রসুলের দেশে গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর (PDF)
রসুলের দেশে গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর : লেখক একবার আরব ভ্রমণে গিয়ে জেদ্দায় অবতরণ করেন। সেমিটিক জাতিসমূহের আবাস ভূমি আরব দেশ। এদের একটি শাখা ব্যাবিলনে গিয়ে উপনিবেশ স্থাপন করে। খ্রিষ্টীয় ৬ষ্ঠ শতাব্দীতে আরব যখন অজ্ঞতার অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল তখন তাদের আলোর পথ দেখান মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স.)। একসময় আবারও মুসলমানদের অবনতি শুরু হয়।
এ সময় আবির্ভাব হয় মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল ওহ্হাবের। আযাইনার আমির তাঁকে আপদ ভেবে রাজ্য থেকে তাড়িয়ে দেন। তিনি আশ্রয় পান দারিয়ার আমির ইবনে সউদের কাছে। মুহম্মদ ইবনে আব্দুল ওহ্হাবের আহ্বানে দলে দলে বেদুইন এসে তাঁর সংস্কারপন্থী মত গ্রহণ করতে লাগল। তাঁদের সাহায্যে ইবনে সউদ তাঁর সাম্রাজ্য সুপ্রতিষ্ঠিত করলেন। তাঁর মৃত্যুর পর পুত্র আব্দুল আজিজ আরবের একছত্র অধিপতি হন।
রসুলের দেশে গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
সৃজনশীল প্রশ্ন ১ : বাংলার মুসলমান যখন অজ্ঞতা আর কুসংস্কারে হাবু-ডুবু খাচ্ছিল তখন আবির্ভাব ঘটে হাজী শরীয়ত উল্লাহর। তিনি জীবন থেকে সকল কুসংস্কার ঝেড়ে ফেলে ধর্মের প্রকৃত আলোয় আলোকিত হবার আহ্বান জানান। তিনি মানুষের প্রকৃত অধিকার সম্পর্কেও সচেতন করার চেষ্টা করেন। ব্রিটিশ উপনিবেশিক শক্তি ও এদেশীয় জমিদারদের শোষণমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধেও তিনি এ দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ করায় ভূমিকা রাখেন।
ক. কোন শতাব্দীতে আরবের বুকে “অজ্ঞতার ভয়াবহ অন্ধকার” বিরাজ করছিল?
খ. আযাইনার আমির কেন আব্দুল ওহ্হাবকে আপদ মনে করলেন?
গ. উদ্দীপকের হাজী শরীয়ত উল্লাহর ‘সংস্কারমূলক’ কাজের সঙ্গে ‘রসুলের দেশে’ ভ্রমণকাহিনীর কার কাজের তুলনা করা যায়? বর্ণনা করো।
ঘ. উদ্দীপকের হাজী শরীয়ত উল্লাহর ‘চেতনার’ সাথে ‘রসুলের দেশে’ গল্পের আব্দুল আজিজের কর্মকাণ্ডের সঙ্গতিপূর্ণ দিক্টি বিশ্লেষণ করো।
প্রশ্নের উত্তর
ক. খ্রিষ্টীয় ৬ষ্ঠ শতাব্দীতে আরবের বুকে অজ্ঞতার ভয়াবহ অন্ধকার বিরাজ করছিল
খ. আযাইনার আমির ইসলাম ধর্মের পুনজীবন সৃষ্টিতে আব্দুল ওহ্হাবকে সচেষ্ট হতে দেখে তাকে আপদ মনে করলেন। ধর্মসংস্কারক আব্দুল ওহ্হাব ১৮৫০ সালে জন্মভূমি আরবে ফিরে ইসলাম ধর্মের পুনর্জাগরণের চেষ্টা চালান। দলে দলে লোক তাঁর কথা মেনে ইসলামের সঠিক পথে ফিরে আসেন। এ কারণেই কায়েমি স্বার্থবাদী মানুষ আযাইনার আমির আব্দুল ওহ্হাবকে আপদ মনে করে তাড়িয়ে দিলেন।
গ. উদ্দীপকের হাজী শরীয়ত উল্লাহর ‘সংস্কারমূলক’ কাজের সঙ্গে ‘রসুলের দেশে’ ভ্রমণকাহিনীর আব্দুল ওহ্হাবের কাজের তুলনা করা যায়। যুগে যুগে ধর্মসংস্কারকের আবির্ভাবে ইসলাম ধর্মের পুনর্জাগরণ ঘটেছে। মুসলিম সমাজ কুসংস্কার মুক্ত হয়ে সঠিক ইসলামের আলোকে স্নাত হয়ে জেগে উঠেছে।
উদ্দীপকের হাজী শরীয়ত উল্লাহ্র সংস্কারের সুবাদে বাংলার মুসলমানরা সঠিকভাবে ধর্ম-কর্ম সম্পাদন করতে সচেষ্ট হন। তৎকালে মুসলমান সমাজ অসততায় অন্ধকারে ডুবে যাওয়ার অবস্থায় উপনীত হয়। তা থেকে মুক্তি দিতে মুসলমানদের তিনি নতুনভাবে অনুপ্রাণিত করেন। আরবদেশে মুসলমানরা অজ্ঞতার অন্ধকারে নিমজ্জিত হলে সেখানে ইসলামের পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ধর্মসংস্কারক হিসেবে আব্দুল ওহ্হাবের আগমন ঘটে।
এ ধরনের কর্মকাণ্ডের দিক থেকে উদ্দীপকের হাজী শরীয়ত উল্লাহ্র ভূমিকা ও ‘রসুলের দেশে’ ভ্রমণকাহিনীর আব্দুল ওহ্হাবের কাজ অভিন্ন এবং সাদৃশ্যপূর্ণ বলা যায়।
ঘ. মুসলমান সমাজকে কুসংস্কারমুক্ত করায় ভূমিকা রাখার ক্ষেত্রে উদ্দীপকের হাজী শরীয়ত উল্লাহ এবং গল্পের আব্দুল আজিজ একই চেতনার ধারক।
‘রসুলের দেশে’ গল্পের আব্দুল আজিজ বিভিন্ন রকম কুসংস্কার থেকে সমাজের মানুষের মনকে মুক্ত করেন। মাজার ও বেদাতি কর্মকাণ্ড ধ্বংস করে ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা মুসলমান সমাজে চালু করেন। তিনি আরব দেশের একচ্ছত্র অধিপতি হন।
ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শক্তি ও দেশীয় জমিদারদের শোষণমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে উদ্দীপকের হাজী শরীয়ত উল্লাহ এদেশের মানুষকে ‘রসুলের দেশে’ গল্পের আব্দুল আজিজ বিভিন্ন কুসংস্কার থেকে মানুষের মনকে মুক্ত করার চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে সংগ্রামে লিপ্ত হন।
উদ্দীপকের হাজী শরীয়ত উল্লাহ্ কুসংস্কার ভুলে মানুষকে প্রকৃত ধর্মের শিক্ষায় উজ্জীবিত করেন। ‘রসুলের দেশে’ গল্পের আব্দুল আজিজও মানুষের মন থেকে কুসংস্কার দূর করে ইসলামের প্রকৃত শিক্ষার স্বরূপ তুলে ধরেন। আব্দুল আজিজের মুসলমান সমাজকে কুসংস্কারমুক্ত করার দিকটির সাথের উদ্দীপকের হাজী শরীয়ত উল্লাহর কর্মকাণ্ডের মিল রয়েছে।
নিজে অনুশীলন করো
সৃজনশীল প্রশ্ন ২ : সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হযরত মুহাম্মদ (স) সভ্যতার আলো দিয়ে মানবমুক্তির পথ দেখান এবং আল্লাহর একত্ববাদ প্রচার করেন। আরব ভূমি যখন ভয়াবহ অন্ধকার ও অজ্ঞতার কবলে নিপতিত, ঠিক সেই সময়েই হযরত মুহাম্মদ (স) এর আবির্ভাব।
ক. সৌদি আরবের শ্রেষ্ঠ সম্পদ কী?
খ. মহানবি (স) কে কেন ‘মরুসূর্য’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়?
গ. “উদ্দীপক ও ‘রসুলের দেশে’ রচনাটি এক ও অভিন্ন” ব্যাখ্যা করো।
ঘ. মহামানব হযরত মুহাম্মদ (স) কে অনুসরণ করে আদর্শে পরিণত হয়েছিলেন আব্দুল আজিজ— উক্তিটি মূল্যায়ন করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৩ : শৈশব থেকেই মান্নান সাহেবের মক্কা ও মদিনা শহর সম্বন্ধে ব্যাপক কৌতূহল। একদিন তিনি হজ পালনের উদ্দেশ্যে জেদ্দা হয়ে মক্কা রওনা হলেন। মক্কায় পৌছে তিনি নিজেকে ধন্য মনে করলেন, রাসুলের জন্মস্থানে দাঁড়িয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়লেন। তিনি ভাবলেন, সারাজীবন কত মানুষ এখানে আসার জন্য ইচ্ছা পোষণ করেও আসতে পারে না।
ক. ‘রণভেরী’ শব্দের অর্থ কী?
খ. শাহজাদা আব্দুল আজিজ কীভাবে নিজেকে রিয়াদের আমির ঘোষণা করেন?
গ. তুমি কি মনে করো প্রত্যেক মুসলিমের মক্কা ও মদিনা শহর সম্পর্কে কৌতূহল থাকা উচিত? মতামত প্রদান করো।
ঘ. “উদ্দীপকের মান্নান সাহেব এবং ‘রসুলের দেশে’ রচনার লেখক ইবরাহীম খাঁ দুজনেরই জীবন ধন্য হয়েছে” – মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৪ : গোপাল পাল বংশের প্রতিষ্ঠাতা। এ বংশ নানা উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে প্রায় চারশ বছর বাংলা শাসন করে। খ্রিষ্টীয় সাত শতকের মধ্যভাগ থেকে স্থিতিশীল সরকারের অবর্তমানে প্রায় একশ বছর ধরে বাংলায় অরাজকতা বিরাজমান ছিল। অভ্যন্তরীণ হানাহানি এবং বহির্দেশীয় আক্রমণ দ্বারা গোটা দেশ ছিন্নভিন্ন হয়ে পড়েছিল। গোপালের আবির্ভাবের আগে বাংলার যে অবস্থা বিদ্যমান ছিল তা ধর্মপালের খালিমপুর তাম্রশাসনে ‘মাৎস্যন্যায়’ বলে উল্লিখিত হয়েছে। এ অরাজক অবস্থা থেকে উদ্ভূত হয়েই গোপাল এর অবসান ঘটিয়েছিলেন।
ক. আরবদেশ কাদের লালনভূমি?
খ. কীভাবে আরবে সউদি শক্তি শিকড় গেড়ে বসেছিল?
গ. উদ্দীপকের গোপালের সঙ্গে ‘রসুলের দেশে’ রচনার শাহজাদা আবদুল আজিজের সাদৃশ্য দেখাও।
ঘ. “উদ্দীপকটি ‘রসুলের দেশে’ রচনার সমগ্রভাবকে প্রকাশ করেনি”– মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৫ : অন্যায় যে করে অন্যায় যে সহে তব ঘৃণা তারে যেন তৃণসম দহে— এ পঙ্ক্তিগুলো সকলের জানা থাকলেও কতজনই বা অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে জানে? যুগে যুগে অনেক আন্দোলন হয়েছে, যেখানে অনেক মানুষের জীবন দিতে হয়েছে কিন্তু মানুষের অধঃপতন থেকে মুক্তির জন্য অন্যায় ও শোষণের বিরুদ্ধে যারা সংগ্রাম করেছে তারাই সফলতা পেয়েছে।
ক. আব্দুল আজিজকে কে হত্যা করে?
খ. কীভাবে অচিরেই সৌদি আরব ধনী দেশে পরিণত হবে বলে লেখক উল্লেখ করেছেন?
গ. উদ্দীপকের সাথে ‘রসুলের দেশে’ গল্পের বৈসাদৃশ্য দেখাও।
ঘ. “মানুষের অধঃপতন থেকে মুক্তির জন্য অন্যায় ও শোষণের বিরুদ্ধে যারা সংগ্রাম করেছে তারাই সফলতা পেয়েছে।”
ঘ. উদ্দীপক ও রসুলের দেশে’ গল্পের আলোকে উক্তিটিরবযথার্থতা বিচার করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৬ : ছোটবেলা থেকেই হরিদাশের কাশী সম্পর্কে রয়েছে অপার কৌতূহল। কাশী নিয়ে নিজের মনে সে অজস্র স্বপ্ন এঁকেছে। একদিন সে সত্যিই কাশী গিয়ে উপস্থিত হলো এবং সেখানে গিয়ে নিজেকে তার ধন্য মনে হলো। সে আবেগ আপ্লুত হয়ে উঠল। এমন পবিত্র জায়গায় যেতে পেরে সে তার জীবনের বড় পাওয়া মনে করল। হরিদাশ ভাবতে লাগল, কত মানুষ সারাজীবন এখানে আসার বাসনা মনে পুষেও আসতে পারে না।
ক. জেদ্দা হতে মদিনা যেতে হাওয়াই জাহাজে কতক্ষণ সময় লাগে।
খ. জেদ্দায় গিয়ে লেখকের মনের যে অবস্থা হয়েছিল তা ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকের হরিদাশের সঙ্গে ‘রসুলের দেশে’ ভ্রমণ কাহিনির লেখকের সাদৃশ্য নিরূপণ করো।
ঘ. প্রত্যেকের কাছে নিজ ধর্মের ঐতিহাসিক স্থানগুলো অত্যন্ত পবিত্র— মন্তব্যটি উদ্দীপক এবং ‘রসুলের দেশে’ ভ্রমণ কাহিনি অবলম্বনে বিশ্লেষণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৭ : হযরত মুহাম্মদ (স) সভ্যতার আলো দিয়ে মানবমুক্তির পথ দেখান এবং আল্লাহর একত্ববাদ প্রচার করেন।আরবভূমি যখন ভয়াবহ অন্ধকার অজ্ঞতার কবলে নিপতিত ঠিক সে সময়েই হযরত মুহাম্মদ (স) এর আবির্ভাব।
ক. সৌদি আরবের শ্রেষ্ঠ সম্পদ কী?
খ. কাকে এবং কেন ‘মরুসূর্য ‘উপাধিতে ভূষিত করা হয়?
গ. উদ্দীপক ও ‘রসুলের দেশে ‘- রচনাটি এক ও অভিন্ন” – উক্তিটি ব্যাখ্যা করো।
ঘ. মহামানব হযরত মুহাম্মদ (স) কে অনুসরণ করে আদর্শে পরিণত হয়েছিলেন আব্দুল আজিজ’- মূল্যায়ন করো।
উপরে ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করে এই প্রশ্নের উত্তরগুলো ডাউনলোড করে নাও।