বুয়েট (BUET) ভর্তি পরীক্ষার বিস্তারিত তথ্য

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা শহরের প্রাণকেন্দ্রে পলাশী এলাকায় বুয়েট (BUET) অবস্থিত। আজ বুয়েট ভর্তি পরীক্ষার বিস্তারিত তথ্য আলোচনা করবো।

বুয়েট (BUET) এর আচার্য হচ্ছেন রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ। বুয়েটের সম্মানিত উপাচার্য হচ্ছেন সত্য প্রসাদ মজুমদার। ৮৩.৯ একর জায়গার উপর অবস্থিত বাংলাদেশের সেরা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থী সংখ্যা ১০ হাজারেরও বেশী।

বুয়েট ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের যোগ্যতাঃ

১) মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড/মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড/কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে বিজ্ঞান বিভাগে (গণিত,পদার্থ, রসায়নসহ) জিপিএ ৫ এর স্কেলে কমপক্ষে জিপিএ ৪.০০ পেয়ে মাধ্যমিক/দাখিল অথবা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।

২) উচ্চ মাধ্যমিক/আলীম সমমানের ক্ষেত্রে গণিত,পদার্থ, রসায়ন তিনটি বিষয়ে রেজিষ্ট্রেশনসহ জিপিএ ৫ এর স্কেলে কমপক্ষে জিপিএ ৫ পেতে হবে।

৩) মাধ্যমিক/দাখিল সমমানের পরীক্ষায় গণিত,পদার্থ, রসায়ন তিনটি বিষয়ে ৩০০ নম্বরের মধ্যে ২৭০ নম্বর পেয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।

৪) ২০১৯ সালে যারা পাশ করেছ তাদের সংশোধিত ফলাফল ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ অনুযায়ী গনিত,পদার্থ, রসায়ন তিনটি সাবজেক্টের ৬০০ নম্বরের মধ্যে ৪৮০ নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে।

★সকল সঠিক আবেদনকারীদের মধ্য হতে উপরে উল্লেখিত নির্ধারিত নম্বরের মধ্যে বাছাই করে ১ম থেকে ২৪,০০০ তম পর্যন্ত সকল আবেদনকারীকে প্রাক নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ দেওয়া হবে।

★বাছাইয়ের ক্ষেত্রে আবেদনকারীর মাধ্যমিক পরীক্ষায় গণিত,পদার্থ, রসায়ন তিনটিতে প্রাপ্ত নম্বর এবং গণিত আর পদার্থে প্রাপ্ত নম্বর কে অগ্রাধিকারের ক্রম হিসেবে বিবেচনা করা হবে।

★ন্যূনতম যোগ্যতা পূরণ সাপেক্ষে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সকল সঠিক আবেদনকারী কে প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হবে।

★শিক্ষার্থীদের ৪ টি শিফটে বিভক্ত করে পরীক্ষা নেওয়া হবে।

★প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষার ফলাফলের মেধাক্রম অনুসারে ১ম থেকে ৬০০০ তম শিক্ষার্থীকে মূল ভর্তি অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হবে।
৪ টি শিফটের প্রতি শিফটের ১ম থেকে ১৫০০ তম পর্যন্ত নেওয়া হবে।

★বায়োমেডিক্যাল প্রকৌশল বিভাগে ভর্তির জন্য প্রার্থীকে উচ্চ মাধ্যমিকে জীববিজ্ঞানে অবশ্যই জিপিএ ৪ থাকতে হবে।

প্রার্ক-নির্বাচনী পরীক্ষার মান বন্টনঃ

ক ও খ গ্রুপের জন্য মোট ১০০ নম্বরের MCQ পরীক্ষা নেওয়া হবে।
বুয়েটের প্রাক-নিবার্চনী ভর্তি পরীক্ষায় গণিত থেকে ৩৪ টি প্রশ্ন, পদার্থ থেকে ৩৩ টি প্রশ্ন এবং রসায়ন থেকে ৩৩ টি প্রশ্ন করা হবে।
পূর্ণমাণ থাকবে ১০০ নম্বর। সময় দেওয়া হবে মাত্র ৬০ মিনিট।
প্রতিটি প্রশ্নের মান ১ করে।প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য প্রাপ্ত নম্বর থেকে প্রশ্নের মানের ২৫% কাটা হবে।

সাধারণ ক্যালকুলেটর ভর্তি পরীক্ষায় ব্যবহার করা যাবে।

মূল ভর্তি পরীক্ষার মান বন্টনঃ

ইঞ্জিনিয়ারিং ভর্তি পরীক্ষায় দুইটি গ্রুপে পরীক্ষা নেওয়া হবে।
ক গ্রুপ – প্রকোশল বিভাগ
খ গ্রুপ- স্থাপত্য বিভাগ

ক গ্রুপের জন্য ৪০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
খ গ্রুপের জন্য ৬৫০ নস্বরের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

