স্যালাইনের মতো করে ফোটায় ফোটায় তেল দিয়ে ভাজা হচ্ছে পরোটা, দেখতে উৎসুক জনতার ভিড়
সম্প্রতি দেশের বাজারে সয়াবিন তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় নিজের ছোট হোটেল ব্যাবসা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েন ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা মথুরাপুর বড় মসজিদ এলাকার আব্দুল হামিদ। ভোজ্যতেলের দাম লাগামহীন বৃদ্ধি পাওয়ায় বাধ্য হয়ে পরোটাসহ অন্যন্য খাদ্যের দাম বাড়াতে হবে। কিন্তু হোটেলে খাবারের দাম বাড়িয়ে দিলে ক্রেতাও কমে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। হোটেলে মন্দা পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে পরিবার নিয়ে বিপাকে পড়তে হবে।
এ অবস্থায় তেল সাশ্রয়ের ভাবনা থেকে স্যালাইন পদ্ধতিতে পরোটা ভাজার সিদ্ধান্ত নেন আব্দুল হামিদ। এমন কৌশলে তিনি নিজেও সাশ্রয়ী হচ্ছেন এবং পরোটার দাম বৃদ্ধি না করে ক্রেতা ধরে রেখে নিজের সুনাম অক্ষুন্ন রেখেছেন এই ব্যাবসায়ী। এমন পদ্ধতি দেখতে ও সেই সাথে পরোটা খেতে অনেকেই ভিড় জমাচ্ছেন তার হোটেলে।
এ বিষয়ে আব্দুল হামিদ জানান, এমন কৌশলে নিজে লাভবান হচ্ছেন এবং ক্রেতাও ধরে রেখেছেন তিনি। আগে প্রতিদিন ২৫০টি পরোটা ভাজতে প্রায় আড়াই লিটার তেল লাগতো। আর এখন স্যালাইন পদ্ধতিতে দেড় লিটার তেলে ২৫০টি পরোটা ভাজতে পারছেন তিনি। এতে বাজারে তেলে দাম বাড়লেও তার হোটেলে সে প্রভাব পড়েনাই। পরোটাসহ অন্যান্য খাবারের দামও বৃদ্ধি করতে হয়নি তাকে।
এদিকে দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতিতে চিন্তিত সাধারণ মানুষ। বাজারের খাবার হোটেলগুলোতে প্রতি পরোটা ৫টাকা থেকে বাড়িয়ে কোথাও ৮ টাকা আবার কোথাও ১০টাকা করা হয়েছে। অনেক খাবার হোটেলে খাদ্যের দাম বৃদ্ধি করা হলেও পূর্বের ৫টাকা দরেই প্রতি পিস পরোটা বিক্রি করছেন আব্দুল হামিদ। তেল সাশ্রয় করে স্যালাইন পদ্ধতি দেখতে অনেকেই আসছেন তার হোটেলে খাবার খেতে।
এ সময় মথুরাপুর এলাকার সোলায়মান আলি নামে এক ক্রেতা বলেন, সোয়াবিন তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় আশে পাশের বেশ কয়েকটি হোটেলে পরোটাসহ অন্যান্য খাবারের দাম বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। কিন্তু আব্দুল হামিদের হোটেলে এখনো পূর্বে দরেই খাবার পাওয়া যাচ্ছে। রোড সুগার মিল এলাকার বাসিন্দা মনসুর আলম জানান, লোকমুখে আব্দুল হামিদের স্যালাইন পদ্ধতিতে পরোটা ভাজার কথা শুনে তিনিসহ তার দু’জন বন্ধু মিলে তা দেখতে এবং পরোটা খেতে এসেছেন।
এ বিষয়ে জেলা তেল গ্যাস কমিটির আহব্বায়ক মাহবুব আলম রুবেল জানান, খেটে খাওয়া শ্রমিক ও সাধারণ মানুষের আয় বাড়েনি। কিন্তু ভোজ্য তেলসহ যেভাবে অন্যান্য খাদ্যদ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে সাধারণ মানুষকে খুব কষ্টে পড়তে হবে। তাই তেলের মূল্য বৃদ্ধি ঠেকাতে সরকারকে তেল আমদানি বাড়াতে হবে সেই সাথে বাজার মনিটরিং করে আরও কঠোর হতে হবে। তা না হলে বিপাকে পড়তে হবে সাধারন মানুষকে।
সদর উপজেলা পৌরসভা চৌরাস্তা এলাকার ছোট মুদি ব্যাবসায়ী সাহাদাত হোসেন জানান, চাহিদা অনুযায়ী তেল পাচ্ছেন না তারা। অনেক কোম্পানি তেল সরবরাহ বন্ধ রেখেছে। আর যে দু একটি কোম্পানি তেল সরবরাহ করছেন তার পরিমাণ খুবই কম । প্রতি ৫লিটার বোতল তেল কিনতে হচ্ছে ৭৯০ টাকায় এবং বিক্রি করতে হচ্ছে ৭৯৫ টাকায়।