নতুনদের জন্য ফটোশপের ব্যাসিক ও টুলবার পরিচিতি!!
ফটোশপ একটি গুরুত্বপূর্ণ কম্পিউটার অ্যাপস। যা দিয়ে ছবি ডিজাইন করা হয়। তবে অনেকেই জানে না কীভাবে ফটোশপে কাজ করতে হয়। এ ভয়ে অনেকে ফটোশপের কাজ শুরু করে না।
তাই যারা ফটোশপের কাজ শুরু করছে না তাদের জন্য এই টিউন ভুমিকা হিসেবে কাজ করবে। ফটোশপ শেখার জন্য প্রথমেই ফটোশপের টুলবার সম্পর্কে জেনে নিতে হবে। চলুন তাহলে এ বিষয় সম্পর্কে জেনে নেই।
টুলবার
ফটোশপ অ্যাপস ওপেন করলেই প্রথমে ফটোশপের বামপাশে বিভিন্ন আইকন বাটন সংবলিত টুল দেখা যায়, একেই ফটোশপ টুল বলে। অনেকে একে টুলবার বা টুলবক্সও বলে থাকে।
বিভিন্ন টুল ব্যবহার করে ফটোশপে বিভিন্ন কাজ করা হয়। ফটোশপের সর্বশেষ সংস্করণে প্রায় ৩০ রকম ভিন্ন ভিন্ন টুলস আছে। কাজের সুবিধার্থে এসব টুসকে ৬ টি গ্রুপে ভাগ করা যায়। আবার কিছু কিছু টুলের আবার সাবটুলও রয়েছে।
এই টুলগুলোতে মাউস থেকে রাইট বাটনে ক্লিক করলেই সাব টুলগুলো পাওয়া যায়। চলুন তাহলে আমরা এসব টুলসের ব্যবহার ও পরিচিতি সম্পর্কে জেনে নেই। আর এ টুলবার সম্পর্কে জানলেই আপনি ফটোশপের বেসিক আয়ত্ত করতে পারবেন।
মার্কিউ টুল (Marquee Tool)
ফটোশপ টুল ওপেন করলেই বামপাশে বিভিন্ন আইকন সংবলিত টুলস দেখতে পাবেন। Marquee টুল ব্যবহার করার জন্য উপরের ছবিতে মার্ক করা অংশে মাউস নিয়ে রাইট বাটনে ক্লিক করুন। ক্লিক করার পর চারটি অপশন দেখতে পাবেন। নিচে এগুলোর ব্যবহার সম্পর্কে সংক্ষেপে বলা হলো-
রেক্টাঙ্গুলার মার্কিউ টুল (Rectangular Marquee Tool) : এ টুল ব্যবহার করে চতুর্ভুজাকৃতি সিলেকশন করা যায় ।
ইল্লিপটিকেল মার্কিউ টুল (Illiptical Marquee Tool): এটি ব্যবহার করে গোলাকার সিলেকশন করা যায়।
সিঙ্গেল রো মার্কিউ টুল (Single Row Marquee Tool): এই টুল ব্যবহার করে এক পিক্সেল প্রশস্ততা বিশিষ্ট রো নির্দিষ্ট করা যায়।
সিঙ্গেল কলাম মার্কিউ টুল (Single Column Marquee Tool): এটি ব্যবহার করে এক পিক্সেল প্রশস্ততা বিশিষ্ট কলাম নির্দিষ্ট করা যায়।
মুভ টুল (Move Tool)
মুভ টুলের মাধ্যমে যেকোন ছবিতে লেয়ার এবং অঙ্কিত সিলেকশনকে ইচ্ছেমতো যেকোনো জায়গায় সরানো যাবে।মার্কিউ টুলের মাধ্যমে সিলেক্ট করা বিভিন্ন আকৃতির সিলেকশন মুভ টুলের মাধ্যমে যেকোন জায়গায় সরানো যায়।মুভ টুলের কিবোর্ডের শর্টকাট হচ্ছে V. অর্থাৎ, কিবোর্ড থেকে V Press করলেই মুভ টুল সিলেক্ট হয়ে যাবে।
ল্যাসো টুল (Lasso Tool)
ল্যাসো টুলের কিবোর্ডের শর্টকাট হচ্ছে L. কিবোর্ডের L চাপলে ল্যাসো টুল সিলেক্ট হয়ে যাবে। ল্যাসো টুল দু ধরণের। যথাঃ
- পলিগোনাল ল্যাসো টুল (Polygonal Lasso Tool)
- ম্যাগনেটিক ল্যাসো টুল (Megnetic Lasso Tool)
পলিগোনাল ল্যাসো টুল (Polygonal Lasso Tool): এই টুুুলস ব্যবহার করে সোজা বা ভেঙে ভেঙে ডকুমেন্টস সিলেক্ট করা যায়।
ম্যাগনেটিক ল্যাসো টুল (Megnetic Lasso Tool): এ টুল ব্যবহার করে একই ধরণের পিক্সেল সহজেই সিলেক্ট করা যায়।
ম্যাজিক ওয়ান্ড (Magic Wand)
এটি একপ্রকার সিলেকশন টুল। এটি ব্যবহার করে আপনি ইমেজের যে অংশটুকু সিলেক্ট করতে চান সেখানে এই টুলটি নিয়ে সেই স্পটে নিয়ে ক্লিক করুন । তখন ফটোশপ আপনি আপনি সে অংশ সিলেক্ট করে নেবে। এ টুলের কিবোর্ডের শর্টকাট হচ্ছে M.
ক্রপ টুল (Crop Tool)
ইমেজের অতিরিক্ত অংশ কেটে আলাদা করার জন্য ক্রপ টুল ব্যবহার করা হয়।এর শর্টকাট কি হচ্ছে C. ক্রপটুলের আরও দুইটি সাব টুল আছে।
- স্লাইস টুল (Slice Tool)
- স্লাইস সিলেক্ট টুল (Slice Select Tool)
স্লাইস টুল ব্যবহার করে ইমেজের স্লাইস তৈরি করা যায় আর স্লাইস সিলেক্ট টুল দ্বারা স্লাইস সিলেক্ট করা যায়।
আইড্রপার (Eye Droper)
আইড্রপার টুলের সাহায্যে ইমেজের কোন অংশে ক্লিক করলে সে অংশের কালার কোড এবং কালার স্যাম্পল দেখিয়ে দিবে। এর শর্টকাট কি হচ্ছে I. এর তিনটি সাব টুল রয়েছে। যথাঃ
- কালার স্যামপ্লার টুল (Color Sampler Tool)
- রুলার টুল (Ruler Tool)
- নোট টুল (Note Tool)
স্পট হিলিং ব্রাস টুল ( Spot Healing Brush Tool)
এ ব্রাস ব্যবহার করে ইমেজের কোন ত্রুটি বা দাগ দূর করা হয়। এর সাবটুলগুলো হলো –
- হিলিং ব্রাস টুল (Healing Brush Tool)
- প্যাচ টুল (Patch Tool)
- রেড আই টুল (Red Eye Tool)
পেইন্ট ব্রাস টুল (Paint Brush Tool)
এর শর্টকাট কি হচ্ছে B. এটি বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়। এটা দিয়ে টুকটাক আঁকাআকি করা যায়। লেয়ার মুছা যায়। এ টুলে অনেক আকারের ব্রাস পাওয়া যায়। চাহিদা ও কাজ অনুসারে এগুলো ব্যবহার করা হয়।
ব্রাস টুল (Brush Tool)
ব্রাস টুল ব্যবহার করে ড্রয়িং করা হয়। এর কয়েকটি সাবটুল রয়েছে। এগুলো হলো –
- পেন্সিল টুলঃ মুক্তভাবে কোন ডকুমেন্টের উপর লেখার জন্য এ টুল ব্যবহার করা হয়।
- কালার রিপ্লেসমেন্ট টুলঃ এ টুল ব্যবহার করে কালার রিপ্লেসমেন্ট করা যায়।
- মিক্সার ব্রাস টুলঃ এ টুল ব্যবহার করে কালারকে বিভিন্ন ধরনের রং দেওয়া যায়।
ইরেজার গ্রুপ টুল (Eraser Group Tool)
ইউটিউব ব্যবহার করে ইমেজের বিভিন্ন অংশ মুছা হয়।এর সাবটুলগুলো হলো –
- ইরেজার টুল (Eraser Tool): এ টুলের সাহায্যে ইমেজের লেয়ার বা সিলেক্ট করা অংশের পিক্সেল মুছা যায়।
- ব্যাকগ্রাউন্ড ইরেজার টুল (Background Eraser Tool): ইমেজের ব্যাকগ্রাউন্ড মুছার জন্য এটি ব্যবহার করা হয়।
- ম্যাজিক ইরেজার টুল (Magic Eraser Tool): এর সাহায্যে কোন লেয়ারে ক্লিক করলে অটোমেটিকভাবে একই ধরণের সব টুল পিক্সেল মুছে যায়।
ক্লোন স্ট্যাম্প টুল (Clone Stamp)
