৭ম শ্রেণির আইসিটি: ২য় অধ্যায় প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন ১ : কী-বোর্ডকে প্রধান ইনপুট ডিভাইস বলা হয় কেন? ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: কী-বোর্ডকে প্রধান ইনপুট ডিভাইস বলা হয়। কারণ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অধিকাংশ যন্ত্রে কী-বোর্ডের মাধ্যমে নির্দেশনা দিতে হয়। বিশেষ করে কম্পিউটারে ওয়ার্ড প্রসেসিং কাজে একমাত্র কী-বোর্ড দিয়ে প্রায় সকল ধরনের নির্দেশনা দিতে হয়। কোনো কিছু লিখতে কী বার্ড আবশ্যক। কেননা কী-বোর্ডের মাধ্যমে বিভিন্ন ভাষার কমান্ড থাকে। কী-বোর্ডে বর্ণ, সংখ্যা, চিহ্ন থাকে। একজন ব্যবহারকারী সহজেই সেগুলো কী-বোর্ড কমান্ডের মাধ্যমে ব্যবহার করতে পারেন। তাছাড়া কী বোর্ড দিয়ে যেসকল কাজ করা যাবে কিন্তু অন্যান্য ইনপুট যন্ত্র দিয়ে সে সব কাজ করা যায় না। এ কারণেই কী-বোর্ডকে প্রধান ইনপুট ডিভাইস বলা হয়।

প্রশ্ন ২ : মাইক্রোফোন ডিভাইস সম্পর্কে বর্ণনা করো।

উত্তর: মাইক্রোফোন ইনপুট যন্ত্র । এই যন্ত্র ব্যবহার করে আমরা কথা, গান বা যেকোনো ধরনের শব্দ কম্পিউটারে প্রবেশ করাতে পারি। বিশেষ করে অনলাইনভিত্তিক ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের ক্ষেত্রে কথা বলার জন্য এটি ব্যবহৃত হয়। টেলিফোন মাধ্যমে এটি ব্যবহৃত হয় বলে এ যন্ত্রটির আবিষ্কার অনেক আগেই হয়েছে। বর্তমানে এটি কম্পিউটার ও স্মার্টফোনে ইনপুট যন্ত্র হিসাবে ব্যবহার হয়। কথা বলা ছাড়াও ভয়েস রিকগনিশনের ক্ষেত্রে মাইক্রোফোন ব্যবহার হয়ে থাকে।

প্রশ্ন ৩ : কী-বোর্ড একটি ইনপুট ডিভাইস– ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: কম্পিউটারে ইনপুট দেওয়ার প্রধান এবং বহুল ব্যবহৃত যন্ত্র হলো কী বোর্ড। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অধিকাংশ যন্ত্রে সাধারণত কী বোর্ডের মাধ্যমে ইনপুট দেওয়া হয়। কম্পিউটার বা অন্যান্য যন্ত্র দিয়ে কোনো কাজ করতে চাইলে, এদের কিছু নির্দেশনা দিতে হয়। কী বোর্ডের বোতাম চেপে এ নির্দেশ বা ডেটা কম্পিউটার/যন্ত্রের মধ্যে প্রবেশ করানো হয়। তখন কম্পিউটার/যন্ত্রটি আমাদের নির্দেশ অনুযায়ী কাজটি করে দেয়। এ জন্য কী বোর্ড ইনপুট ডিভাইস হিসেবে বহুল ব্যবহৃত হয়।