মডিউল দুইটি A,B
গ্রুপ দুইটি ক,খ

A মডিউলে গ্রুপ ক এর জন্য গণিত,পদার্থ এবং রসায়ন থেকে প্রশ্ন করা হবে।
গণিত থেকে ১৪ টি প্রশ্ন।
পদার্থ থেকে ১৩ টি এবং রসায়ন থেকে ১৩ টি প্রশ্ন করা হবে।
পূর্ণমাণ হবে ৪০০ নম্বর সময় দেওয়া হবে ১২০ মিনিট অর্থ্যাৎ ২ ঘন্টা।
প্রতিটি প্রশ্নের মান হবে ১০ নম্বর করে।

আর গ্রুপ খ জন্যও A মডিউলে গ্রুপ ক এর মতোই পরীক্ষা নেওয়া হবে।
কিন্তু,মডিউল B তে খ গ্রুপের জন্য অর্থ্যাৎ স্থাপত্য বিভাগের জন্য আলাদাভাবে ২৫০ নম্বরের পরীক্ষা নেওয়া হবে যেখানে সময় দেওয়া হবে ৯০ মিনিট অর্থ্যাৎ একটি ফুটবল ম্যাচের সময়। সময়টি ঠিকভাবে কাজে লাগাতে হবে।

মুক্তহস্ত অঙ্কন থেকে ৩ টি প্রশ্ন করা হবে।মুক্তহস্ত অঙ্কনের প্রতিটি প্রশ্নের মান ৭০।
দৃষ্টিগত ও স্থানিক ধী শক্তি থেকে ৪ টি প্রশ্ন করা হবে।এক্ষেত্রে প্রতিটি প্রশ্নের মান হবে ১০ করে।পূর্ণমাণ ২৫০ নম্বর।

বিশ্ব র্যাংকিং এ ৮০০ এর পরে থাকা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) টি তে পড়তে চাইলে মূল ভর্তি পরীক্ষায় অবশ্যই অসাধারণ ভালো করতে হবে।কারণ,মূল ভর্তি পরীক্ষার প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতেই মেধা তালিকা তৈরি করা হবে।

মোট আসন সংখ্যা কত?

প্রকৌশল বিভাগসমূহ এবং নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের জন্য মোট ১১৫৫ টি আসন যেখানে তিনটি আসন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের জন্য সংরক্ষিত।
স্থাপত্য বিভাগের জন্য মাত্র ৬০ টি আসন রয়েছে যার মধ্যে ১ টি সংরক্ষিত আসন।

প্রকৌশল বিভাগ ৪ বছর মেয়াদী কোর্স।
স্থাপত্য বিভাগ ৫ বছর মেয়াদী কোর্স।

অনুষদ ও সাবজেক্ট ভিত্তিক আসন সংখ্যাঃ

বুয়েটে (BUET) মোট ৫ টি অনুষদ রয়েছে।

🏇প্রকৌশল অনুষদ

এই অনুষদে ২ টি সাবজেক্ট রয়েছে।
১) কেমিক্যাল বিভাগ- এটাতে আসন সংখ্যা ১২০ টি।
২) বস্তু ও ধাতব কৌশল বিভাগ – এখানে আসন সংখ্যা ৬০ টি।

🏇পুরকৌশল অনুষদ

১) পুরকৌশল বিভাগ – ১৯৫ টি আসন
২) পানিসম্পদ কৌশল বিভাগ- ৩০ টি আসন।

🏇যন্ত্রকৌশল অনুষদ

১) যন্ত্রকৌশল বিভাগ – ১৮০ টি াসন সংখ্যা রযেছে।
২) নৌযান ও নৌযন্ত্র কৌশল বিভাগ – বুয়েটের এই সাবজেক্টে ৫৫ টি আসন রয়েছে।
৩) ইন্ড্রাষ্ট্রিয়াল এন্ড প্রোডাকশন প্রকৌশল বিভাগ- ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয় টি তে এই সাবজেক্টে ১২০ টি আসন সংখ্যা রয়েছে।

🏇তড়িৎ ও ইলেক্ট্রনিক কৌশল অনুষদ

১) তড়িৎ ও ইলেক্ট্রনিক কৌশল বিভাগ – ১৯৫ টি আসন।
২) কম্পিউটার সাইন্স এন্ড প্রকৌশল বিভাগ- ১২০ টি আসন।
৩) বায়োমেডিক্যাল সাইন্স এন্ড প্রকৌশল বিভাগ- ৫০ টি আসন।

🏇স্থাপত্য ও পরিকল্পনা অনুষদ

১) স্থাপত্য বিভাগ – আসন সংখ্যা ৬০ টি
৩) নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগ- আসন সংখ্যা মাত্র ৩০ টি।

প্রতিবছরই বুয়েট (BUET) কর্তৃপক্ষ তাদের চাহিদামতো যোগ্যতা নির্ধারণ করে থাকে।তাই,ভবিষ্যতে বাছাই প্রক্রিয়া আরও কঠিন হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই চাই।তাই,নিজেকে সেভাবেই গড়ে তুলো।বুয়েট ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ যোগ্যতা অর্জন করতে চাইলে পাঠ্যবই পড়া ছাড়া কোন বিকল্প নেই।বুয়েট (BUET) ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে চাইলে এখনই পড়তে বসো😊

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *