(৬ষ্ঠ অধ্যায়) ৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় সৃজনশীল প্রশ্ন (PDF)

৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় সৃজনশীল প্রশ্ন ৬ষ্ঠ অধ্যায় : সৃষ্টির শুরু থেকেই মানুষ প্রকৃতি ও পরিবেশকে কাজে লাগিয়ে নিজের প্রয়োজন মিটিয়েছে। এক টুকরো পাথর বা একটি গাছের ডাল হয়ে উঠেছিল হিংস্র পশুর হাত থেকে নিজেকে বাঁচানোর হাতিয়ার। প্রকৃতিকে এমনিভাবে কাজে লাগানোর ক্ষমতা মানুষকে দিয়েছে সংস্কৃতি যা অদ্যাবধি চলমান রয়েছে।

মানুষ বুঝতে পারল সমাজবদ্ধ হয়ে একত্রে থাকলে টিকে থাকার এই লড়াই আরও সুদৃঢ় হবে। তাই সমাজকে সংগঠিত করার উদ্দেশ্যে তৈরি হয় নানা নিয়ম-কানুন, যা ধীরে ধীরে অর্থনীতি, রাজনীতি, ধর্ম, শিক্ষা ইত্যাদিতে রূপ নিল। সমাজের মানুষের আনন্দ বিনোদন ও কল্যাণের জন্য তৈরি হলো নাচ, গান, সাহিত্য আরও কত কী! ফলে রচিত হলো সংস্কৃতির বস্তুগত ও অবস্তুগত রূপ।

৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় সৃজনশীল প্রশ্ন ৬ষ্ঠ অধ্যায়

সৃজনশীল প্রশ্ন ১ : অন্তরা বাবার সাথে গ্রামে বেড়াতে যায়। তার ফুফাতো বোন জুলেখার পছন্দ সকালে পান্তাভাত ও মাছ দিয়ে নাস্তা করা ও ভাটিয়ালি গান শোনা। নাস্তায় মাছ-ভাত খেতে দিলে অন্তরার মন খারাপ হয়। কারণ তার পছন্দ বার্গার, পরোটা, মাংস। কলেজে পড়াশোনা শেষে তার সময় কাটে ইন্টারনেট ব্যবহার করে ।

ক. বস্তুগত সংস্কৃতি কী?
খ. সংস্কৃতি স্থবির বিষয় নয় বরং পরিবর্তনশীল— ব্যাখ্যা কর।
গ. জুলেখার মাধ্যমে বাংলাদেশের কোন সংস্কৃতি ফুটে উঠেছে— ব্যাখ্যা কর।
ঘ. অন্তরার সংস্কৃতিতে বিশ্বায়নের প্রভাব লক্ষ করা যায়– মতামত দাও।

প্রশ্নের উত্তর

ক. সংস্কৃতির যেসব উপাদান খালি চোখে দেখা বা ধরা যায় তাই বস্তুগত সংস্কৃতি।

খ. একটি দেশের সংস্কৃতি বিকাশে বিভিন্ন উপাদান ভূমিকা রাখে। আর এ সব উপাদানের অধিকাংশ গতিশীল হওয়ায় তা সংস্কৃতিকেও গতিশীল করে রাখে। কোনো দেশের ভৌগোলিক পরিবেশ, আবহাওয়া, উৎপাদন পদ্ধতি ইত্যাদি বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে ওই দেশের সংস্কৃতি গড়ে ওঠে। যার ফলে বিভিন্ন অঞ্চলে সংস্কৃতির ধরনও ভিন্ন হয়ে থাকে। যদিও সংস্কৃতির কিছু প্রধান দিক দীর্ঘসময় অপরিবর্তিত অবস্থায় থেকে যায় তবুও এটি স্থবির নয়; বরং পরিবর্তনশীল।

গ. জুলেখার মাধ্যমে বাংলাদেশের গ্রামীণ সংস্কৃতি ফুটে উঠেছে। বাংলাদেশের সংস্কৃতিতে দুটি ধারা বিদ্যমান। গ্রামীণ সংস্কৃতি এর মধ্যে একটি । গ্রামীণ সংস্কৃতির প্রতিটি ক্ষেত্রে চিরায়ত গ্রাম-বাংলার সহজ-সরল, নমনীয় ও উদার ভাবটি দেখা যায়, যা জুলেখার কাজে ফুটে উঠেছে।

জুলেখা সকালে পান্তা ভাত ও মাছ দিয়ে নাস্তা করতে এবং ভাটিয়ালি গান শুনতে পছন্দ করে। এগুলো গ্রামীণ সংস্কৃতির বৈশিষ্ট্য। এ সংস্কৃতির ধারক গ্রামীণ মানুষের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হচ্ছে সকাল বেলা পান্তা ভাত খাওয়া। এছাড়া গ্রামের পুকুর, হাওর, খাল-বিলে প্রচুর মাছ পাওয়া যায়। তাই মাছ-ভাতই গ্রামের মানুষের প্রধান খাদ্য।

সংস্কৃতির অংশ হিসেবে গ্রামের মানুষ জারি, সারি, ভাটিয়ালি, মুর্শিদি, গম্ভীরা ইত্যাদি গানের মধ্যে ফুটিয়ে তোলে নিজেদের সুখ-দুঃখ, হাসি কান্নার অনুভূতিগুলো। সুতরাং, আমরা বলতে পারি জুলেখার মাধ্যমে বাংলাদেশের গ্রামীণ সংস্কৃতির বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠেছে।

ঘ. অন্তরার সংস্কৃতিতে শহুরে সংস্কৃতির বৈশিষ্ট্য ফুটে ওঠেছে; যার পরতে পরতে রয়েছে বিশ্বায়নের ছাপ। বর্তমানে শহর এলাকার জীবনধারা বিশ্বায়নের নানা উপাদান দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছে। এর ফলে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের সাথে যোগাযোগ বৃদ্ধি পেয়ে সমগ্র বিশ্ব বিশ্বগ্রামে পরিণত হচ্ছে।

অন্তরার কর্মকাণ্ডেও এ ধরনের বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায়। অন্তরা নাস্তায় বার্গার, পরোটা, মাংস খেতে পছন্দ করে। এগুলো শহুরে সংস্কৃতির অংশ। তাছাড়া সে কলেজে পড়াশোনা শেষে ইন্টারনেট ব্যবহার করে। এটি বর্তমান সময়ে শহুরে সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। আর অন্তরার এ দুটি কাজে বিশ্বায়নের প্রভাব রয়েছে।

বিশ্বের সাথে মানুষের যোগাযোগ বৃদ্ধির মাধ্যম হিসেবে বর্তমান সময়ে ইন্টারনেট ব্যবহৃত হচ্ছে। এর ফলে মানুষ ঘরে বসেই বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের জীবনাচরণ সম্পর্কে জানতে পারছে, আর শহুরে সমাজেই এ সুযোগ বেশি রয়েছে। শহরের পরিবেশ, পেশা, যান্ত্রিক সুযোগ-সুবিধা প্রভৃতির ওপর ভিত্তি করে শহুরে সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে। আর এ সংস্কৃতিতে বিশ্বায়নের প্রভাব বেশি পরিলক্ষিত হয়, যা অন্তরার জীবনাচরণেও প্রতিভাত হয়ে ওঠে।

নিজে অনুশীলন করো

সৃজনশীল প্রশ্ন ২ : জরিনা বেগম তার মেয়ে রহিমা ও স্বামীকে নিয়ে গ্রামে বাস করে। শহর থেকে জরিনা বেগমের ভাই তার মেয়ে ইরাকে নিয়ে তাঁর বাড়িতে বেড়াতে আসে। রহিমার পছন্দ সকালে পান্তাভাত ও মাছ দিয়ে নাস্তা করা ও ভাটিয়ালি গান শোনা। অন্যদিকে ইমাকে নাস্তায় ভাত-মাছ খেতে দিলেই তার মন খারাপ হয়। কারণ তার পছন্দ বার্গার, পরোটা ও মাংস। কলেজের পড়াশোনা শেষে তার সময় কাটে ইন্টারনেট ব্যবহার করে।

ক. “ওয়ানগালা” অনুষ্ঠান পালন করে কারা?
খ. সংস্কৃতির উপাদান বলতে কি বোঝ?
গ. রহিমার মাধ্যমে বাংলাদেশের কোন সংস্কৃতি ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ইমার সংস্কৃতিতে বিশ্বায়নের প্রভাব লক্ষ করা যায়— মতামত দাও।

সৃজনশীল প্রশ্ন ৩ : দৃশ্যকল্প-১: পিকাসো স্পেনে থাকাকালীন নিজ বাড়িতে কিছু টাকা পাঠান। তার পরিবারের সদস্যরা তার টাকা দিয়ে একটি ঘর নির্মাণ করেন। পিকাসো বাড়িতে এসে নতুন ঘরটি দেখে খুব একটা খুশি হলেন না।
দৃশ্যকল্প-২: এরপর পিকাসো একজন দক্ষ মানুষ দিয়ে ঘর তৈরির নকশা করে নেন।

ক. চন্ডীদাস কোন আমলের একজন দক্ষ কবি ছিলেন?
খ. চিরায়ত বাঙালি সংস্কৃতির বিশেষ বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা কর।
গ. দৃশ্যকল্প-১ এ সংস্কৃতির কোন দিকটির ইঙ্গিত রয়েছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. দৃশ্যকল্প-১ এর মধ্য দিয়ে দৃশ্যকল্প-২ এর পরিচয় পাওয়া যায় বলে মনে কর কি? পাঠ্যপুস্তকের আলোকে মতামত দাও।

সৃজনশীল প্রশ্ন ৪ : তোমরা নিশ্চয়ই পিরামিডের নাম শুনেছ? পাথর কেটে কেটে মিসরের স্থাপত্য শিল্পীরা তৈরি করেছে প্রকাণ্ড এসব সৌধ। তাদের হাতের ছোঁয়া আর স্থাপত্য জ্ঞানের সবটুকুর সমন্বয়ে তৈরি হয়েছে পিরামিড। মিসরীয় রাজা বাদশাদের মৃতদেহকে মমি করে সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে এগুলো নির্মাণ করা হয়। তাদের ধর্মীয় বিশ্বাসও এর পেছনে প্রেরণা ছিল।

ক. সংস্কৃতির ইংরেজি প্রতিশব্দ কী?
খ. বাঙালি সংস্কৃতির প্রধান সুর কী? ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের পিরামিড সংস্কৃতির কোন উপাদানকে নির্দেশ করে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. সংস্কৃতির উক্ত উপাদানের মধ্য দিয়েই অন্য উপাদানটির পরিচয় ফুটে উঠে – উদ্দীপকের আলোকে প্রমাণ কর।

সৃজনশীল প্রশ্ন ৫ : ‘অন্তর মম বিকশিত কারো অন্তরতর হে’ বিষয়টিকে মূল প্রতিপাদ্য ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ বর্ণাঢ্য আয়োজনে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করে। মা ও শিশুর সম্পর্কের দৃঢ়তার প্রতীক হিসেবে টেপা পুতুলের আদলে প্রতীকী শিল্পকর্ম। সমৃদ্ধির প্রতীক হিসেবে রাখা হয়েছে হাতি, বিশাল ময়ুরপঙ্খী নাও। শিক্ষার্থীরা রাত-দিন পরিশ্রম করে রঙের আচড়ে সাদা ক্যানভাসে ফুটিয়ে তুলেছেন হাজার বছর ধরে লালিত বাঙালির বিশ্বাস ও জীবনবোধকে।

ক. সংস্কৃতির মাধ্যমে মানুষের জীবনের কোন দিকটি ফুটে ওঠে?
খ. কীভাবে মানুষের মধ্যে সংস্কৃতির ধারণা জন্ম দিয়েছে?
গ. মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রতীকী শিল্পকর্মগুলো সংস্কৃতির কোন উপাদানকে উপস্থাপন করে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. তুমি কি মনে কর উদ্দীপকে শুধু সংস্কৃতির উক্ত উপাদানই স্থান পেয়েছে? যৌক্তিক মত দাও।

সৃজনশীল প্রশ্ন ৬ : পহেলা অগ্রহায়ণ, বাঙালির চিরায়ত নবান্ন উৎসবকে বরণ করে নিতে নানা ধরনের পিঠাপুলির আয়োজন করা হয়েছে চৌধুরী পরিবারে। চৌধুরী সাহেব একজন শিক্ষিত ও রুচিশীল মানুষ। তাই তিনি নিজ পরিবারের মঙ্গল চিন্তার পাশাপাশি এলাকার গরিব-দুঃখীদের নিয়েও ভাবেন। এ উৎসবে তিনি প্রতিবেশী ও আত্মীয়দের দাওয়াত করে খাওয়ানোর চেষ্টা করেন।

ক. কোনটি ব্যক্তির মধ্যে জ্ঞান অর্জনের স্পৃহা তৈরি করে?
খ. বিয়ে কীভাবে সামাজিক বন্ধন তৈরি করে?
গ. চৌধুরী সাহেবের পরিবারে আয়োজিত উৎসব বাঙালির কোন সংস্কৃতিকে তুলে ধরে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. তুমি কি মনে কর, সংস্কৃতি চৌধুরী সাহেবের আচরণ নিয়ন্ত্রণ করছে? যৌক্তিক মত দাও।

সৃজনশীল প্রশ্ন ৭ : রেশমা জার্মান থাকে। সেখানকার মিয়ার সাথে তার বন্ধুত্ব হয়। গতমাসে মিসুয়া রেশমার সাথে বাংলাদেশে তাদের বাড়িতে বেড়াতে আসে। সে দেখল, রেশমাদের বাড়ির পুরুষরা পায়জামা, পাঞ্জাবি, লুঙ্গি পরে, আর মেয়েরা শাড়ি, ব্লাউজ পরে। মিসুয়াকে আপ্যায়নের জন্য পুকুর থেকে মাছ, পোষা মুরগি আর ক্ষেতের সবজি রান্না করে। মিসুয়া লক্ষ করল, রেশমার পরিবারের মধ্যে আদর্শ, মূল্যবোধ ও নৈতিকতা অত্যন্ত প্রখর।

ক. শিল্পকলা ও সাহিত্য সংস্কৃতির কোন ধরনের উপাদান?
খ. সংস্কৃতি কী? ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে বাংলাদেশের সংস্কৃতির কোন দিকটি ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ‘উক্ত দিকটি কোনোভাবেই পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন নয়’ তুমি কি এ বক্তব্যের সাথে একমত? তোমার উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও।

ANSWER SHEET

উপরে ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করে এই প্রশ্নের উত্তরগুলো ডাউনলোড করে নাও।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *