অফিস পলিটিক্স থেকে বাঁচার কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপায় | সবারই এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো জানা জরুরী
অফিস পলিটিক্স নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় তখন কাজের জায়গায় একটা বিষাক্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয়, আজকের আর্টিকেলটি পড়লে আপনার বেলায় এমনটা হবে না। আজকে আমরা কিভাবে অফিস পলিটিক্স প্রফেশনালি ডিল করতে হয় সেই ব্যাপারটা নিয়ে কথা বলব। অফিসের মধ্যে যেকোনো ধরনের পলিটিক্স এর মধ্য দিয়েই যান না কেন আশা রাখছি এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা একটা সমাধান বের করতে পারবো।
অফিস পলিটিক্স বলতে আমরা কি বুঝি ?
Merriam-webster.com ওয়েবসাইটের তথ্য মতেঃ অফিস পলিটিক্স বলতে এমন এক ধরনের আচরণ, কার্যকলাপ, মনোভাব কে বোঝায় যেটার মাধ্যমে কোন কর্ম স্থলে অথবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আলাদা সুবিধা গ্রহণ করা সম্ভব । সাধারণত একজন ব্যক্তি অন্য ব্যক্তিকে পছন্দ করে অথবা অপছন্দ করে আর এ ধরনের পজিটিভ অথবা নেগেটিভ সম্পর্কের মাধ্যমে একটা অফিস অথবা কর্মস্থলে রাজনৈতিক পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
আপনি একটু ভাবুন এভাবে । হয়তো আপনি কোন একজন কর্মী বা সহকর্মীর ব্যাপারে অভিযোগ করেছেন । যে ঠিকমত তার দায়িত্বটা পালন করছে না। অথবা আপনার মনের মধ্যে কেমন একটা প্রশ্ন আছে যেটা আপনার একজন সহকর্মীর কাছ থেকে জানা প্রয়োজন । কিন্তু আপনি তাকে প্রশ্ন করছেন না কারণ আপনি তাকে পছন্দ করেন না। এ ধরনের কার্যক্রমগুলো অফিস পলিটিক্স বলে বিবেচনা করা হয়।
অফিস পলিটিক্স কি আসলেই খুব খারাপ?
সত্যি বলতে অফিস রাজনীতি একটি কর্মস্থলের অনিবার্য সামাজিক ইন্টারেকশন কিন্তু এটা যে সবসময় খারাপ হবে এমন টাও না। এটা মাঝে মাঝে খারাপ হতে পারে? আর এটা নির্ভর করছে আপনার চিন্তাধারার ওপর যে আপনি এটাকে কিভাবে নিচ্ছেন?
অফিস রাজনীতির সাথে কিভাবে ডিল করবেনঃ চারটি টিপস
কিভাবে আমরা অফিস রাজনীতির সাথে সামঞ্জস্য করব? একজন সফল CEO Kevin Hillstrom, ভিতর থেকে জানবো তিনি কীভাবে অফিস রাজনীতি পর্যবেক্ষণ করেন । তিনি রাজনীতি নিয়ে এনালাইসিস করেছেন এবং অনেক ঘর পোড়ানোর পর আজ একজন সফল CEO.