প্রশ্ন ৪ : কী বোর্ডের গঠন আলোচনা করো।

উত্তর: কম্পিউটারে বিভিন্ন তথ্য বা নির্দেশনা প্রদান করার অন্যতম মাধ্যম হিসাবে কী বোর্ড ব্যবহৃত হয়। আধুনিক কম্পিউটারের কী বোর্ডের ধারণা টাইপরাইটার থেকে এসেছে। কী বোর্ডে সাধারণত বর্ণ, সংখ্যা, অঙ্ক, প্রতীক ইত্যাদি বাটন বিন্যস্ত থাকে। এছাড়া এতে কম্পিউটার অপারেটিং, মাল্টিমিডিয়া ও ইন্টারনেট ব্যবহার ইত্যাদি কাজের জন্য অতিরিক্ত সুবিধা সম্বলিত বিশেষ বাটন থাকে। কী বোর্ড সাধারণ ইংরেজি ভাষায় হলেও অন্যান্য ভাষায় কী বোর্ড পাওয়া যায়। বর্তমানে বাংলা লেআউট যুক্ত কম্পিউটার কী বোর্ড পাওয়া যায়। কম্পিউটারে গেমস খেলা, গ্রাফিক্স এর কাজ করার জন্যও বিশেষ কিছু বাটনসহ কী বোর্ড পাওয়া যায়। সকল কী বোর্ড কম্পিউটারে ইনপুট ডিভাইস হিসেবে ব্যবহার করা হয়, যদিও গঠন ভিন্ন হয়।

প্রশ্ন ৫ : ডিজিটাল ক্যামেরা সম্পর্কে বুঝিয়ে বলো।

উত্তর: ডিজিটাল ক্যামেরা হচ্ছে এক ধরনের ইনপুট ডিভাইস। প্রথমদিকে মহাকাশ গবেষণার কাজে ডিজিটাল ক্যামেরা কম্পিউটারের ইনপুট যন্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা শুরু হয়। বর্তমানে প্রায় সকল ডিজিটাল ক্যামেরাই কম্পিউটারের ইনপুট যন্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ডিজিটাল ক্যামেরার ছবি বা ভিডিও ইউএসবি পোর্টের মাধ্যমে কম্পিউটারের সাথে যুক্ত করে কম্পিউটার ইনপুট হিসেবে প্রবেশ করানো হয়। ডিজিটাল ক্যামেরায় তোলা ছবি, ভিডিও ভালো মানের হয়ে থাকে। ডিজিটাল ক্যামেরায় ফিল্ম-এর বদলে মেমোরি ডিভাইস ব্যবহার করা হয়। ফিল্ম-এ ছবি তোলার সংখ্যা সীমিত কিন্তু ডিজিটাল ক্যামেরায় অসংখ্য ছবি তোলা যায়।

প্রশ্ন ৬ : স্ক্যানার সম্পর্কে বুঝিয়ে বলো।

উত্তর: স্ক্যানার হচ্ছে ছবি, লেখা বা ডকুমেন্ট বা কোনো বস্তুর ডিজিটাল প্রতিলিপি কম্পিউটারে দেওয়ার জন্য একটি ইনপুট ডিভাইস। আগে ফটোকপি মেশিনের সাহায্যে বিভিন্ন ডকুমেন্টের প্রতিলিপি করা হতো। কিন্তু এ প্রতিলিপিটি যতবার দরকার ততবারই মেশিন ব্যবহার করে প্রতিলিপি করতে হতো এবং তথ্যটি সংরক্ষিত করা যেত না। স্ক্যানার এ সমস্যাটির সমাধান দিয়েছে। স্ক্যানার ব্যবহার করে ছবি, ডকুমেন্ট বা কোনো বস্তুর ডিজিটাল প্রতিলিপি তৈরি করে কম্পিউটারে ফাইল আকারে সংরক্ষণ করা যায়। প্রয়োজনে এ ডিজিটাল প্রতিলিপি পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করে যে কোন সময়ে ব্যবহার করা যায়।

প্রশ্ন ৭ : ওএম আর (OMR) সম্পর্কে বুঝিয়ে বলো ৷

উত্তর: অপটিক্যাল মার্ক রিডার (Optical Mark Reader) এর সংক্ষিপ্ত রূপ হচ্ছে ওএম আর (OMR)। এটি একটি কম্পিউটারের ইনপুট ডিভাইস। এটি আলোর প্রতিফলন বিচার করে বিভিন্ন ধরনের তথ্য বুঝতে পারে। ওএম আরের কাজের ধরণ অনেকটা স্ক্যানারের মতো। বিশেষভাবে তৈরি করা কিছু দাগ বা চিহ্ন ওএম আর পড়তে বা বুঝতে পারে। আলোর প্রতিফলন ধর্ম ব্যবহার করে ওএম আর কাজ করে। বিভিন্ন পরীক্ষার বহুনির্বাচনি প্রশ্নের উত্তরপত্র যাচাইয়ে, বাজার সমীক্ষা, বিভিন্ন জরিপের কাজে ওএম আর ব্যবহৃত হয়।

