কলা পাকস্থলীর অতিরিক্ত সমস্যা সোডিয়াম দূর করতে সাহায্য করে ।  এতে গ্যাসের সমস্যা থেকে আপনি মুক্তি পেতে পারেন । কলা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে ।  সারাদিনে অন্ততপক্ষে দুটি কলা খেতে হবে ।  পেট পরিষ্কার রাখতে কলা খেতে পারেন ।

১১. জিরা গ্যাস্ট্রিক দূর করার জন্য ব্যবহার করুন

জিরার খুব উপকারী ।  পেটের গ্যাস, বমি, পায়খানা, ইত্যাদি,জ্বর হলে 50 গ্রাম জিরা এর সঙ্গে পরিমাণমতো আখের গুড়ের সঙ্গে ভালো করে মিশিয়ে নিন ।  এরপর 10 গ্রাম নিয়ে ।  পাঁচটি বড়ি তৈরি করতে হবে ।   দিনে তিনবার একটি করে বড়ি খেয়ে  নিন ।  আপনার জ্বর ধার দিয়ে সেরে যাবে ।

১২ এলাচ. গ্যাস দূর করে

লবঙ্গর সঙ্গে এলাচের গুঁড়া মিশিয়ে নিন ।  এরপর খেয়ে নিন ।  আপনার শরীরে থাকা গ্যাস অতি তাড়াতাড়ি দূর হবে।

১৩. মৌরির পানি গ্যাস্টিকের খুব উপকারী একটি পানি

মৌরি কিছুক্ষণ পানিতে ভিজিয়ে রাখুন ।  এরপর মৌরির পানি খেয়ে নিন ।  আপনার গ্যাস দূর হবে ।

১৪.ডাবের পানি গ্যাস্ট্রিকের খুব কার্যকরী একটি উপাদান

পানিতে রয়েছে ফাইবার যা হজমশক্তি বাড়ায় এবং পাশাপাশি অ্যাসিডিটি কমায় ।  ডাবের পানি বুক জ্বালাপোড়া ও পেটে ব্যথা কমাতে সাহায্য করে ।  গলা জ্বলা বিভিন্ন সমস্যা দূর করে ।  ডাবের পানি গ্যাস্ট্রিকের জন্য খুব কার্যকরী উপাদান ।

১৫ আনারস গ্যাস্ট্রিক উপকারী

আনারস গ্যাস্ট্রিক দূর করে  ।  এবং আনারস ত্বকের জন্য খুব কার্যকারী । আনারস পরিপাকতন্ত্র পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে ।  আনারসের রয়েছে 85 শতাংশ পানি ও নামক হজমে সাহায্যকারী ।

১৬. পানি গ্যাস্ট্রিক এর জন্য প্রধান একটি কারণ

প্রতিদিন আমরা যদি সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে এক থেকে দুই গ্লাস পানি পান করতে পারি ।  তাহলে সারাদিন গ্যাস্টিকের যন্ত্রণায় আপনাকে ভুগতে হবে না ।  কারণ হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে একমাত্র  পানি ।  এরপর পানির আরেকটি উপকার হচ্ছে পরিপাকতন্ত্র  পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে ।

১৭.বেকিং সোডা

বেকিং   সোডা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করবে খুব দ্রুত ।  বেকিং সোডা এসিডের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে ।  বেকিং সোডা  খাবারের পর এক গ্লাস পানির সাথে হাফ চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে নিন । তিন থেকে চারবার খেতে পারেন ।  তাহলে আপনার গ্যাস্ট্রিক থাকবে না ।

১৮. আমলকি গ্যাস্ট্রিক দূর করে 

আমরা হয়তো অনেকেই জানিনা আমলকি আবার গ্যাস্ট্রিক দূর করে ।  অনেকের কাছে এই জিনিসটি নতুন লাগবে ।  আমলকি হজমে সাহায্য করে ।  রাতে ঘুমানোর আগে পরিমাণমতো আমলকি ভিজিয়ে রাখুন ।  আমলকির পানি সকালে খালি পেটে এক গ্লাস খেয়ে নিন ।  প্রতিদিন আমলকি  পানিখে তে হবে । আপনি চাইলে আমলকীর গুঁড়া পানির মধ্যে গুলিয়ে খেতে পারেন ।  কয়েকবার খেতে পারলে আপনার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর হয়ে যাবে ।

১৯ লেবুর রস

আমরা সাধারণত লেবু ভাতের সঙ্গে খেয়ে থাকি । কিন্তু লেবু গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করতে সাহায্য । আধা চা চামচ লেবুর রস  এর সঙ্গে বেকিং সোডা দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন ।  এক কাপ পানি দিয়ে সব একসঙ্গে মিশিয়ে নিন ।  তবে গরম পানির সঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারেন ।  গ্যাস্টিকের সমস্যা দূর হয়ে যাবে ।

২০. আলুর রস গ্যাস্ট্রিক দূর করে

আলু আমরা তরকারিতে খেয়ে থাকি ।  তবে আলু দিয়ে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করা যায় ।  পরিমাণমতো আলো নিয়ে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিন ।   আলুর রস  অল্প মধু ও লবণ দিয়ে দুপুরে খাওয়ার আগে খেতে হবে ।

শেষ কথা

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা ।  গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার কারণে আমাদের খাবারে রুচি নষ্ট হয়ে যায় ।   আর সঙ্গে সঙ্গে গলা জ্বলা ,পেট ব্যথা, পেটে জ্বালাপোড়া ,ইত্যাদি, খাবারের সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়ে যায় ।  এই অতিরিক্ত গ্যাসের কারণে আমাদের পরিমাণমতো পানি পান করতে হবে ।  এবং ভিজা জাতীয় খাবার খেতে হবে ।  তেল কম খাওয়া ।  1 থেকে 2 দিনের জমানো ভাজাপুরি খাওয়ার পর অনেক গ্যাস্টিকের সমস্যা দেখা দেয়

তাই আমরা সবসময় চেষ্টা করব ,ঘরে তৈরি যেকোনো খাবার খেতে ।   তবে আপনি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে দূরে থাকবেন । এসব খাবার সঙ্গে সঙ্গে খেতে পারেন তাহলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দেবে  ।

তবে বেশি গরম গরম অবস্থায় খাওয়া যাবেনা । আপনি যদি নিয়ম অনুযায়ী । কোন খাবারটা খেলে গ্যাস্ট্রিক হবে না বুঝে খেতে পারেন তাহলে অনেকটা নিরাপদে থাকবেন ।

আজকাল ছোট  বড় উভয়ই গ্যাস্টিকের সমস্যা  দেখা দিচ্ছে ।  কারণ আমরা অনেকেই খাবার সময় মতো খায়না, বাহিরে তেলে ভাজা খাবার খেয়ে থাকি, পরিমাণ মতো পানি না খেয়ে সারাদিন পানি ছাড়া থাকতে হয় ।  এর পর আপনি কখনো বুঝতেও পারেন না যে এর জন্য আপনার গ্যাসের সমস্যা হতে পারে ।

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার কারণে, আপনার বমি বমি ভাব, বমি করা. পেটে ব্যথা. বুকে জ্বালা পোড়া, গলা জ্বালাপোড়া, ইত্যাদি।  আমরা যদি গ্যাস্ট্রিক থেকে দূরে থাকতে চাই তাহলে উপরে নিয়মগুলো মেনে চলতে পারে ।

আমরা যদি খাবারের নিয়ম সঠিকভাবে মেনে চলতে পারি তাহলে গ্যাস্ট্রিক থেকে দূরে থাকতে পারবো ।  তাই খাওয়া শেষ হওয়ার  20 থেকে 30 মিনিট পর পানি পান ।  কিন্তু খাওয়ার মাঝখানে পানি পান করবেন না ।  অনেকেরই এই সমস্যার তবে পরিবর্তন করতে হবে ।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *