সাভারের আশুলিয়ায় চলন্ত বাসে ধারালো অস্ত্র নিয়ে যাত্রীবেশে ডাকাতির ঘটনায় ডাকাত চক্রের একজনকে আটক করেছে পুলিশ। সোমবার (১৬ মে) রাত পৌনে ১০টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের আশুলিয়ার নবীনগর সেনা শপিং কমপ্লেক্সের সামনে এ ঘটনাটি ঘটে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে ডাকাত সন্দেহে আটক ব্যক্তির পরিচয় জানাতে পারেনি পুলিশ।
ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, ডাকাতের ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হয়েছেন এক যুবক। এ ছাড়া বাস থেকে লাথি দিয়ে ফেলে দিলে আরেক নারীও আহত হন। পরে আহতদের নিকটস্থ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ছাড়া পুলিশের এক সদস্যও ওই ডাকাতকে আটক করতে গিয়ে আহত হয়েছেন।
বাসে থাকা যাত্রী বলেন, সাভার পরিবহনের বাসটা বাইপাইল থেকে সাভার যাবে। বাইপাইলে থেকে বাসে উঠেছি সাভার থানা স্ট্যান্ড নামবো। কয়েকজন লোক একসাথে বাসে উঠলো। ওঠার পরে বাস নবীনগরে সেনা মার্কেটের সামনে গেলে একজন লাফ দিয়া ছুরি নিয়া ড্রাইভারের কাছে গিয়া বসে। ড্রাইভারকে বলে, ওস্তাদ গাড়ি দাঁড় করাবেন না। দাঁড় করাইলে একদম মাইরা দিমু। পরে আমি ভাব-ভঙ্গি দেইখা বাস থাইকা লাফ দিছি। এই সময় এক মহিলা নাইমা যাইতে চাইছিল, তারে একটা জোরে লাথি মারসে। বেটি মনে হয়, বাস থাইকা ২০-২৫ ফুট নিচে গিয়া পড়ছে। তার পা ভাইঙ্গা গেছে। আরেক যাত্রীর পায়ের রগ কাইটা দিছে। তাগো হাসপাতালে নিয়া গেছে।
বাসের যাত্রী মনির হোসেন বলেন, বাসের যাত্রী ছিল ২০-২৫ জন। যাত্রীদের মধ্যে এক নারীকে লাথি দিয়ে বাস থেকে ফেলে দেয়া হয়। আরেকজনকে পায়ে ছুরিকাঘাত করা হয়। পরে এক পুলিশ চলতি বাসে উছে এক ডাকাতরে ধইরা ফেলে। পরে সবাই তারে মারধর করে। বাসটা তখন পালিয়ে গেছে। বাসের স্টাফরা ডাকাতির সাথে জড়িত। না হইলে বাস ছেড়ে পালিয়ে গেল কেন?।
প্রত্যক্ষদর্শী ইমরান খান বলেন, আমি সেনা মার্কেটের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। তখন এক মহিলাকে বাস থেকে ফেলে দেয়া হয়। এ সময় বাসের যাত্রীরা ডাকাত ডাকাত বলে চিৎকার করছিল। মার্কেটের সামনে ট্রাফিক পুলিশের এসআই হেলাল ডিউটি করছিলেন। তিনি মহিলাকে ফেলে দেয়া দেখে দৌড়ে একাই বাসে গিয়ে উঠেন। পরে ছুরি হাতে থাকা একজনকে জাপটে ধরে আটক করে ফেলেন।
এসময় ডাকাতের সঙ্গে ধস্তাধস্তির সময় এসআই হেলাল আহতও হন। বাকি ডাকাত সদস্যরা তখন দ্রুত পালিয়ে যায়। পরে উপস্থিত জনতা ওই ডাকাত সদস্যকে গণধোলাই দেয়। খবর পেয়ে আশুলিয়া থানা পুলিশের এসআই আসলাম তাকে আটক করে নিয়ে যান। তবে এ বিষয়ে জানতে সাভার ট্রাফিক পুলিশের এসআই হেলালের মুঠোফোনে ফোন করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে আশুলিয়া থানার এসআই আসলামুজ্জামান বলেন, আমরা ওখানে গিয়ে গণধোলাইয়ের শিকার একজনকে পাই। পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। একটি ছুরিও উদ্ধার করা হয়েছে। যাত্রীরা বলেছে, ছুরি হাতে ছিনতাইকারী বা ডাকাত সদস্যরা তাদের আক্রমণ করেছিল। এখনও ঘটনার বিস্তারিত জানতে পারিনি। এ ঘটনায় বাসটিও জব্দ করা সম্ভব হয়নি।