মেডিকেল কলেজ ভর্তি পরীক্ষার বিস্তারিত তথ্য
সরকারি মেডিকেল কলেজে পড়ার স্বপ্ন দেখে লক্ষাধিক শিক্ষার্থী।কিন্তু, স্বপ্ন পূরণ হয় মাত্র ৪ হাজার ৩৫০ জন শিক্ষার্থীর। যারা মেডিকেল কলেজ ভর্তি পরীক্ষায় সফল হতে চাও তারা মূল বইয়ের সাথে ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে তুলো।
মেডিকেল কলেজ ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের যোগ্যতাঃ
মেডি’কেল কলেজ ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য এসএসসি এবং এইচএসসি মিলে মোট জিপিএ ৯ হলেই অংশগ্রহণ করা যায়।তবে এইচএসসি পরীক্ষায় জীববিজ্ঞান সাবজেক্টে কমপক্ষে জিপিএ ৩.৫০ থাকতে হবে। মোট জিপিএ ৯ নিয়ে মেডিকেল কলেজ ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা গেলেও চান্স পাওয়া খুবই দুরুহ ব্যাপার। সহজে চান্স পাওয়ার জন্য এসএসসি এবং এইচএসসি মিলিয়ে মোট জিপিএ ১০ হলে ভালো হয়।
মেডিকেল কলেজ ভর্তি পরীক্ষার মানবন্টনঃ
এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় ১০০ নম্বরের MCQ পরীক্ষা হয়। সময় দেওয়া হয় ১ ঘন্টা।প্রতিটি প্রশ্নের মান ১।
ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ভিত্তিক নস্বর বিন্যাসঃ
- জীববিজ্ঞান – ৩০ নম্বর
- রসায়ন – ২৫ নম্বর
- পদার্থ – ২০ নম্বর
- ইংরেজি – ১৫ নম্বর
- সাধারণ জ্ঞান – ১০ নম্বর
(সাধারণ জ্ঞানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধ ইত্যাদি নিয়ে প্রশ্ন করা হয়ে থাকে)
উক্ত ভর্তি পরীক্ষায় পাশ নম্বর ৪০।এর কম পেলে মেধাতালিকায় তার নাম আসবে না।
এবং প্রতিটি ভূল উত্তরের জন্য ০.২৫ নম্বর কাটা হয়।
ঢাবি অধিভুক্ত সাত(৭) কলেজে ভর্তি পরীক্ষার বিস্তারিত তথ্য
এসএসসি এবং এইচএসসি রেজাল্ট থেকে নম্বর যোগ করা হয় কিভাবে?
এক্ষেত্রে এসএসসি পরীক্ষায় প্রাপ্ত রেজাল্ট কে ১৫ দিয়ে এবং এইচএসসি রেজাল্ট কে ২৫ দিয়ে গুণ করা হয়।
তোমার যদি এসএসসি এবং এইচএসসি রেজাল্ট জিপিএ ৫ হয় তাহলে,
এসএসসি ৫ ×১৫ = ৭৫ নম্বর
এইচএসসি ৫ × ২৫= ১২৫ নম্বর
এখানে মোট ২০০ নম্বর এবং ভর্তি পরীক্ষার নম্বর ১০০। এই,মোট ৩০০ নম্বর।
এখন,তোমার প্রাপ্ত জিপিএ কম হলে নম্বর কমবে আর জিপিএ ৫ হলে সমান থাকবে।
সরকারি মেডিকেল কলেজ ভর্তি পরীক্ষায় সেকেন্ড টাইম পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা যায় সেক্ষেত্রে সেকেন্ড টাইমারের মোট প্রাপ্ত নম্বর থেকে ৫ নম্বর কর্তন করা হয়।
সরকারি মেডিকেল কলেজের মোট আসন সংখ্যা কত ?
সরকারী মেডিকেল কলেজের মোট আসন সংখ্যা হচ্ছে ৪ হাজার ৩৫০ টি।তার মধ্যে ৪ হাজার ২৩০ টি হচ্ছে সাধারণ আসন।
১২০ টি আসন সংরক্ষিত বিভিন্ন কোটার জন্য। তার মধ্যে ৮৭ টি আসনই মুক্তিযোদ্ধা কোটার জন্য সংরক্ষিত।
কোন মেডিকেল কলেজে কতটি আসন সংখ্যা রয়েছে?
- ঢাকা মেডিকেল কলেজ- ২৩০ টি আসন।
- স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ – ২৩০ টি আসন।
- ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ – ২৩০ টি আসন।
- রাজশাহী মেডিকেল কলেজ – ২৩০ টি আসন।
- চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ – ২৩০ টি আসন।
- সিলেট এম এ জি ওসমানি মেডিকেল কলেজ – ২৩০ টি আসন।
- শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ – ২৩০ টি আসন।
- রংপুর মেডিকেল কলেজ – ২৩০ টি আসন।
- শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ – ২০০ টি আসন।
- কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ – ১৮০ টি আসন।
- খুলনা মেডিকেল কলেজ – ১৮০ টি আসন।
- শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ – ১৮০ টি আসন।
- ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ – ১৮০ টি আসন।
- এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ – ১৮০ টি আসন।
দেশের অন্যান্য মেডিকেল কলেজ গুলোতে আসন সংখ্যা ১০০ এর নিচে।
মেডিকেল কলেজ ভর্তি পরীক্ষায় আবেদনকারীর সংখ্যা কত ?
১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে মেডিকেল কলেজ ভর্তি পরীক্ষায় মোট আবেদনকারীর সংখ্যা ছিল ১ লক্ষ ২২ হাজার ৮৭৪ জন।
কিন্তু, সবাই মেডিকেল কলেজ ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেনি। অংশগ্রহণ করেছিল ১ লক্ষ ১৬ হাজার ৮৫৬ জন।
যদিও ১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে অটোপাশের কারণে জিপিএ ৫ এর সংখ্যা বেশি ছিল তবুও অন্যান্য শিক্ষাবর্ষেও আবেদনকারীর সংখ্যা খুব একটা কম হবে না।প্রায় এরকমই হবে।
দেশের সরকারি ৪৭ টি মেডিকেল কলেজে আসন সংখ্যা ৪হাজার ৩ শত ৫০ জন। আর অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা ১ লক্ষ ১৬ হাজার ৮৫৬ জন।
অর্থাৎ, ১৯-২০ সেশনে প্রতিটি আসনের জন্য লড়াই করেছে ২৭ জন শিক্ষার্থী। তাহলে,নিশ্চয় উপলব্ধি করতে পেরেছ প্রতিযোগিতা কেমন!
পরিশেষে,মূল বইয়ের সাথে সম্পর্ক থাকলে আর ভালোভাবে পড়াশোনা এবং চর্চা করলে প্রতিযোগি যতই হোক না কেন মেডিকেল কলেজ ভর্তি পরীক্ষায় নিজের আসন নিশ্চিত করা খুবই সহজ।কারণ,অংশগ্রহণকারী সকলেই সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে অংশগ্রহণ করে না।যে ভালোভাবে সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে যুদ্ধ নামে সেই সফল হয় সরকারি মেডিকেল কলেজ ভর্তি পরীক্ষায়।
সবার জন্য শুভ কামনা রইলো