শবে বরাতের নামাজের নিয়ম ও নিয়ত জেনে নিন | লাইলাতুল বরাতের নামাজের নিয়ত

আসছালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক সবাই কেমন আছেন। আসা করি সবাই আল্লাহর রহমতে ভালো আছেন। পবিত্র সাবান মাস খুবই বরকতময় একটি মাস। যারা পরেই রমজান মাস আমাদের মাঝে চলে আসছে। নবী (সাঃ) রমজান মাস আসারা আগেই রজব ও সাবান মাস থেকেই রমজানের প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করতেন।
রাসুল (সাঃ) বলেছেন আমার কাছে শাবান মাসের রোজা অন্য মাসের তুলনায় অধিক প্রিয়।
আর সাবান মাসেই পবিত্র শবে বরাত বা লাইলাতুল বরাত। বিশ্ব মুসলিমবাসীর বিশ্বাস, এ রাতে অসংখ্য বান্দা মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে ক্ষমা ও আশীর্বাদ লাভ করে থাকে। এ কারণে এ রজনীকে আরবিতে ‘লাইলাতুল বারাআত’ বা ‘নিষ্কৃতি/মুক্তির রজনী’ বলা হয়।

এ রাত্রীতে ইবাদত করলে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বান্দার গুনাহরাশী আল্লাহ তায়ালা ক্ষমা করে দেম।
তবে কেবল আল্লাহর সঙ্গে শিরককারী, সুদখোর, গণক, যাদুকর, কৃপণ, শরাবী, যিনাকারী এবং পিতা-মাতাকে কষ্টদানকারীকে আল্লাহ মাফ করবেন না।

বরাতের নামাজের নিয়ম ও নিয়ত জেনে নিন

নিচে শবে বরাতের নামাজের নিয়ম ও নিয়ত বিস্তারিত তুলে ধরা হলোঃ-

লাইলাতুল বরাতের নামাজের নিয়ত

নাওয়াইতুআন্ উছল্লিয়া লিল্লা-হি তাআ-লা- রাকআতাই ছালা-তি লাইলাতিল বারা-তিন্ -নাফলি, মুতাওয়াজ্জিহান ইলা-জিহাতিল্ কাবাতিশ্ শারীফাতি আল্লা-হু আকবার।

বাংলায় নিয়ত করলে এই ভাবে করতে পারেন: ‘শবে বরাতের দুই রাকাত নফল নামাজ/ সালাত কিবলামুখী হয়ে পড়ছি, আল্লাহু আকবর’।

শবে বরাতের নামাজের নিয়ম

শবে বরাতে নফল নামাজের নিয়ম হলো, অন্য নফল নামাজের মতোই দুই রাকাত করে নামাজ পড়া। প্রতি রাকাতেই সুরা ফাতেহার পর পবিত্র কোরআনের যে কোনো সুরা পড়া। এরপর যথানিয়মে রুকু-সিজদা করা এবং অন্য রুকনগুলো আদায় করা। এভাবে দুই রাকাত নামাজ শেষ করা।  দুই বা চার রাকাত নামাজ পড়ার পর কিছু সময় দোয়া-দরুদ, তাসবি-তাহলিল পড়া, জিকির করা, কোরআন তেলাওয়াত করা। এরপর আবার নামাজে দাঁড়ানো। নামাজের পর আবার জিকির-আজকার, কোরআন তেলাওয়াত, তাওবা-ইস্তেগফার করা, দীনি আলোচনা শোনা, কোরআন-হাদিসের ব্যাখ্যা পড়া ইত্যাদি।

এভাবে সাধ্য অনুযায়ী যত রাকাত নামাজ পড়া যায় পড়তে পারেন। রাকাতেরও নির্দিষ্ট কোনো সংখ্যা নেই। পবিত্র কুরআনে যথাসাধ্য নফল ইবাদত করার প্রতি ইঙ্গিত রয়েছে।

শবে বরাতের নামাজ কত রাকাত

শবে বরাতের নামাজের নির্দিষ্ট কোন রাকাত নেই। শবে বরাতের নামাজ অন্যান্য নফল নামাজের মত ২ রাকাত করে পড়তে হয়। আপনার সাধ্য অনুযায়ী যত রাকাত ইচ্ছা পড়তে পারেন।

 শবে বরাত পালনের নিয়ম

শবে বরাত পালনের আলাদা কোন নিয়ম নেই। এ রাতে যেহেতু দীর্ঘ সময় পাওয়া যায়, তাই আমরা ফজিলতময় নামাজ সালাতুত তাসবিহ পড়তে পারি। এই নামাজ জীবনে একবার হলেও পড়ার তাগিদ রয়েছে। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) আব্বাস ইবনে আব্দিল মুত্তালিব (রা.)-কে বলেছেন, হে চাচা! আমি কি আপনাকে দেব না? আমি কি আপনাকে প্রদান করব না? …আপনি চার রাকাত নামাজ পড়বেন। প্রতি রাকাতে সুরা ফাতেহা ও অন্য একটি সুরা পড়বেন। প্রথম রাকাতে যখন কেরাত পড়া শেষ করবেন তখন দাঁড়ানো অবস্থায় ১৫ বার বলবেন- সুবহানাল্লাহ, ওয়াল হামদু লিল্লাহ, ওয়া লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার।

এরপর রুকুতে যাবেন এবং রুকু অবস্থায় দোয়াটি ১০ বার পড়বেন। এরপর রুকু থেকে মাথা উঠাবেন এবং ১০ বার পড়বেন। এরপর সিজদায় যাবেন। সিজদা অবস্থায় ১০ বার পড়বেন। এরপর সিজদা থেকে মাথা উঠাবেন এরপর ১০ বার পড়বেন। এরপর আবার সিজদায় যাবেন এবং সিজদা অবস্থায় ১০ বার পড়বেন। এরপর সিজদা থেকে মাথা উঠাবেন এবং ১০ বার পড়বেন। এ হলো প্রতি রাকাতে ৭৫ বার। আপনি চার রাকাতেই অনুরূপ করবেন।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *