রোজা সম্পর্কে কুরআনের আয়াত
মাহে রমজান ও রোজা বিষয়ক কুরআনের আয়াত সমূহ
হে ঈমানদারগণ! তোমাদের জন্য রােযা ফরয করা হয়েছে, যেমন ফরয করা হয়েছিল তােমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর। আশা করা যায় তােমাদের মধ্যে তাকওয়ার গুণ ও বৈশিষ্ট্য জাগ্রত হবে।
(২ সূরা বাকারা : ১৮৩)
তোমাদের জন্য রােযা ফরয করা হয়েছে।
রমযান মাসই হল সে মাস, যাতে আল কুরআন নাযিল করা হয়েছে, যা মানুষের জন্যে জীবন বিধান এবং সত্যপথ যাত্রীদের জন্য সুষ্পষ্ট পথ নির্দেশ। আর হক ও বাতিলের মাঝে পার্থক্য বিধানকারী। কাজেই তোমাদের মধ্যে যে কেউ এ মাসটি পাবে সে যেন এ মাসের রোজা রাখে। আর যে ব্যক্তি অসুস্থ বা মুসাফির অবস্থায় থাকবে, সে অন্য সময় এ সংখ্যা পূরণ করবে। আল্লাহ তােমাদের জন্যে সহজ করতে চান, তোমাদের জন্য কঠিন করতে চান না। যাতে তোমরা এ সংখ্যা পূরণ করতে পারাে এবং তােমাদের হেদায়েত দানের জন্যে আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব বর্ণনা করো। যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার করতে পারাে।
(২ সূরা বাকারা ১৮৫ )
রােযার রাতে তোমাদের স্ত্রীদের সাথে সহবাস করা তােমাদের জন্যে বৈধ করা হয়েছে। তারা তােমাদের পরিচ্ছদ এবং তােমরা তাদের পরিচ্ছদ। আল্লাহ অবগত আছেন যে, তােমরা (রােযা অবস্থায় স্ত্রী সহবাস করে) আত্মপ্রতারণা করেছিলে, সুতরাং তিনি তােমাদেরকে ক্ষমা করেছেন এবং তােমাদের (অপরাধ থেকে) অব্যাহতি দিয়েছেন। অতএব তােমরা নিজেদের স্ত্রীদের সাথে সহবাস করাে। এবং যা কিছু আল্লাহ তােমাদের জন্যে দান করেছেন তা আহরণ করাে। আন পানাহার করাে যতক্ষণ পর্যন্ত না তােমাদের সম্মুখে রাত্রির বুক হতে প্রভাতের আভা সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে। এরপর রাত্রি পর্যন্ত তােমরা রােযা পূর্ণ করে নাও। আর মসজিদে ইতিকাফ অবস্থায় তােমরা স্ত্রী সহবাস করাে না। এই হচ্ছে আল্লাহ নির্দিষ্ট সীমাসমূহ। সুতরাং তােমরা উহার নিকটবর্তী হবে না। এভাবেই আল্লাহ তার আয়াতসমূহ মানুষের জন্য বর্ণনা করে দেন যাতে তারা তাকওয়া অবলম্বন করে।
(২) সূরা বাকারা : ১৮৭)
রােযার রাতে তোমাদের স্ত্রীদের সাথে সহবাস করা
(এই রোজা) নির্দিষ্ট কয়েকদিনের জন্যে। অতঃপর তােমাদের মধ্যে যে অসুস্থ। থাকবে, অথবা সফরে থাকবে, তবে (সেই সময় রােযা না রেখে) অন্য সময় এই সংখ্যক পূরণ করে নিবে। আর এটি তাদের জন্যে অত্যন্ত কষ্টদায়ক হয়, তারা এর পরিবর্তে একজন মিসকিনকে খাদ্যদান করবে। যে ব্যক্তি খুশির সাথে সৎকাজ করে, তা তার জন্যে কল্যাণকর হয়। আর যদি (কষ্ট সত্ত্বেও) রােযা রাখে, তবে তা তােমাদের জন্যে বিশেষ কল্যাণকর, যদি তোমরা তা বুঝতে পারাে।
(২ সূরা বাকারা : ১৮৪)।
নিশ্চয় একে (কুরআনকে) নাযিল করেছি মহিমান্বিত রাত্রিতে। মহিমান্বিত রাত্রি সম্বন্ধে আপনি কি জানেন? মহিমান্বিত রাত্রি হলাে এক হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। এতে প্রত্যেক কাজের জন্য ফেরেশতাগণ ও রূহ (জিবরাঈল) অবতীর্ণ হয় তাদের প্রতিপালকের নির্দেশক্রমে। আর শান্তি বর্ষিত হতে থাকে ফজরের উদয় পর্যন্ত।
(৯৭ সূরা কদর)
মাহে রমজান ও রোজা বিষয়ক হাদিস সমূহ
আবু হুরায়রা (রা) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, হযরত রাসূলে করীম (সাঃ) থেকে ঘােষণা করেছেন, যে লােক রমযান মাসের রােযা রাখবে ঈমান ও চেতনা সহকারে ( সওয়াবের আশায়) তার পূর্ববর্তী গুনাহ মাফ হয়ে যায়।
(বুখারী ৩য় খন্ড সিয়াম অধ্যায় পৃঃ ২৪২)
আবু সাঈদ খুদরী (রা) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলে করীম (সাঃ) কে বলতে শুনেছি, যে লোক একদিন আল্লাহর পথে রােযা রাখবে আল্লাহ তার মুখমণ্ডল জাহান্নাম থেকে সত্তর বৎসর দূরে সরিয়ে রাখবেন।
(বুখারী, তিরমিযী, নাসায়ী, ইবনে মাজাহ ও মুসনাদে আহমদ) (মুসলিম ২য় খণ্ড অধ্যায় সিয়াম পৃ: ৪৭০)
আবু হুরায়রা (রা) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, হযরত রাসূলে করীম (সাঃ) বলেছেন, তোমাদের নিকট রমজান মাস সমুপস্থিত। উহা এক অত্যন্ত বরকতময় মাস। আল্লাহ তায়ালা এ মাসে তোমাদের প্রতি রােযা ফরজ করেছেন। এ মাসে আকাশের দরজা সমূহ উন্মুক্ত হয়ে যায়, এ মাসে জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেয়া হয় এবং এ মাসে বড় বড় ও সেরা শয়তানগুলো আটক করে রাখা হয়। আল্লাহর জন্যে এ মাসে একটি রাত আছে, যা হাজার মাসের চেয়েও অনেক উত্তম। যে লোক এই রাত্রির মহাকল্যাণ লাভ হতে বঞ্চিত থাকলাে, সে সত্যিই বঞ্চিত ব্যক্তি।
(নাসায়ী, মুসনাদে আহমদ ও বায়হাকী)
আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূল (সাঃ) বলেছেন, রোজা ও কুরআন রােযাদার বান্দার জন্য শাফায়াত করবে, রােযা বলবে, হে আল্লাহ্ আমি এ ব্যক্তিকে দিনে খাবার ও অন্যান্য কামনা বাসনা থেকে ফিরিয়ে রেখেছি। আপনি আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন। কুরআন বলবে, হে আল্লাহ, আমি এ ব্যক্তিকে রাতের নিদ্রা থেকে ফিরিয়ে রেখেছি। আপনি আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন, আল্লাহ তাদের সুপারিশ গ্রহণ করবেন।
(বায়হাকী, শুয়াবুল ঈমান)
আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ বলেছেন, যে ব্যক্তি মিথ্যা কথা এবং তদানুযায়ী আমল পরিত্যাগ করতে পারল না, তবে এমন ব্যক্তির আহার পরিত্যাগ করায় আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নেই।
(মুসলিম)
সাহল ইবনে সাদ (রা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলে করীম (সাঃ) বলেছেন বেহেশতের একটি দুয়ার আছে উহাকে রাইয়ান বলা হয়, এই দ্বার দিয়ে কিয়ামতের দিন একমাত্র রােযাদার লােকেরাই বেহেশতে প্রবেশ করবে। তাদের ছাড়া অন্য কেও এই পথে প্রবেশ করবে না। সেদিন এই বলে ডাক দেয়া হবে রােযাদাররা কোথায়? তারা যেন এই পথে প্রবেশ করে, এভাবে সকল রোযাদার ভিতরে প্রবেশ করার পর দ্বারটি বন্ধ করে দেয়া হবে। অতঃপর এ পথে আর কেউ প্রবেশ করবে না।
(বুখারী ৩য় খণ্ড অ: সাওম, পৃ: ২৩৯)
আবু হুরায়রা (রা) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলে করীম (সঃ) বলেছেন, আদম সন্তানের প্রতিটি নেক আমলের সওয়াব দশগুণ হতে সাতশ গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। কিন্তু আল্লাহ তায়ালা বলেছেন রােযা এই সাধারণ নিয়মের ব্যতিক্রম।। কেননা উহা একান্তভাবে আমারই জন্যে। অতএব আমিই (যেভাবে ইচ্ছা) উহার প্রতিফল দিবাে। রােযা পালনে আমার বান্দা আমারই সন্তোষ বিধানের জন্যে স্বীয় ইচ্ছা বাসনা ও নিজের পানাহার পরিত্যাগ করে থাকে। রােযাদারের জন্যে দু’টি আনন্দ। একটি ইফতারের সময় এবং অন্যটি তার মালিক-মনিব আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ লাভের সময়। নিশ্চয়ই জেনে রেখাে রােযাদারের মুখের গন্ধ আল্লাহর নিকট সুগন্ধি হতেও অনেক উত্তম।
(বুখারী ৩য় খণ্ড-অ: সাওম পৃ: ২৩৮ ও মুসলিম ৩য় খণ্ড-অ: সিয়াম পৃ: ৪৬৮)
আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হামযাহ্ ইবনে আমর আসলামী (রা) বেশি বেশি রােযা রাখতাে। একদা সে নবী করিম (সা) কে জিজ্ঞেস করলাে হুজুর আমি কি সফর অবস্থায় রােযা রাখতে পারি? মহানবী বললেন, যদি চাও রাখতে পারাে, আর যদি না চাও ভাঙ্গতে পারাে।
(বুখারী, ও মুসলিম ৩য় খণ্ড অ: সিয়াম পৃ: ৪৪৩)
আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ বলেছেন, যে ব্যক্তি মারা গেছে আর ফরয রােযা তার ওপর (কাযা) আছে, তার অভিভাবক তার পক্ষ থেকে রােযা (কাযা) আদায় করবে।
(বুখারী ও মুসলিম)
আবু হুরায়রা (রা) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলে করীম বলেছেন,রোযা ঢাল স্বরূপ। তোমাদের কেউ কোন দিন রোযা রাখলে তার মুখ থেকে যেন খারাপ কথা বের না হয়। কেউ যদি তাকে গালমন্দ করে বা বিবাদে প্ররােচিত করতে চায় সে যেন বলে আমি রােযাদার। (বুখারী ও মুসলিম)
২. আবু হুরায়রা (রা:) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন, তোমাদের সিয়ামরত কোনাে ব্যক্তিকে যদি খানা খাওয়ার জন্য আহ্বান করা হয়, হবে তার বলা উচিত আমি রােযাদার।
(মুসলিম ৩য় খ: অ: সিয়াম, পৃ: ৪৬৬)
রোজা সম্পর্কিত কোরআনের ৪টি আয়াত ও ৫টি হাদিস
ইসলামের ৫টি স্তম্ভের মধ্যে সিয়াম বা রোজা অন্যতম একটি স্তম্ভ। হাদিসে কুদসীতে আল্লাহ তায়ালা রোজার প্রতিদান নিজ হাতে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। চলমান রমজান মাস উপলক্ষ্যে আমাদের আজকের আয়োজনে রোজা সম্পর্কিত কোরআনের ৪টি আয়াত এবং ৫টি হাদীস উল্লেখ করা হলো।
কোরআনের ৪টি আয়াত-
১) হে মুমিনগণ! তোমাদের জন্যে সিয়ামের বিধান দেওয়া হলো, যেমন বিধান তোমাদের পূর্ববর্তীগণকে দেওয়া হয়েছিল, যাতে তোমরা তাকওয়া বা আল্লাহ ভীরুতা অবলম্বন করতে পারো। (সূরা বাকারাহ-১৮৩)
২) সিয়াম নির্দিষ্ট কয়েক দিনের। তোমাদের মধ্যে কেউ অসুস্থ হলে অথবা সফরে থাকলে অন্য সময় এই সংখ্যা পূর্ণ করবে। যাদের জন্য অতিশয় কষ্টদায়ক হয় তাদের কর্তব্য এর পরিবর্তে ফিদইয়া-একজন অভাবগ্রস্তকে খাদ্যদান করা। যদি কেউ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সৎকাজ করে তবে তা তার পক্ষে অধিক কল্যাণকর। আর সিয়াম পালন করাই তোমাদের জন্যে অধিকতর কল্যাণকর যদি তোমরা তা জানতে। (সূরা বাকারাহ-১৮৪)
৩) রমাজান মাস, এ মাসেই মানুষের জন্য আলোর দিশা এবং সৎপথের স্পষ্ট নিদর্শন ও সত্যাসত্যের পার্থক্যকারীরূপে কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যারা এ মাস পাবে তারা যেন এ মাসে সিয়াম পালন করে এবং কেউ অসুস্থ্য থাকলে কিংবা সফরে থাকলে অন্য সময় এ সংখ্যা পূরণ করবে। আল্লাহ তোমাদের জন্যে যা সহজ তাই চান এবং যা তোমাদের জন্যে কষ্টকর তা চান না, এজন্যে যে তোমাদের সংখ্যা পূর্ণ করবে এবং তোমাদের সৎপথে পরিচালিত করার কারণে তোমরা আল্লাহর মাহিমা ঘোষণা করবে এবং যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারো। (সূরা বাকারাহ-১৮৫)
৪) সিয়ামের রাতে তোমাদের জন্যে তোমাদের স্ত্রীদের বৈধ করা হয়েছে। তারা তোমাদের জন্যে এবং তোমরাও তাদের জন্যে পরিচ্ছদ। আল্লাহ জেনেছেন যে, তোমরা তোমাদের নিজেদের সাথে খিয়ানত করছিলে, অতঃপর তিনি তোমাদের তাওবা কবুল করেছেন এবং তোমাদেরকে মার্জনা করেছেন, সুতরাং এখন তোমরা তাদের সাথে সংগত হও এবং আল্লাহ তোমাদের জন্যে যা নির্ধারণ করে রেখেছেন (অর্থাৎ সন্তান) তা অন্বেষণ করো। আর তোমরা আহার করো ও পান করো যতক্ষণ তোমাদের জন্যে (রাত্রির) কালো রেখা থেকে ফজরের সাদা রেখা স্পষ্ট হয়ে যায়। এরপর রাত পর্যন্ত সিয়াম পূর্ণ করো। আর তোমরা মসজিদে ই’তিকাফ অবস্থায় তাদের সাথে সংগত হয়ো না। এগুলো আল্লাহর (নির্ধারিত) সীমা, সুতরাং এর নিকটবর্তী হয়ো না। এভাবেই আল্লাহ মানুষের জন্যে তার আয়াতসমূহ স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন, যাতে তারা তাকওয়া বা আল্লাহভীরুতা অবলম্বন করতে পারে। (সূরা বাকারাহ-১৮৭)
রোজা সম্পর্কে ৫টি হাদিস-
১) হযরত আবু হুরায়রা (রা) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সো:) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি পরিপূর্ণ বিশ্বাস ও পর্যালোচনাসহ রমজান মাসের সিয়াম পালন করবে, তার পূর্ববর্তী ও পরবর্তী গুণাহ মাফ করে দেওয়া হবে। (সহীহ বুখারী: ৩৮, সহীহ মুসলিম: ৭৬০)
২) হযরত সাহল বিন সা’দ (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সো:) ইরশাদ করেছেন, জান্নাতের একটি দরজা আছে, একে রাইয়ান বলা হয়,। এই দরজা দিয়ে কিয়ামতের দিন একমাত্র সিয়াম পালনকারী ব্যক্তিই জান্নাতে প্রবেশ করবে। তাদের ছাড়া অন্য কেউ এই পথে প্রবেশ করবে না। সেদিন এই বলে আহ্বান করা হবে- সিয়াম পালনকারীগণ কোথায়? তারা যেন এই পথে প্রবেশ করে। এভাবে সকল সিয়াম পালনকারী ভেতরে প্রবেশ করার পর দরজাটি বন্ধ করে দেওয়া হবে। অত:পর এ পথে আর কেউ প্রবেশ করেবে না। (সহীহ বুখারী: ১৮৯৬, সহীহ মুসলিম: ১১৫২)
৩) হযরত আবু হুরায়রা (রা) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সো:) ইরশাদ করেছেন, সিয়াম ঢালস্বরূপ। তোমাদের কেউ কোনোদিন সিয়াম পালন করলে তার মুখ থেকে যেন অশ্লীল কথা বের না হয়। কেউ যদি তাকে গালমন্দ করে অথবা ঝগড়ায় প্ররোচিত করতে চায় সে যেন বলে, আমি সিয়াম পালনকারী। (সহীহ বুখারী: ১৮৯৪, সহীহ মুসলিম: ১১৫১)
৪) হযরত আবু হুরায়রা (রা) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সো:) ইরশাদ করেন, আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, সিয়াম ব্যতীত আদম সন্তানের প্রতিটি কাজই তার নিজের জন্য। কিন্তু সিয়াম আমার জন্য এবং আমিই এর প্রতিদান দেব। সিয়াম ঢালস্বরূপ। তোমাদের কেউ যেন সিয়াম পালনের দিন অশ্লীলতায় লিপ্ত না হয় এবং ঝগড়া-বিবাদ না করে। যদি কেউ তাকে গালি দেয় অথবা তার সঙ্গে ঝগড়া করে, তাহলে সে যেন বলে, আমি সিয়াম পালনকারী। যার হাতে মুহাম্মদের প্রাণ, তার শপথ! অবশ্যই সিয়াম পালনকারীর মুখের গন্ধ আল্লাহর নিকট মিসকের গন্ধের চেয়েও সুগন্ধি। সিয়াম পালনকারীর জন্য রয়েছে দু’টি খুশি, যা তাকে খুশি করে। যখন যে ইফতার করে, সে খুশি হয় এবং যখন সে তার প্রতিপালকের সাথে সাক্ষাৎ করবে, তখন সাওমের বিনিময়ে আনন্দিত হবে। (সহীহ বুখারী: ১৯০৪, সহীহ মুসলিম: ১১৫১)
৫) হযরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সো:) ইরশাদ করেন, তোমাদের নিকট রমজান মাস উপস্থিত। এটা এক অত্যন্ত বরকতময় মাস। আল্লাহ তা’য়ালা এ মাসে তোমাদের প্রতি সাওম ফরজ করেছেন। এ মাসে আকাশের দরজাসমূহ উন্মুক্ত হয়ে যায়, এ মাসে জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং এ মাসে বড় বড় শয়তানগুলোকে আটক রাখা হয়। আল্লাহর জন্যে এ মাসে একটি রাত আছে, যা হাজার মাসের চেয়েও অনেক উত্তম। যে লোক এ রাত্রির মহা কল্যাণলাভ হতে বঞ্চিত থাকল, সে সত্যিই বঞ্চিত ব্যক্তি। (সুনানুন নাসায়ী:২১০৬)
[‘কুরআন মাজীদের আদেশ ও নিষেধ’ গ্রন্থ থেকে সংকলিত]