মানব জাতি কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর (PDF)
মানব জাতি কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর : দেশে দেশে, ধর্মে ও বর্ণের যে ভেদাভেদ সৃষ্টি করা হয়েছে, কবি মানুষকে তার চেয়ে ওপরে আসন দিয়েছেন। আমাদের এই পৃথিবী জাতি ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষেরই বাসভূমি। শীতলতা ও উষ্ণতা, ক্ষুধা ও তৃষ্ণার অনুভূতি সব মানুষেরই সমান।
বাইরের চেহারায় মানুষের মধ্যে সাদা কালোর ব্যবধান থাকলেও সব মানুষের ভেতরের রং অভিন্ন। মানুষ আজ জাতিভেদ, গোত্রভেদ, বর্ণভেদ ও বংশ কৌলীন্য ইত্যাদি কৃত্রিম পরিচয়ে নিজেদের পরিচয়কে সংকীর্ণ করেছে। সারা পৃথিবীতে সকল পরিচয়ের ঊর্ধ্বে যে মানবসমাজ, কবি মানুষের সেই পরিচয়কেই তুলে ধরেছেন।
মানব জাতি কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
সৃজনশীল প্রশ্ন ১ : রহিম, শ্যামল ও রোজারিও তিন বন্ধু। ঈদ, পূজা ও বড়দিনে তারা একে অন্যের বাড়ি বেড়াতে যায়। আনন্দে-উৎসবে, সুখে-দুঃখে একে অন্যকে সাহায্য-সহযোগিতা করে। এরূপ আচরণে তাদের বাবা-মা খুব খুশি। রহিমের বাবা বলেন, ‘তোমরা অতি অসাধারণ। তোমাদের মতো সবাই বন্ধু-সুলভ হলে এ পৃথিবী আরো সুন্দর বাসস্থান হবে।’
ক. ‘মানুষ জাতি’ কোন কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে?
খ. ‘দুনিয়া সবারি জনম বেদি’— একথা দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে?
গ. রহিম, শ্যামল ও রোজারিওর বন্ধুত্বে ‘মানুষ জাতি’ কবিতার কোন বক্তব্যটি ফুটে উঠেছে— ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকের রহিমের বাবার মন্তব্যই যেন ‘মানুষ জাতি’ কবিতার মূল সুর— উক্তিটি বিশ্লেষণ করো।
প্রশ্নের উত্তর
ক. ‘মানুষ জাতি’ কবিতাটি ‘অভ্র আবীর’ কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে।
খ. ‘দুনিয়া সবারি জনম-বেদি’— একথা দ্বারা বোঝানো হয়েছে, এই পৃথিবী সকলেরই জন্মস্থান।
দেশে দেশে ধর্ম ও বর্ণের পার্থক্য সৃষ্টি করে মানুষে মানুষে কৃত্রিম ভেদাভেদ তৈরি করলেও সকল মানুষ এই পৃথিবীতেই জন্মেছে। বাইরের ভেদাভেদ মানুষকে আলাদা করলেও পৃথিবীতে সকল মানুষ এক ও অভিন্ন। প্রশ্নোক্ত কথাটি দ্বারা এটাই বোঝানো হয়েছে।
গ. রহিম, শ্যামল ও রোজারিওর বন্ধুত্বে ‘মানুষ জাতি’ কবিতার জাতিভেদ ভুলে সকল মানুষকে সমান দৃষ্টিতে দেখার বিষয়টি ফুটে উঠেছে উঠেছে।
পৃথিবীতে জাতি, ধর্ম, বর্ণের ভেদ কৃত্রিম। আলোচ্য কবিতায় দেশে দেশে, ধর্মে ও বর্ণে যে পার্থক্য সৃষ্টি হয়েছে কবি তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে মানুষকেই সবার উপরে স্থান দিয়েছেন।
উদ্দীপকের তিন বন্ধু রহিম, শ্যামল ও রোজারিও তিন ধর্মের অনুসারী। তবুও তারা একে অপরের সহযোগী। ধর্মীয় ভেদাভেদ ভুলে তারা একে অন্যকে আপন করে নিয়েছে। ‘মানুষ জাতি’ কবিতায়ও ঐক্যের কথাই বলা হয়েছে, যদিও কিছু মানুষ আত্মস্বার্থে নিমজ্জিত। তারা নিজ স্বার্থে বিভেদের দেয়াল তৈরি করে রেখেছে। কিন্তু মানুষের মহানুভবতা তার মনুষ্যত্বে, উদ্দীপকটিতে যার দেখা মেলে। এক্ষেত্রে উদ্দীপকের তিন বন্ধুর বন্ধুত্বে ‘মানুষ জাতি’ কবিতার মানুষের জাতিভেদহীন ঐক্যের
দিকটি প্রকাশিত হয়েছে।
ঘ. ‘উদ্দীপকের রহিমের বাবার মন্তব্যই যেন ‘মানুষ জাতি’ কবিতার মূলসুর’— উক্তিটি যুক্তিসংগত।
‘মানুষ জাতি’ কবিতায় ধর্ম-বর্ণের ঊর্ধ্বে মানুষের বড় পরিচয় সে মানুষ— এ বিষয়টিই উঠে এসেছে।ধর্মবৈষম্য মানুষের মাঝে কৃত্রিম ভেদাভেদ সৃষ্টি করলেও জন্মসূত্রে মানুষ একই পরিচয়ে পরিচিত।
উদ্দীপকে রহিমের বাবার মন্তব্যে মানুষকে মানুষ হিসেবে বিবেচনার বিষয়টি লক্ষ করা যায়। তিনি মনে করেন ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় থাকলে পৃথিবী হবে শান্তির নীড় । তিনি মানুষকে অনেক ওপরে স্থান দিয়েছেন।
আলোচ্য উদ্দীপকে বন্ধুদের সম্পর্ককে ধর্মীয় পরিচয়ের ঊর্ধ্বে দেখানো হয়েছে। গোটা দুনিয়ায় মানুষের সাথে মানুষের যে সম্পর্ক সে বিচারে মানুষের আসল পরিচয় ধর্মে-বর্ণে নয়, বরং মানুষ হিসেবে। পৃথিবীর সব মানুষকে নিয়েই গড়ে উঠেছে মানুষ জাতি। মানবিকতার এ দিকটি উদ্দীপক এবং ‘মানুষ জাতি’ কবিতার মূলসুর হিসেবে উঠে এসেছে। এদিক থেকে উদ্দীপকের রহিমের বাবার বক্তব্য যেন ‘মানুষ জাতি’ কবিতার মূলবক্তব্য।
নিজে অনুশীলন করো
সৃজনশীল প্রশ্ন ২ : ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র রহমান বড়দিনের উৎসবে তার বন্ধু ফিলিপের বাসায় যায়। সেখানে সে দেখে, তার আরও দুই বন্ধু চক্রবর্তী ও গোমেজ এসেছে। ফিলিপের বাবা তাদের অপূর্ব বন্ধুত্ব দেখে খুবই খুশি হন। বলেন, ‘তোমরা খুবই ভালো ছেলে। তোমরা মানুষের মতো মানুষ হও। একে অন্যের সহযোগিতায় এগিয়ে আসো, এ পৃথিবীকে আরও সুন্দর করে গড়ে তোলো।’
ক. জগৎ জুড়ে যে জাতি বাস করে তার নাম কী?
খ. ‘এক পৃথিবীর স্তন্যে লালিত’— একথা দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে?
গ. রহমান, গোমেজ, ফিলিপ ও চক্রবর্তীর বন্ধুত্বে ‘মানুষ জাতি’ কবিতার কোন দিকটি ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. “উদ্দীপকের ফিলিপের বাবার বক্তব্যই যেন ‘মানুষ জাতি’ কবিতার মূলসুর” বিশ্লেষণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৩ : বশির ঢাকার একটি হাসপাতালে বেশ কিছুদিন ভর্তি ছিল। কালো কুচকুচে এক আফ্রিকান সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালে এলে বশির দেখে তার শরীর থেকে লাল রক্ত ঝরছে, যা কিনা তার রক্তের অনুরূপ। তার মা বলেন, “চেহারা, গায়ের রং, বর্ণ কোনো ব্যাপার নয়; সব মানুষের রক্তই লাল। ‘মানুষ অভিন্ন জাতি’ কথাটা মনে রেখো বাবা।”
ক. ‘মানুষ জাতি’ কবিতার রচয়িতা কে?
খ. ‘ভিতরে সবারই সমান রাঙা’– একথা দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে?
গ. উদ্দীপকের বশিরের অনুভূতি ‘মানুষ জাতি’ কবিতার কোন দিকটির ইঙ্গিত বহন করে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. ‘মানুষ অভিন্ন জাতি’— উদ্দীপকের এ বক্তব্যটি তোমার পঠিত ‘মানুষ জাতি’ কবিতার আলোকে বিশ্লেষণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৪ : শোভনদের বাড়িতে একজন মহিলা প্রতিদিন কাজ করতে আসে। বাড়ির সবাই তাকে নীচু বর্ণের বলে অবজ্ঞা করে। এমনকি তাকে ভালো থালায় খাবার পর্যন্ত দেয় না। এ বিষয়টি শোভনকে খুব কষ্ট দেয়। সে মনে মনে ভাবে, সেও তো আমাদের মতো মানুষ। তবে তার সঙ্গে কেন এরকম আচরণ করা হয়?
ক. পৃথিবীর সব মানুষকে নিয়ে কী গড়ে উঠেছে?
খ. কবি কেন পৃথিবীকে সবার জন্মক্ষেত্র বলেছেন?
গ. উদ্দীপকে ‘মানুষ জাতি’ কবিতার কোন বিষয়টি খুঁজে পাওয়া যায়? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. “শোভনের মানসিক কষ্টের মধ্যে ‘মানুষ জাতি’ কবিতার মূলবক্তব্য খুঁজে পাওয়া যায়” – বিশ্লেষণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৫ : বর্তমান সময়ে মিয়ানমারে বসবাসরত রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের সেনাবাহিনী
দ্বারা নির্যাতিত ও নিষ্পেষিত হচ্ছে। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী শত শত রোহিঙ্গাকে হত্যা করছে। অনেক রোহিঙ্গা মিয়ানমার ভূখণ্ড ছেড়ে প্রাণ ভয়ে অন্যত্র পালিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এমনকি জাতিসংঘ পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সোচ্চার হয়েছে।
ক. ‘জনম-বেদি’ শব্দের অর্থ কী?
খ. ‘সবাই আমরা সমান বুঝি’ এখানে কী বোঝানোর কথা বলা হয়েছে?
গ. উদ্দীপকে ‘মানুষ জাতি’ কবিতার কোন বিশেষ দিকটি ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা
করো।
ঘ. উদ্দীপকটি ‘মানুষ জাতি’ কবিতার মূলভাবকে আংশিক ধারণ করেছে তোমার মতামত ব্যক্ত করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৬ : অরুণ আর সোহেল দুজন অন্তরঙ্গ বন্ধু। আনন্দে, দুঃখে একে অন্যের পাশে থাকে। অরুণ সোহেলের মাকে আম্মা বলে এবং সোহেল ও অরুণের মাকে মা বলে। এমনই নিবিড় সম্পর্ক ওদের। পূজা ও ইদে দুজনে একই সাথে আনন্দ করে। অরুণের মা ওদের বলেন, জাতভেদ যেন তোদের বন্ধুত্বকে নষ্ট না করতে পারে আমি এ প্রার্থনাই করি।
ক. ‘দোসর’ শব্দটির অর্থ কী?
খ. ‘একই রবি শশী মোদের সাথী’ কবির এ বক্তব্যের কারণ ব্যাখ্যা করো।
গ. ‘মানুষ জাতি’ কবিতার কোন দিকটি উদ্দীপকের অরুণের মায়ের কথায় ফুটে উঠেছে?
ঘ. ‘উদ্দীপক এবং ‘মানুষ জাতি’ কবিতার মূলসূর এক— মন্তব্যটি মূল্যায়ন করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৭ : বর্তমান পৃথিবীতে বিভিন্ন রকমের মানুষ বসবাস করছে। আফ্রিকার অধিবাসীরা বা নিগ্রোরা কুচকুচে কালো। আবার ইউরোপীয়ানরা ধবধবে ফর্সা। এভাবে পৃথিবীতে নানা জাতি, ধর্ম ও বর্ণের লোক বাস করে। মানুষের ধর্মে ও বর্ণে ভিন্নতা থাকলেও ক্ষুধা, তৃষ্ণা, সুখ-দুঃখের অনুভূতি একই রকম। সবার রক্তের রং ও লাল। তাই জাতি, ধর্ম ও বর্ণের ঊর্ধ্বে আমাদের পরিচয় হলো আমরা মানুষ।
ক. ‘মানুষ জাতি’ কবিতাটির মূল নাম কী ছিল?
খ. ‘দুনিয়া সবারি জনম–বেদি’ এ কথা দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে?
গ. উদ্দীপকে ‘মানুষ জাতি’ কবিতার ফুটে ওঠা দিকটি ব্যাখ্যা করো।
ঘ. ‘আমাদের পরিচয় হলো আমরা মানুষ’ উদ্দীপক এবং ‘মানুষ জাতি’ কবিতার আলোকে উক্তিটির যৌক্তিকতা বিশ্লেষণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৮ :
শোনো হে মানুষ ভাই
সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই
জাতপাত যাই নিয়ে গর্ব করিনা কেন ভাই
আসল সত্য আমরা সবাই মানুষ, সৃষ্টির সেরা তাই,
ক. ‘মানবজাতি’ কবিতাটি কোন কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে?
খ. ‘একই পৃথিবীর স্তন্যে লালিত’—লাইনটি দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে?
গ. উদ্দীপক ও ‘মানবজাতি’ কবিতার মধ্যে কী মিল রয়েছে—ব্যাখ্যা করো।
ঘ. কালো আর ধলো বাহিরে কেবল। ভিতরে সবারই সমান রাঙা—উদ্দীপকের আলোকে চরণটি ব্যাখ্যা করো।
উপরে ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করে এই প্রশ্নের উত্তরগুলো ডাউনলোড করে নাও।