মিউজিক (Music) যার ধর্ম ছিলো

রাহিম জাং এর জন্ম হয়েছে লন্ডনের একটি ধর্মহীন পরিবারে। জন্মগতভাবে তার মা ছিলো খ্রিস্টান আর বাবা ছিলো মুসলিম।
কিন্তু তাদের জীবনে ইসলামের ছিটেফোটা ছিলো না। এমনকি একটা সময় তার মা ইসলামের বিরুদ্ধে বিতৃষ্ণ হয়ে যান।
রাহিম জাং কে তার অতীত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন,

তিনি কোন ধর্ম মানতেন না। মিউজকই ছিল তার একমাত্র ধর্ম। মিউজিক ছাড়া তিনি কোনকিছুই মানতেন না।

বাবা মা-র আপত্তি থাকা সত্ত্বেও তিনি মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিতে যোগ দিয়েছিলেন।
কাজ করেছেন কিছু সেরা রেকর্ড আর্টিস্ট এবং বিখ্যাত আন্তর্জাতিক রেকর্ড কম্পানির সাথে।
একটা সময় তার জীবনে কিছু সমস্যা হতে লাগলো।
অর্থাৎ, তিনি মনের গহীন থেকে এক ধরণের শূন্যতা অনুভব করছিলেন। একদিন তিনি পাগলপ্রায় হয়ে গিয়ে স্রষ্টার সাথে একটা চুক্তি করেন-

“হে স্রষ্টা! তুমি যদি আমার এই অবস্থায় আমাকে সাহায্য করো তাহলে আমি সব ধরণের খারাপ কাজ ৩ সপ্তাহের জন্য ছেড়ে দিবো এবং আমি আজকে কুরআন পড়ে দেখবো”

সেদিনই তিনি কুরআন খুলে, অনেকটা অলৌকিক ভাবে যে আয়াতটা সামনে পেলেন সেটা হলো,

“নিশ্চয়ই কষ্টের সাথে রয়েছে স্বস্তি”

মসজিদ নির্মাণ

এই আয়াতটা পড়ে তার মনে হলো, আয়াতটা যেন শুধু তার জন্যই মাত্র নাযিল হচ্ছে!
তিনি এমন একটা সময়ে মিউজিক ছাড়েন যখন তিনি তার সফলতার চূড়ায়। তার মনে ইসলামের বীজ রোপণের আরেকজন উসিলা ছিলো তার বেস্টফ্রেন্ড। সে ছিলো মুসলিম। সেই বন্ধু হজ্জ্ব করে এসে সম্পূর্ণ বদলে গিয়েছিলো। সর্বোচ্চ চেষ্টা করছিলো ইসলাম পালনের। এই ঘটনাটা রাহিম কে প্রভাবিত করেছিলো।
তিনি চেষ্টা করছিলেন মাকে কোনো ভাবে ইসলামের দিকে আকৃষ্ট করা যায় কিনা। তাঁর মা ইসলামের যে বিষয়টাতে সর্বপ্রথম আকৃষ্ট হয়েছিলেন সেটা হলো ইসলামের দাফন পদ্ধতি! আলহামদুলিল্লাহ, ইসলামের প্রতিটি বিধানই মানুষকে আকর্ষণ করার ক্ষমতা রাখে।
পরবর্তীতে তাঁর ক্যান্সার আক্রান্ত মা মৃত্যুর ২-৩ দিন আগে শাহাদাহ পাঠ করেছিলেন। এই ঘটনাটা পরিচিতি পেয়েছিলো, এমনকি একজন ওনার মায়ের নামে একটা মসজিদও নির্মাণ করেছেন।

রাহিম জাং পুরোদমে মিডিয়া সেক্টরে এখনো কাজ করে যাচ্ছেন। ‘ইসলাম চ্যানেল’ এ তিনি একটা ইসলামিক শো হোস্ট করেছেন। সারাবিশ্বের সাথে মানুষদের সাথে কাবা ঘর, হজ্জ্ব পালন, কুরআনের ছাপাখানা সহ অনেক কিছু প্রচার করেছেন টেলিভিশনে।

লেখকঃ তাহমিদ ইসলাম

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *