কাঠের পা গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর (PDF)
কাঠের পা গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর : ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে এ দেশের মানুষ জয়ী হয়। এই যুদ্ধে শহিদ হন লক্ষ লক্ষ মানুষ এবং যুদ্ধাহত হন অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা। আলোচ্য গল্পের নায়ক একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। যুদ্ধের শেষ দিকে একটি অপারেশনের আগে রেকি করতে গেলে মাইন বিস্ফোরণে তাঁর দুই পা হাঁটুর নিচে থেকে উড়ে যায় ।
চিকিৎসার পর সুস্থ হলে তাঁকে দুটো নকল পা লাগিয়ে দেওয়া হয়। ষোলো বছর বয়সি ছেলে পঙ্গু বাবাকে ছেড়ে চলে যাবে কি না, এ প্রশ্নে ছেলেটি বলে— বাবা তুমি তো আমাদের মতো ছেলেদের পা ঠিক রাখতে মুক্তিযুদ্ধে নিজের পা হারিয়েছিলে। তুমি তোমার পা অক্ষত রাখতে চাইলে আমাদের মতো ছেলেরা তাদের পা হারাত। আমি তোমাকে ছেড়ে কোনোদিন কোথাও যাব না।
কাঠের পা গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
সৃজনশীল প্রশ্ন ১ : কাজলের দাদা রহমান সাহেব হুইল চেয়ারে বসেই চলাফেরা করেন। দাদি কাজলকে বলেছিলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী দাদাকে এমনভাবে মেরেছিল যে তিনি পঙ্গু হয়ে যান। দাদা তখন ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। কাজল দাদার কাছে জানতে চায়, “এ অবস্থার জন্য তোমার মনে কোনো প্রতিক্রিয়া হয় না?” দাদা বলেন, “আমার মতো এ রকম হাজারো পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধার পায়ের ওপর ভর করেই তো দাঁড়িয়ে আছে স্বাধীন বাংলাদেশ।”
ক. খালের ওপারে ক্যাম্প বসিয়েছিল কারা?
খ. নয়নের বাবাকে কাঠের পা বানিয়ে দেয়া হয়েছিল কেন?
গ. কাজলের দাদার জীবনে ‘কাঠের পা’ গল্পের প্রতিফলিত দিকটি ব্যাখ্যা করো।
ঘ. কাজলের দাদার উক্তিটি ‘কাঠের পা’ গল্পের আলোকে বিশ্লেষণ করো।
প্রশ্নের উত্তর
ক. খালের ওপারে ক্যাম্প বসিয়েছিল পাকিস্তানি মিলিটারিরা।
খ. মাইন বিস্ফোরণে নয়নের বাবার পা দুটি উড়ে যাওয়ায় তাঁকে কাঠের পা বানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ‘কাঠের পা’ গল্পে বর্ণিত নয়নের বাবা ছিলেন একজন মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধের প্রায় শেষদিকে একটি অপারেশনের আগে রেকি করতে গেলে মাইন বিস্ফোরণে তাঁর দুটি পা হাঁটুর নিচ থেকে উড়ে যায়। তাই তাঁকে কাঠের দুটো নকল পা লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
গ. ‘কাঠের পা’ গল্পে মুক্তিযুদ্ধে নয়নের বাবার পা হারানোর বিষয়টি প্রতিফলিত হয়েছে। ‘কাঠের পা’ গল্পের নয়নের বাবা যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধের সময় মাইন বিস্ফোরণে নিজের দুটি পা হারান তিনি। পরে তাঁকে কাঠের দুটো নকল পা লাগিয়ে দেওয়া হয়। উদ্দীপকের কাজলের দাদাকেও এমনই বেদনাময় অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়।
পাকিস্তানিবাহিনীর নিষ্ঠুর নির্যাতনের শিকার হয়ে তাঁকে পঙ্গুত্ব বরণ করে নিতে হয়। গল্পের নয়নের বাবা এবং উদ্দীপকের কাজলের দাদা দুজনই মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে আহত হন এবং পঙ্গুত্ব বরণ করেন। কাজলের দাদার জীবনে ‘কাঠের পা’ গল্পের নয়নের দাদার পা হারানোর দিকটিই প্রতিফলিত হয়েছে।
ঘ. ‘কাঠের পা’ গল্পে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য মুক্তিযোদ্ধাদের অবদানের কথা তুলে ধরা হয়েছে। ‘কাঠের পা’ গল্পের মূল চরিত্র নয়নের বাবা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। যুদ্ধের প্রায় শেষদিকে একটি অপারেশনের পূর্বে রেকি করতে গিয়ে মাইন বিস্ফোরণে দুটো পা হারিয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করেন তিনি। দীর্ঘদিনের চিকিৎসায় ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠার পর তাঁকে দুটো কাঠের পা লাগিয়ে দেওয়া হয়।
উদ্দীপকের কাজলের দাদা পাকিস্তানি বাহিনীর অত্যাচারের কারণে পঙ্গুত্বের শিকার একজন মুক্তিযোদ্ধা। তবে এ নিয়ে তাঁর মনে দুঃখের চেয়ে গর্বের অনুভূতিই বেশি। ‘কাঠের পা’ গল্পে বর্ণিত নয়নের বাবাও তেমনই একজন মহান আত্মত্যাগী মুক্তিযোদ্ধা মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশ লক্ষ বাঙালি শহিদ হয়েছেন এবং হাজার হাজার যোদ্ধা পঙ্গুত্ব বরণ করে অসহায় জীবনযাপন করছেন। আমরা বাংলাদেশিরা তাঁদের জন্য গর্ববোধ করি। তাঁদেরই পঙ্গু পায়ে ভর করে স্বাধীন হয়ে দাঁড়িয়ে আছে আজকের বাংলাদেশ। উদ্দীপকের কাজলের দাদার কথাটিও একই অনুভূতির পরিচায়ক।
নিজে অনুশীলন করো
সৃজনশীল প্রশ্ন ২ : জুলি ছোটকাল থেকে দেখে আসছে তার দাদা রাকিব সাহেব হুইল চেয়ারে বসে চলাফেরা করেন। কৌতূহলবশত একদিন জুলি এর কারণ জিজ্ঞেস করল। তখন রাকিব সাহেব জুলিকে মুক্তিযুদ্ধের সময়কারব কথা, তার যুদ্ধে যাওয়ার কথা ও বোমার আঘাতে শরীরের নিচের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কথা সব বুঝিয়ে বললেন। জুলি বুঝল মুক্তিযোদ্ধারা দেশকে স্বাধীন করার জন্য নিজেদের জীবন বিপন্ন করেছেন। আর আমরা পেয়েছি স্বাধীন বাংলাদেশ।
ক. কার নেতৃত্বে নয় নম্বর সেক্টরে বিশাল মুক্তিবাহিনীর দল গড়ে ওঠে?
খ. ‘কাঠের পা’ গল্পে নয়নের বাবাকে কাঠের পা বানিয়ে দেওয়া হয়েছিল কেন?
গ. ‘কাঠের পা’ গল্পের কোন বিষয়টি জুলির দাদার জীবনের সাথে মিলে যায়, তা ব্যাখ্যা করো।
ঘ. মুক্তিযোদ্ধারা দেশকে স্বাধীন করার জন্য নিজেদের জীবন বিপন্ন করেছেন, আর আমরা পেয়েছি স্বাধীন বাংলাদেশ— ‘কাঠের পা’ গল্পের আলোকে মন্তব্যটি ব্যাখ্যা করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৩ : বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ অর্জন ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ। আর এই মহান যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন আঃ সালাম, বীরের আসনে আসীন হয়ে নিজে চিরদিনের জন্য শ্রদ্ধার পাত্র হওয়ায় গর্ববোধ করেন।
ক. খেলার মাঠকে কী বলে মনে হয়?
খ. ছেলে বাবার কথা শুনে স্তম্ভিত হয় কেন?
গ. উদ্দীপকের আঃ সালামের সাথে নয়নের বাবার কি কি বৈসাদৃশ্য রয়েছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকের বীর মুক্তিযোদ্ধা আঃ সালাম কি নয়নের বাবার প্রতিচ্ছবি? উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৪ : রহমত মিয়া একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধে সবকিছু হারিয়ে আজ তিনি নিঃস্ব। ছোট এক চায়ের দোকান পরিচালনা করেন। তিনি তাঁর বীরত্বগাথা সবাইকে জানান এবং ভয়াবহ দিনগুলোর কথা বলতে গিয়ে বিচলিত হয়ে পড়েন। আবার মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তিনি গর্ববোধ করেন। কারণ তিনি মনে করেন, মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগের ফসলই স্বাধীনতা।
ক. নয়নের বন্ধুর নাম কী?
খ. বাবাকে হঠাৎ করেই নয়নের অচেনা মনে হয় কেন?
গ. উদ্দীপকের রহমত মিয়ার জীবনের সাথে নয়নের বাবার জীবনের যে সাদৃশ্য পাওয়া তা ব্যাখ্যা করো।
ঘ. “তিনি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে নিজেকে গণ্য করতে অত্যন্ত গর্ববোধ করেন”— “কাঠের পা” গল্পের আলোকে বিশ্লেষণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৫ : শফিকের বাম পায়ে টিউমার হয়েছিল। টিউমারে ক্যানসারের জীবাণু থাকায় তার বাম পায়ের হাঁটু পর্যন্ত কেটে ফেলা হয়েছে। কিন্তু শফিক সাহস হারায়নি। কৃত্রিম পা সংযোজন করে সে হাঁটার অভ্যাস করছে। যদিও কষ্ট হচ্ছে, তবুও সে তার সামনে চলার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
ক. মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশকে কয়টি সেক্টরে ভাগ করা হয়েছিল?
খ. নয়নের বাবাকে কাঠের পা বানিয়ে দেয়া হয়েছিল কেন? ব্যাখ্যা করো।
গ. শফিকের জীবনে ‘কাঠের পা’ গল্পের প্রতিফলিত দিকটি ব্যাখ্যা করো।
ঘ. ‘প্রেক্ষাপট ভিন্ন হলেও উদ্দীপকের শফিক এবং নয়নের বাবা দু’জনেই শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে অতিক্রম করে সামনে চিলার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। বিশ্লেষণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৬ : বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ অর্জন ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ। আর এই মহান যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করে মকসুদ আলি বীরের আসনে আসীন করে নিজে চিরদিনের জন্য শ্রদ্ধার পাত্র হওয়ার গর্ববোধ করেন।
ক. ‘কাঠের পা’- গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র কোনটি?
খ. মুক্তিযোদ্ধারা কেন জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান?
গ. উদ্দীপকের মকসুদ আলির সঙ্গে নয়নের বাবার কী কী বৈসাদৃশ্য রয়েছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকের বীর মুক্তিযোদ্ধা মকসুদ আলি কি নয়নের বাবার প্রতিফলন? আলোচনা কর।
উপরে ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করে এই প্রশ্নের উত্তরগুলো ডাউনলোড করে নাও।