জাতির পিতা ও বীমা শিল্প রচনা
জাতির পিতা ও বীমা শিল্প রচনা
স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬০ সালের ১ মার্চ আলফা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডে একজন উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেছিলেন। দিনটি স্মরণে প্রতিবছর বাংলাদেশে ১ মার্চ জাতীয় বীমা দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
১৯৫৯ সালের ৭ আগস্ট প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান (EBDO) জারি করে আওয়ামী লীগের রাজনীতি বন্ধ করে দিলেন। একই সাথে ১৯৫৯ সালের ৭ ডিসেম্বর শেখ মুজিবুর রহমান জামিনে মুক্তি পাওয়ার সময় শর্ত আরোপ করা হয় যে ঢাকার বাইরে গেলে স্থানীয় পুলিশকে অবহিত করতে হবে। বঙ্গবন্ধু মার্শাল ‘ল এড়িয়ে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাবার পথ খুঁজতে লাগলেন। অবশেষে ১৯৬০ সালে ১ মার্চ আলফা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে কন্ট্রোল অব এজেন্সি হলেন। বীমার কাজের সাথে গোপনে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে গেলেন।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর বীমা শিল্পের উন্নয়নে বঙ্গবন্ধু কিছু নতুন পদক্ষেপ গ্রহন করেন। বাংলাদেশ সরকার ২৯টি পাকিস্তানি কোম্পানিকে তদারকি করার জন্য ১৯৭২ সালের ৩ জানুয়ারি The Banglades (Taking over of control and management industrial and commercial concern) Order,1972 নামে একটি অধ্যাদেশ জারী করে উক্ত অধ্যাদেশের ২(১) এর বিধান মোতাবেক প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হয়।
১৯৭২ সালের ২৬ মার্চ Bangladesh Insurance ( Emergency Provision) Order,1972 জারি করা হয়। এ Act এর বিধান অনুযায়ী বাংলাদেশের বীমা আইন হিসাবে ১৯৩৮ সালের বীমা আইনটিকে মূলভিত্তি হিসাবে বিবেচনা করা হয়। পরবর্তীতে ১৯৭২ সালের ৮ আগস্ট রাষ্ট্রপতির আদেশ নং(৯৫) অনুযায়ী দেশের বীমা প্রতিষ্ঠানগুলোকে জাতীয়করণ করা হয়। উক্ত আদেশে দেশের ৭৫টি বীমা প্রতিষ্ঠানকে প্রথমে ৫টি সংস্থায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। অতপর ১৯৭৩ সালের ১৪ মে বীমা কর্পোরেশন অধ্যাদেশ ১৯৭৩ (Insurance Corporation Ordinance 1973) মাধ্যমে উক্ত পাচঁটি বীমা সংস্থাকে দুটি সংস্থার অধীনে আনা হয়। একটি হলো জীবন বীমা কর্পোরেশন এবং অন্যটি হলো সাধারন বীমা কর্পোরেশন। বাংলাদেশে বর্তমানে ৭৯ বীমা কোম্পানি রয়েছে । তার মধ্যে সাধারণ বীমা কোম্পানি ৪৪টি এবং জীবন বীমা কোম্পানি ৩৫টি রয়েছে।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা বিরোধী একদল বিপদগামী সেনা অফিসার বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তার পরিবারের অন্য সদস্যদের নির্মমভাবে হত্যা করে। তারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে বাংলাদেশকে হত্যা করতে চেয়েছিল। এদেশের মানুষ বঙ্গবন্ধুকে ভুলে যায়নি বরং বঙ্গবন্ধুর আদর্শ মনে প্রাণে লালন করে এ দেশকে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে দুর্বার গতিতে।
বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বীমা শিল্পকে এগিয়ে নিতে বীমা আইন ২০১০ এবং বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ গঠন করেন। এই সংস্থার মাধ্যমে বীমা শিল্পের উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অনেক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে যা ধাপে ধাপে বাস্তবায়িত হচ্ছে। যত দিন স্বাধীন দেশে লাল সবুজের পতাকা থাকবে তত দিন বাংলার মানুষের অন্তরে বেঁচে থাকবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার বীমার কর্মকাণ্ডের উজ্জল স্মৃতি।