সব সময় ধোয়া তুলসীপাতা হবেন না
আমরা অনেকেই পাবি অফিসে থেকে বাঁচার উপায় হচ্ছে ওই ধরনের লোকদেরকে এড়িয়ে চলা। যদি এই শব্দটা শুনতে অনেক ভালো লাগে। কিন্তু বাস্তবে এটা পালন করা অনেক কঠিন। কেবিন প্রথমদিকে তাঁর সহকর্মীদের সাথে মিটিং করার পর বুঝতে পেরেছিলেন যে, সব সময় সাধু সাজলে অফিস পলিটিক্স থেকে বাঁচা যায় না। যখন আপনি এধরনের অবস্থার সম্মুখীন হবেন তখন অবশ্যই অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নিতে হবে। যেন আপনি অফিস রাজনৈতির ফাঁদে না পরেন ।
মিটিং রুমটিকে পড়তে শিখুন
কিছু লোকের রাজনৈতিক গতিবেগ লক্ষ্য করে খুব কষ্ট হয়। ভিডিওতে আপনি দেখতে পাচ্ছেন কেভিন হিলস্ট্রোম তাদের মধ্যে অন্যতম।যখন তিনি একদল কার্যনির্বাহীকে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপস্থাপনা দিচ্ছিলেন, তিনি নির্বাহীদের মধ্যে রাজনৈতিক গতিশীলতার দিকে মনোযোগ দেননি, যার ফলে তারা কেভিনের উপস্থাপনাটি কীভাবে উপলব্ধি করেছিল তার উপর এটির বিশাল প্রভাব পড়ে।
তাই অফিস কিংবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে।
অন্যান্য সফল ব্যক্তিরা কি করে তা ফলো করুন
ধরুন আপনি অফিসে বসে কাজ করছেন এ সময় আপনার বস আপনাকে বলল যে, আপনি যে কাজটি করেন সে কাজ সম্পর্কে আপনার কোন ধারনাই নেই। এধরনের মন্তব্য শুনতে কারোরই ভালো লাগেনা, কিন্তু আপনি যদি এটাকে পজিটিভলি নিয়ে নিজেকে ইম্প্রুভ করার জন্য কাজে লেগে পড়েন সেটা ভালো কাজে দেবে।
তো, প্রথমত আপনাকে কি করতে হবে? খেয়াল করতে হবে যে অফিসে যারা সফল তারা কিভাবে সেই পর্যায়ে গেল । আপনি হয়তো অফিসে দেখলেন যে, অফিসে কোন একজনের রেপুটেশন খুব ভালো, সে যে ধরনের ইনফরমেশন দেয় তাতে সিদ্ধান্ত নিতে অনেক সুবিধা হয়, অফিসের অন্যান্য কর্মীরা তার প্রতি মনোযোগী থাকে ইত্যাদি ইত্যাদি। তো আপনি তার মতো করে তাকে ফলো করতে পারেন।
এতে করে অফিসে আপনার রেপুটেশন বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু এটাকে খারাপ ভাবে নেয়া যাবে না। কারণ এটা কি শুধুমাত্র একটা উদাহরণ হিসেবে বলছি। আপনাকে যে ঠিক এভাবেই অফিসে সকলের কাছে ভালো হতে হবে তাও নয়। এই উদাহরণের মাধ্যমে আমরা বলতে চাচ্ছি যে, হয়তো এটা করার মাধ্যমে একটা অফিসে খারাপ পরিবেশ সৃষ্টি হওয়া থেকে আপনি বেঁচে যেতে পারবেন।
আপনার কমিউনিকেশন স্কিল এর উপর কাজ করুন
আপনার অফিসের রাজনৈতিক অবস্থা ভালো হতো বা খারাপ যেটাই হোক না কেন আপনাকে কমিউনিকেশন স্ক্রিনের উপর সব সময় কাজ করতে হবে। ভালো একজন কমিউনিকেটর এর মাধ্যমে আপনি চাইলেই অনেক ধরনের মিস আন্ডারস্ট্যান্ডিং থেকে বাঁচতে পারবেন। যদি আপনি ক্লিয়ারকাট কথা বার্তা বলতে পারেন তাহলে অনেক সময় অনেক খারাপ সিচুয়েশন থেকেও বেরিয়ে আসতে পারবেন। যদি আপনি কমিউনিকেশন স্কিল ইম্প্রুভ করতে চান তাহলে বিভিন্ন কোর্স রয়েছে সেগুলো করে নিতে পারেন। ইউটিউবে বর্তমানে প্রচুর ভিডিও রয়েছে কমিউনিকেশন স্কিল বৃদ্ধি করার জন্য সেগুলো দেখে নিতে পারেন।
দু’চারটা কথা বলে আসলে এই পুরো সিচুয়েশনটাকে বদলে দেওয়া সম্ভব নয়। অফিস রাজনীতি থেকে বাঁচার জন্য আপনি আরো অনেক কিছুই করতে পারেন। আশা করছি আপনার অফিস জীবন হবে সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যময়। চেষ্টা করতে থাকুন অবশ্যই আপনি এ ধরনের সিচুয়েশন থেকে বেরিয়ে আসতে পারবেন। নিজের ক্যারিয়ারকে সামনে এগিয়ে নেয়ার জন্য যতটুকু করা প্রয়োজন অবশ্যই সেটাকে প্রয়োগ করতে হবে। কিন্তু সেটা প্রয়োগ করতে যে কখনোই যেন হিতে বিপরীত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।