এর শর্টকাট কি হলো S. এ টুলের সাহায্যে ফটোগ্রাফির যে কোন অংশের স্যাম্পল সিলেক্ট করা যায়। একই সাথে অন্য একটি অংশে তাকাবার পুনরায় স্থাপন করতে পারবেন।
টাইপ টুল (Type Tool)
টাইপ টুলের সাহায্যে ফটোশপে যেকোনো কিছু লেখা যায়। সেখানে ইচ্ছামত ফন্ট, কালার,স্টাইল ইত্যাদি ব্যবহার করা যায়। অর্থাৎ সব ধরনের লেখালেখির কাজ করতে এ টুল ব্যবহার করা হয়। এক সাবটুলগুলো হল-
- হরাইজন্টাল টাইপ টুল (Horizontal Type Tool) : এর সাহায্যে স্বাভাবিকভাবে টেক্সট লেখা যায়।
- ভার্টিক্যাল টাইপ টুল (Vertical Type Tool): এ টুলের সাহায্যে উলম্বভাবে লেখা যায়।
- হরাইজন্টাল টাইপ মাস্ক টুল (Horizontal Mask Type Tool) : অনুভূমিকভাবে লেখার বর্ডার সিলেক্ট করার জন্য এটি ব্যবহার করা হয়।
- ভার্টিক্যাল মাস্ক টাইপ টুল (Vertical Mask Type Tool): উলম্বভাবে লেখার বর্ডার সিলেক্ট করার জন্য এটি ব্যবহার করা হয়।
ব্লুর, সারপেন ও স্মুথ টুল (Blur,Sharpen and Smudge)
পেইন্ট করা অংশ ফোকাস করতে ব্লুর টুল ব্যবহার করা হয়। সার্প করতে Sharpen টুল এবং তার কাজ করার জন্য Smudge টুল ব্যবহার করা হয়।
পেইন্ট ক্যান ও গ্র্যাডিয়েন্ট টুল (Paint Can and Gradient) টুল
ইমেজ এর বিভিন্ন অংশ ফরগ্রাউন্ড কালার দ্বারা ফিল করতে পেইন্ট ক্যান টুল ব্যবহার করা হয়। গ্যাডিয়েন্ট টুল দ্বারা বিভিন্ন ধরণের ইফেক্ট দেওয়া হয়।
পেন টুল (Pen Tool)
বিভিন্ন রকম Path তৈরীর জন্য ব্যবহার করা হয়।এর শর্টকাট কি হচ্ছে P.
পাথ টুল (Path Tool)
এর শর্টকাট কি হচ্ছে A. এটি দিয়ে পাথ মুভিং করা যায়।
শেপ টুল (Shape)
এর শর্টকাট কি U.এর সাহায্যে বিভিন্ন ভেক্টর আকৃতি, ত্রিভুজ, চতুর্ভুজ ইত্যাদি তৈরি করা যায়।
হ্যান্ড টুল (Hand Tool)
এর সাহায্যে ফটোশপের যেকোনো জায়গায় ড্র্যাগ করে করে যেতে পারবেন। জুম করার পর এই টুল দিয়ে বিভিন্ন স্থানে ড্র্যাগ করে যাওয়া যাবে। এর শর্টকাট কি H.
জুম টুল (Zoom Tool)
কাজ করার সুবিধার্থে বিভিন্ন স্থানে বড় করে দেখার জন্য এটি ব্যবহার করা হয়। কিবোর্ডের Z তে চাপলে এটি সিলেক্ট হয়ে যায়।
কালার সিলেকশন টুল (Color Selection)
আপনি কোন কালার ব্যবহার করবেন, ব্যাকগ্রাউন্ড, ফোরগ্রাউন্ডে কোন কালার রয়েছে এর সাহায্যে এসব দেখা যায়।