শীতে শিশুর যত্নে খাদ্য তালিকা!
শীতে শিশুদের সঠিক যত্নের জন্য তাদের খাদ্য তালিকা পরিবর্তন করা অত্যন্ত জরুরি। শীতে শিশুদের শরীর সুস্থ এবং সতেজ রাখতে ওদের এমন সব খাবারদাবার খাওয়ানো উচিত যাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন সি এবং মিনারেল রয়েছে। এই ধরনের খাবার শিশুদের ইমিউনিটি মজবুত করে। ফলে যেকোন রোগ-জীবাণু শিশুকে সহজেই কাবু করতে পারে না। তাই শীতের শুরুতেই শিশুর খাদ্য তালিকা নির্বাচন করা উচিত।যারা জানেন না, শীতে কোন কোন খাবার শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী তাদের জন্যই আজকের এই ব্লগ। আজ থেকেই আপনার শিশুর খাদ্য তালিকায় যোগ করুন নিচের খাদ্যগুলো এবং আপনার শিশুর সঠিক স্বাস্থ্য নিশ্চিত করুন।
১. মৌসুমী ফল
কোন মৌসুমী ফলই স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।শীতে দেখা মেলে বরই, জলপাই, আমলকি, সফেদা, কমলালেবু, আপেল আর ডালিম ইত্যাদি ফলের।
এসব ফলে আছে ভিটামিন ‘সি’, ভিটামিন ‘এ’, মিনারেল, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ভিটামিন ‘ই’, এন্টিঅক্সিজেন, ফাইবারসহ আরও অনেক ভিটামিনের। এসব মৌসুমি ফল কেবল মুখরোচকই নয়, এতে থাকা নানা ভিটামিন এবং মিনারেলসহ ফাইবার দাঁত, মাড়ি মজবুত করতে যেমন সাহায্য করে তেমনি নানা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
আপনার শিশুকে নিয়মিত মৌসুমী ফল খাওয়ান। প্রয়োজনে মাঝে মাঝে ফলের জুস করে দুই-তিন চামচ খাওয়াতে পারেন। তবে প্রতিদিন এক জাতীয় ফল খাওয়াবেন, তাহলে শিশুর ফল খাওয়ায় অনিচ্ছা জন্মাতে পারে।
২. শাক-সবজি
শাক-সবজি শরীরের ইমিউনিটি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত শিশুর খাদ্য তালিকায় শাক-সবজি রাখুন। শাক – সবজি সর্ম্পূন প্রাকৃতিক ভাবে দেহের রক্ষণাবেক্ষণ করে থাকে। নিয়মিত শাক-সবজি গ্রহণে শিশু দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
৩. কমলা লেবুর জুস
শীতে শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কমলা লেবুর রস খাওয়ান। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি। প্রতিদিন ফ্রেস কমলো লেবুর জুস শিশুকে খেতে দিন। বাইরে থেকে কিনে এনে দেওয়ার চেয়ে নিজে ঘরে তৈরি করে দেওয়ায় উত্তম।
৪. নিয়মিত ডাল
খাদ্য তালিকায় নিয়মিত ডাল রাখুন। ডালে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন। ফলে শিশুর ডায়েট ঠিক থাকবে। তাছাড়া শিশু যথেষ্ট পরিমাণে পুষ্টি লাভ করবে এবং ওর শারীরিক বিকাশও সঠিক ভাবে হবে
৫. দুধ
দুধের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে বলার কিছু আছে বলে মনে হয় না।
দুধকে বলা হয় সুপার ফুড বা সর্বগুণ সম্পন্ন খাবার। এতে রয়েছে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ফসফরাস, প্রোটিন, ভিটামিন এ, ভিটামিন ডি, ভিটামিন বি-১২, নিয়াসিন ও রিবোফ্লভিন। দুধের নানা পুষ্টিগুণ শিশুকে সুস্থ, সবল ও নিরোগ রাখতে পারে।
তাই নিয়মিত আপনার শিশুকে পর্যাপ্ত দুধ খাওয়ান। তবে কখনো জোর করে অতিরিক্ত খাওয়াবেন না।
৬. ডিম
ডিমে আছে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন, ভিটামিন এ, ডি, বি এবং বি-টুয়েলভ্। এছাড়াও ডিমে আছে লুটেইন ও যিয়াস্যানথিন নাম দুটি প্রয়োজনীয় উপাদান যা বৃদ্ধ ও শিশুদের চোখের ক্ষতি ঠেকাতে সাহায্য করে।
তাছাড়া ডিম খেলে শরীরে উষ্ণতা আসে। ফলে নিয়মিত ডিম খেলে আপনার শিশুর ঠাণ্ডা কম লাগবে এবং সবচেয়ে বড় কথা শরীরের ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ করতে ডিমের জুড়ি নেই।
৭. বাদাম
শীতের প্রকোপ থেকে শিশুকে সুরক্ষা দিতে নিয়মিত বাদাম খাওয়ান। বাদাম শরীরে উষ্ণতা যোগায়। বছর দেড় থেকে শুরু করে যেকোন বয়সী শিশুকে বাদাম খাওয়াতে পারবেন। তবে অবশ্যই খেয়াল রাখবেন শিশু বাদাম ঠিক মতো খেতে পারছে কিনা। প্রয়োজনে বাদাম পানিতে ভিজিয়ে বা দুধের সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়াতে পারেন।
সর্বোপরি উপরোক্ত খাদ্যগুলো নিয়মিত আপনার শিশুকে খাওয়ান তাহলে যেকোন প্রকার শীতের প্রকোপ থেকে আপনার সন্তানকে রাখতে পারবেন অনেকটাই সুরক্ষিত। মনে রাখবেন শিশুর শারীরিক যত্নে যদি কোন ঘাটতি থাকে তাহলে তার প্রভাব ভবিষ্যত জীবনেও পড়তে পারে। তাই শিশুর সঠিক যত্ন নিশ্চিত করুন।