৭ম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুসন্ধানি কাজ ৬ pdf
৭ম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুসন্ধানি কাজ ৬ : আমরা প্রত্যেকে দলে ভাগ হয়ে কাগজ একসাথে আটকে মলাট দিয়ে একটি বই বানাই। বিভিন্ন খতুতে আমাদের আশপাশের আবহাওয়া, গাছপালা, পাতা, মাটি, আকাশ ইত্যাদির যে পরিবর্তন তা আমরা এখানে লিপিবদ্ধ করব বছরব্যাপী।
বছর শেষে আমরা একে অন্যেরটি দেখব প্রতি পৃষ্ঠায় এক মাসের মধ্যে লক্ষণীয় পরিবর্তনগুলো নানাভাবে সংরক্ষণ করি লিখে, ছবি এঁকে, আর পরিবর্তিত বিভিন্ন উপাদানগুলোর নমুনা সংগ্রহ করে। ” সুমনের আইডিয়াটা সবার খুব পছন্দ হলো। এরপর ওরা একেক দল একেক ধরনের আবহাওয়া ও প্রকৃতির উপাদান বেছে নিল। খুশি আপা বললেন, দল তৈরির ক্ষেত্রে আমরা এমনভাবে দল তৈরি করব যেন আমাদের প্রত্যেকের বাড়ি এলাকার বিভিন্ন জায়গায় হয়। তাহলে আমরা ভিন্ন ভিন্ন জায়গার প্রকৃতির পরিবর্তন লক্ষ করতে পারব।
৭ম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুসন্ধানি কাজ ৬
অনুসন্ধানী কাজ-৬
বিষয়বস্তু: সময়ের সাথে সাথে প্রাকৃতিক উপাদানের পরিবর্তন।
অনুসন্ধানের প্রশ্ন: সময়ের সাথে সাথে কী প্রাকৃতিক উপাদানও পরিবর্তিত হয়?
প্রশ্নে যে মূল বিষয়বস্তুগুলো রয়েছে:-
● তথ্য উৎস: আমাদের পরিবেশে এবং বন্ধুদের অনুসন্ধানী কাজ লেখার বই।
● তথ্য সংগ্রহের পদ্ধতি: বন্ধুদের সাথে তাদের অনুসন্ধানী কাজ লেখার বই আদান-প্রদান করে তথ্য সংগ্রহ করেছি।
– তথ্য সংগ্রহের ছক –
প্রাকৃতিক উপদান
বিভিন্ন ঋতু
প্রাকৃতিক পরিবর্তন
১. গাছপালা
গ্রীষ্ম: গ্রীষ্মকালে বাংলাদেশে কালবৈশাখী ঝড় হয়। এসময়ে গাছের ডাল-পালা ভেঙে যায় এবং অনেক সময় সম্পূর্ণ গাছটিও উপরে পরে। গ্রীষ্মের প্রচ- তাপে গাছে শুষ্ক হয়ে যায়। যদিও এসময়ে গাছে বিভিন্ন প্রকার সুস্বাদু ফলে প্রকৃতি ভরে ওঠে।
শীত: শীতকালে গাছের সব পাতা প্রায় ঝরে যায় এবং গাছের ডাল-পালা পাতাশূন্য হয়ে যায়। এসময়ে প্রকৃতিকে বড়ই বিবর্ণ দেখায়।
বসন্ত: বসন্তকালে মরা গাছ যেন আবার প্রাণ ফিরে পায়। এসময়ে গাছে নতুন পাতা গজায় এবং চারিদিক সবুজে ভরে ওঠে।
২. মাটি
গ্রীষ্ম: গ্রীষ্মের প্রচ- তাপদাহে মাটি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ফলে মাটির রস শুকিয়ে যায় এবং মাটি প্রচ- শক্ত হয়ে যায়। একটা পর্যায়ে মাটি ফেটে চৌচির হয়ে যায়। এসময়ে মাটিতে ফসল ফলানোর জন্য প্রচুর সেচের প্রয়োজন পড়ে।
বর্ষা: বর্ষাকালে মাটি বৃষ্টির সংস্পর্শে আসে এবং তার হারানো রস ফিরে পায়। ফলে মাটি আবার নরম হয়ে ওঠে এবং ফসল চাষের উপযোগিতা বৃদ্ধি পায়।
শীত: শীতকালে তাপমাত্রা কম থাকে। দিনের বেশিরভাগ সময়ে সূর্য দেখা যায় না। ফলে মাটিতে তাপ এসে পৌঁছায় না। এতে মাটিতে আদ্রতা তৈরি হয়। ফলে বেশিরভাগ জায়গায় মাটিতে শ্যাওলা জমতে দেখা যায়।
৩. আকাশ
গ্রীষ্ম: গ্রীষ্মকালে আকাশ বেশ পরিষ্কার থাকে।
বর্ষা: বর্ষায় ঘনঘন বৃষ্টি হয়। ফলে আকাশে মেঘ জমে থাকে। এতে করে দিনের বড় একটা অংশ সূর্য মেঘে ঢাকা থাকে। ফলে সূর্য দেখা যায় না। আবার এক পশলা বৃিিষ্টর শেষে অনেক জায়গাতে মনমুগ্ধকর রংধনু দেখা যায়।
শরৎ: শরৎকালে আকাশ সবচেয়ে বেশি সুন্দর লাগে। শরৎ মানেই নীল আকাশে শুভ্র মেঘের ভেলা। শরতের আকাশে ভাসা-ভাসা মেঘের দল কখনো সাদা, কখনো কালচে রূপ ধারণ করে। ক্ষণে ক্ষণে রূপ বদলায় শরতের আকাশ।
● তথ্য বিশ্লেষণ: ওপরে ছকে উল্লেখিত তথ্যগুলো আমি আমার সহপাঠি এবং বন্ধুদের অনুসন্ধানী কাজের বই থেকে সংগ্রহ করেছি। এ তথ্যগুলো বিশ্লেষণ করে জানতে পেরেছি, আমাদের চারপাশের দেখা চিরচেনা প্রকৃতিও সময়ের সাথে সাথে বদলে যায়। বিভিন্ন ঋতুতে আমাদের এ প্রকৃতি বিভিন্ন রূপ নেয়। কখনো কখনো ঋতুর পরিবর্তিত এ রূপ আমাদের ভালো লাগে, আবার কখনো কখনো ঋতুর পরিবর্তনের ফলে আমরা বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখিন হই।
● ফলাফল বা সিদ্ধান্ত: উক্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে আমি বেশ কিছু সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি। তা হল—
১. বাংলাদেশ ষড়ঋতুর দেশ। তাই বিভিন্ন ঋতুতে প্রকৃতিকে আমরা আলাদা আলাদা রূপে দেখতে পাই।
২. প্রকৃতির প্রধান উপদানগুলো যেমন- গাছপালা, মাটি, আকাশ-বাতাস ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে এগুলোও পরিবর্তন হয়ে যায়।
৩. বিভিন্ন ঋতুতে প্রাকৃতিক উপাদানের এ পরিবর্তন আমাদের দেশকে বৈচিত্র্যময় করে তুলেছে।
● উপস্থাপন: শিক্ষার্থীরা নিজেদের মত করে স্বতস্ফূর্তভাবে উপস্থাপন করবে।