৭ম শ্রেণির আইসিটি: ১ম অধ্যায় প্রশ্ন ও উত্তর (PDF)
৭ম শ্রেণির আইসিটি: ১ম অধ্যায় প্রশ্ন ও উত্তর, ৭ম শ্রেণির আইসিটি ১ম অধ্যায় প্রশ্ন, ৭ম শ্রেণির আইসিটি ১ম অধ্যায় প্রশ্ন ও সমাধান, ৭ম শ্রেণির আইসিটি প্রশ্ন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ৭ম শ্রেণি ১ম অধ্যায়, ৭ম শ্রেণি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ১ম অধ্যায়
প্রশ্ন ১ : বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ সম্পর্কে লিখো ৷
উত্তর: বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ হচ্ছে বাংলাদেশের প্রথম জিও-স্টেশনারি স্যাটেলাইট। এটি পৃথিবী থেকে ৩৬,০০০ কিলোমিটার উপরে অবস্থান করে বলেই একে জিও স্টেশনারি স্যাটেলাইট বলা হয়। ১২ মে ২০১৮ তারিখে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ কে যুক্তরাষ্ট্রের কেনেডি মহাকাশ কেন্দ্র থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়। এভাবেই নিজস্ব স্যাটেলাইটের অধিকারী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ পৃথিবীর ৫৭তম দেশ হিসেবে গৌরব অর্জন করে।
প্রশ্ন ২: মোবাইল টেলিফোনকে বুদ্ধিমান যন্ত্র বলার কারণ বর্ণনা করো।
উত্তর: বর্তমানে মোবাইল টেলিফোন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির আশীর্বাদ হিসেবে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হচ্ছে। মোবাইল টেলিফোনের মাধ্যমে আমরা সশরীরে না গিয়ে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে অনায়াসে যোগাযোগ করতে পারি। যোগাযোগ ছাড়াও মোবাইল টেলিফোনের সাহায্যে গান শোনা, ছবি তোলা, ভিডিও করা, খুঁদে বার্তা পাঠানোর কাজ করা যায়। প্রতিনিয়ত এর উন্নতির ফলে কম্পিউটারের কাজ আমরা মোবাইল টেলিফোনে করতে পারছি। বর্তমানে শিক্ষার্থীরা এটি ব্যবহার করে বিভিন্ন অনলাইন নির্ভর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির আবেদন খুব সহজেই সম্পন্ন করতে পারছে।
এভাবে মোবাইল টেলিফোন আমাদের বিভিন্নভাবে সাহায্য করছে। এটি জীবনের মানকে বদলে দিয়েছে। মানুষ যেমন তার এটি বুদ্ধি দিয়ে অনেক কাজ করতে পারে তদ্রুপ মোবাইল টেলিফোনও বিভিন্ন ফাংশন ব্যবহার করে বিভিন্ন কাজ করে। এ জন্যই মোবাইল টেলিফোনকে একটি বুদ্ধিমান যন্ত্র বলা হয়।
প্রশ্ন ৩: ভার্চুয়াল অফিস সম্পর্কে ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: ভার্চুয়াল অফিস এমন একটি অফিস যেখানে কর্মীরা সশরীরে উপস্থিত না থেকে কাজ করে। ১৯৮৩ সালে সর্বপ্রথম ভার্চুয়াল অফিস নিয়ে আলোচনা করা হয়। পরবর্তীতে ১৯৯৪ সালে এ অফিসের কাজকর্ম শুরু হয়। কর্মীরা দূরে নিজ নিজ বাসায় বসে ইন্টারনেট ব্যবহার করে অফিসের কাজকর্ম করে থাকে। উন্নত দেশগুলোতে ভার্চুয়াল অফিসের কাজকর্ম শুরু হয়েছে। নিয়ম-নীতি মেনে কাজ করলে ভার্চুয়াল অফিসের কাজকর্ম সাধারণ অফিসের চেয়ে বেশি হয়। ভার্চুয়াল অফিস করার জন্য অনেক বড় অফিসের দরকার হয় না, প্রয়োজন হয় ইন্টারনেটযুক্ত কম্পিউটার এবং সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ। তাই বর্তমানে দিন দিন ভার্চুয়াল অফিস অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
প্রশ্ন ৪: ভার্চুয়াল অফিসের সুবিধাগুলো উল্লেখ করো।
উত্তর: ভার্চুয়াল অফিসে কর্মীরা সশরীরে উপস্থিত না থেকে কাজ করে বলে এর অনেক সুবিধা রয়েছে। প্রথমত, অফিসের জন্য বড় ভবন দরকার হয় না। দ্বিতীয়ত, কর্মীদের রাস্তা ঘাটের ট্রাফিক জ্যামের সাথে যুদ্ধ করে অফিসে আসতে হয় না। তৃতীয়ত, বাসায় বসে কাজ করা যায় বলে, অফিসের কাজের পাশাপাশি বাসার কাজকর্ম করা যায়। ভার্চুয়াল অফিস দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা চালু রাখা যায়। অফিস চালানো বাবদ খরচ অনেক কম হয়। দিন-রাত ভার্চুয়াল অফিসের কার্যক্রম থাকে বলে গ্রাহকরাও এতে উপকৃত হয়। এ সকল কারণে বর্তমানে ভার্চুয়াল অফিস অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
প্রশ্ন ৫: ঘরে বসে টাকা উপার্জন সম্ভব বুঝিয়ে বলো।
উত্তর: তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির যুগে আজকাল ঘরে বসেই অর্থ উপার্জন করা সম্ভব হচ্ছে। ইন্টারনেট প্রযুক্তির কল্যাণে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের কাজকর্ম এখন ঘরে বসেই করা যাচ্ছে। অনেক তরুণ-তরুণী অফিসে না গিয়ে নিজের দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে অনলাইনে ব্যক্তি স্বাধীনভাবে কাজ করছে। এ ধরনের কাজ করতে একটা কম্পিউটার আর ইন্টারনেটের সংযোগ দরকার তার সাথে দরকার- প্রোগ্রামিংয়ে দক্ষতা। এভাবে একজন দক্ষ প্রযুক্তিবিদ নিজের ঘরে বা যেকোনো জায়গায় বসে বিভিন্ন কোম্পানির কাজ করে অর্থ উপার্জন করতে পারে।
প্রশ্ন: ৬: কর্মক্ষেত্রে ইন্ডাস্ট্রিয়াল রোবটের ভূমিকা লেখো।
উত্তর: ইন্ডাস্ট্রিয়াল রোবট হচ্ছে এক ধরনের উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন রোবট যা দিয়ে শিল্প কারখানার বিপজ্জনক যান্ত্রিক কাজ করানো হয়। একঘেয়ে বিপজ্জনক কাজগুলো মানুষ না করে রোবট দিয়ে করা হচ্ছে। জাহাজ কারখানায় বিশাল বিশাল ধাতব টুকরাকে নির্দিষ্ট আকারে কেটে তারপর ওয়েল্ডিং করা হয়। এ সময় তীব্র আলোর ঝলকে আমাদের চোখের ক্ষতি করে। এ জন্য শিল্প-কারখানায় মানুষের বদলে বর্তমানে ইন্ডাস্ট্রিয়াল রোবট দিয়ে কাজ করানো হয়। রোবটের ক্লান্তি নেই বলে এক নাগাড়ে অনেকক্ষণ কাজ করতে পারে। তাই পৃথিবীর বড় বড় কলকারখানায় শ্রমিক হিসাবে এখন মানুষের বদলে ইন্ডাস্ট্রিয়াল রোবট ব্যবহার করা হয়। এর ফলে বিপজ্জনক কাজে মানুষের ঝুঁকি নিতে হয় না।
প্রশ্ন ৭: সামাজিক সম্পর্ক উন্নয়নে আইসিটির ভূমিকা উল্লেখ করো।
উত্তর: মানুষ সামাজিক জীব। সবার মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক আর দেওয়া-নেওয়ার মধ্যদিয়ে একটি সমাজ এগিয়ে চলে। সমাজের সবার মধ্যে যোগাযোগ রক্ষায় আগে চিঠি বিনিময় হত। কিন্তু টেলিফোন আর টেলিগ্রাম আবিষ্কারের ফলে সামাজিক সম্পর্ক রক্ষায় তাদের অবদান অনেক। এছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ সাইট রয়েছে যেখানে সবসময় একে অপরের খোঁজ খবর নিতে পারছে। ফলে সমাজের বিভিন্ন দিকে সুসম্পর্ক সৃষ্টি করছে। এভাবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সামাজিক চাহিদা পূরণের ব্যাপারগুলো হাতের মুঠোয় নিয়ে এসেছে এবং সামাজিক সম্পর্ক উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখছে।
প্রশ্ন ৮: ই-কার্ড সম্পর্কে বর্ণনা করো।
উত্তর: ইলেকট্রনিক কার্ডের সংক্ষিপ্ত রূপ হচ্ছে ই-কার্ড। এটিকে পোস্টকার্ড অথবা শুভেচ্ছা বার্তাও বলা হয়। সাধারণত ডিজিটাল কনটেন্ট ব্যবহার করে ইলেকট্রনিক ডিজাইনের মাধ্যমে একে অপরের মধ্যে শুভেচ্ছা বা আমন্ত্রণ জানানোর জন্য এটি ব্যবহৃত হয়। বিভিন্ন ধরনের ই-কার্ড যেমন: ফ্লাশ অ্যানিমেশন, ভিডিও, মোবাইল, ওয়েব বেজডসহ বিভিন্ন ইকার্ড রয়েছে। তুমি নিজে কম্পিউটারে ই-কার্ড তৈরি করে সেটি ই-মেইলে পাঠাতে পারো। আবার ইন্টারনেট থেকে ই-কার্ড সংগ্রহ করে তোমার প্রিয়জনের কাছে পাঠিয়ে দিতে পারো।
প্রশ্ন ৯: সামাজিক যোগাযোগের সাইটসমূহের ব্যবহারগুলো উল্লেখ করো।
উত্তর: তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আমাদের সামাজিক যোগাযোগকে দ্রুত, আকর্ষণীয় এবং কার্যকরী করে তুলেছে। সামাজিক যোগাযোগের সাইটসমূহের ব্যবহারগুলো হচ্ছে—
১. সামাজিক যোগাযোগ বজায় রাখা এবং সামাজিক বন্ধন অটুট রাখা ।
২. তথ্য আদান-প্রদান করা।
৩. ছবি, ভিডিও আদান-প্রদান করা।
৪. নিজের মতামত বন্ধুদের জানানো এবং বন্ধুদের মতামত জানা।
৫. সামাজিক আন্দোলন বা বিপ্লব গড়ে তোলা।
৬. সামাজিক যোগাযোগে বিভিন্ন দেশের মানুষের সংস্কৃতি সম্পর্কে জানা।
প্রশ্ন ১০: সামাজিক বিপ্লবে সামাজিক যোগাযোগ সাইটের ভূমিকা উল্লেখ করো অথবা, সামাজিক যোগাযোগ সাইট কীভাবে জনমত গঠনে ভূমিকা রাখতে পারে? সংক্ষেপে লেখো।
উত্তর: সামাজিক যোগাযোগ সাইটগুলো শুধুমাত্র ব্যক্তিগত সুখ-দুঃখ, পণ্যের বিজ্ঞাপন, কাজের খবর, ছবি ভিডিও শেয়ারিং ছাড়াও সামাজিক আন্দোলন সংগঠিত করার কাজও করছে। ২০১০-২০১১ সালে আরব বিশ্বে বিশেষ করে তিউনিসিয়া, মিসর, লিবিয়ায় যে সামাজিক বিপ্লব হয়েছিল তার পেছনে সকল সামাজিক যোগাযোগ সাইটের বিশেষ ভূমিকা ছিল। এখানে সবার সুচিন্তিত মতবাদ ও আদর্শকে গ্রহণ করে কোনো বিষয়ে জনমত গঠন করা যায়। জনমতের দ্বারা সমাজের দুর্নীতি, অবিচার ইত্যাদি বিষয়ে আন্দোলন করা যায়। তাই, সামাজিক বিপ্লবে বর্তমানে সামাজিক নেটওয়ার্ক গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে।