মসজিদে আসামি ধরতে গিয়ে মুসল্লিদের সঙ্গে সাদা পোশাকের র্যাব সদস্যদের হাতাহাতি
আসামি ধরতে গিয়ে মসজিতদে জুমার নামাজ পড়া মুসল্লিদের সঙ্গে র্যাবের সাদা পোশাকধারী সদস্যদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এতে র্যাব সদস্যসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। শুক্রবার (১১ মার্চ) পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার লক্ষীকুন্ডা ইউনিয়নের চর কুড়ুলিয়া গ্রামের জফিরপাড়ার জামে মসজিদের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, তার মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করছিলেন। নামাজ শেষের দিকে পেছন থেকে সাদা পোশাকধার তিন র্যাব সদস্য মসজিদে প্রবেশ করেন। এ সময় মসজিদ থেকে জিহাদ প্রামাণিক নামে একজনকে আটক করেন। সঙ্গে সঙ্গেই মসজিদের মুসল্লিরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। এ অবস্থায় মুসল্লিরা সাদা পোশাকধারীদের পরিচয় জানতে চাইলে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। এ সময় হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন উভয়পক্ষ। এতে র্যাবসহ কয়েকজন আহত হন।
এই ঘটনায় র্যাব-১২ পাবনা ক্যাম্পের কয়েকটি গাড়ি সেখানে উপস্থিত হয়। হাতাহাতির সময় অস্ত্র খোয়া গেছে দাবি করে দিনভর ওই এলাকায় অভিযান চালায় র্যাব। সন্ধ্যায় গ্রামবাসীর সঙ্গে সমঝোতা ও অস্ত্র পাওয়া গেলে তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
গ্রামবাসী জানান, স্থানীয় মাদ্রাসা হাটের ইজারাকে কেন্দ্র করে জফির প্রামাণিকের ছেলে সন্টু প্রামাণিক ও তার চাচাতো ভাইদের বিরোধ চলছিল। হাটটির ইজারা পান ফারুক-কামাল-জিহাদ প্রামাণিকরা। এরপরে একই হাটে আলহাজ মোড়কে কাঁচাবাজার উল্লেখ করে ইজারা নিয়ে আসেন সন্টু প্রামাণিক। এ নিয়ে তাদের মধ্যে চরম বিরোধ চলছিল। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি সন্টু প্রামাণিক তার লোকজন নিয়ে কাঁচাবাজারে গেলে তার চাচাতো ভাইয়েরা তাকে অবরুদ্ধ করেন। পরে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে।
এ ব্যাপারে ঈশ্বরদী থানার ওসি আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, হাট ইজারাকে কেন্দ্র করে ২৮ ফেব্রুয়ারির ওই ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে। সেটি থানা পুলিশই তদন্ত করছে। এ মামলায় র্যাব সদস্যদের অভিযানে যাওয়ার কোনও কারণ দেখি না। অভিযানের বিষয়টিও আমারও জানা নেই। তবে ওই এলাকায় র্যাবের একটি পিস্তল খোয়া যাওয়ার কথা শুনেছি। পরে স্থানীয়দের মাধ্যমে অস্ত্রটি উদ্ধার হলে র্যাব সদস্যরা ফিরে আসেন।
এ বিষয়ে র্যাব-১২, পাবনা-ক্যাম্পের সহকারী পরিচালক (সহকারী পুলিশ সুপার) কিশোর রায় বলেন, একটি মামলায় আসামি ধরতে সেখানে র্যাব সদস্যরা গিয়েছিল। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে পরে বিস্তারিত জানানো হবে। এই বিষয়ে এ মুহূর্তে নিউজ না করার জন্যও অনুরোধ জানান। থানা পুলিশ যেখানে মামলাটি তদন্ত করছেন, সেখানে আপনারা কেন গেলেন- জানতে চাইলে তিনি দাবি করেন, বাদী আমাদের বলার কারণে আমাদের লোকজন সেখানে যায়। খোয়া যাওয়া পিস্তলটি ফিরে পাওয়ার বিষয়টিও স্বীকার করেন।