প্রশ্ন ৮ : র‍্যাম (RAM) কে অস্থায়ী মেমোরি বলা হয় কেন? ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: মাদারবোর্ডের প্রসেসর র্যামের যেকোনো জায়গা থেকে সরাসরি তথ্য সংগ্রহ করে বলে একে Random Access Memory বা সংক্ষেপে RAM বা র‍্যাম বলে। প্রসেসর র‍্যাম থেকে তথ্য নিয়ে তথ্য প্রক্রিয়াজাত করে। আর এ প্রক্রিয়াজাতকরণ বিদ্যুৎ প্রবাহের ওপর নির্ভরশীল। বিদ্যুৎ প্রবাহ থাকলে র্যাম থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য নিয়ে প্রসেসর প্রক্রিয়াজাত করতে পারে। আর বিদ্যুৎ প্রবাহ বন্ধ হলে র্যামের সমস্ত ডেটা বা তথ্য মুছে যায়। র্যামে রাখা ডেটা বা তথ্য ব্যবহারকারী পরিবর্তন করতে পারে। এ সকল কারণে র্যামকে অস্থায়ী মেমোরি বলা হয়।

প্রশ্ন ৯ : রম (ROM) কে স্থায়ী মেমোরি বলা হয় কেন? ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: রম (ROM) অর্থাৎ Read Only Memory এটি প্রধান মেমোরির অন্যতম প্রধান। এটি মাদারবোর্ডের সাথে সংযুক্ত থাকে। কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার সচল রাখার জন্য কিছু নির্দেশনা প্রয়োজন হয়। এই নির্দেশনাগুলো ছাড়া কম্পিউটার চালু করা যায় না, বিধায় নিদের্শনাসমূহ ROM -এ স্থায়ীভাবে সংরক্ষিত থাকে। যা বিদ্যুৎ প্রবাহের উপর রম নির্ভর করে না। ফলে ব্যবহারকারীও বিশেষ ব্যবস্থা ছাড়া এ মোমোরির তথ্য মুছে ফেলতে পারে না। শুধুমাত্র পাঠ করা যায় বলে একে ROM বা Read Only Memory বলে। যেহেতু বিশেষ ব্যবস্থা ছাড়া এর তথ্য সংযোজন বা বিয়োজন করা যায় না তাই একে স্থায়ী মেমোরি বলা হয়।

প্রশ্ন ১০ : র‍্যাম (RAM) ও রম (ROM) এক নয় ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: র‍্যাম (RAM) কে Random Access Memory বলা হয়। এটি কম্পিউটার বা স্মার্ট ফোনের মাদারবোর্ডের সাথে সংযুক্ত থাকে। তথ্য প্রক্রিয়াকরণের সময় প্রসেসর সাময়িকভাবে তথ্য র‍্যামে জমা করে। আবার প্রয়োজনে র‍্যাম থেকে তথ্য নিয়ে প্রসেসর তথ্যা প্রক্রিয়াজাত করে । প্রসেসর র্যামের যেকোনো জায়গা থেকে সরাসরি তথ্য সংগ্রহ করে বলে একে dom Access Memory বলে। RAM এর Capacity যত বেশি হবে কম্পিউটার তত দ্রুতগতিতে কাজ করবে। তবে RAM এ তথ্য স্থায়ীভাবে থাকে না।
অপরপক্ষে ROM বা Read Only Memory এটিও মাদারবোর্ডের সাথে যুক্ত থাকে৷ কম্পিউটার বা আইসিটি যন্ত্রগুলো চালু করার জন্য কিছু নির্দেশনার দরকার হয়। এই নির্দেশনাসমূহ রম (ROM)-এ স্থায়ীভাবে সংরক্ষিত থাকে। বিদ্যুৎ থাকা না থাকা উপর এই মেমোরি নির্ভর করে না। এবং রম এর তথ্য সহজেই মুছে ফেলা যায় না। শুধু পাঠ করা যায়। তাই পরিশেষে বলা যায় যে, র‍্যাম ও রম এক নয়।

DOWNLOAD CHAPTER 2

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *