ইসলামিক স্টাডিজ সাবজেক্টটি আমাদের অতি পরিচিত। ইসলামিক স্টাডিজ সাবজেক্ট টি আমাদেরকে স্কুল লাইফ থেকেই পড়ানো হয়। তাই,আমাদের ইসলামিক স্টাডিজ সাবজেক্টের নামের মধ্যেই লুকায়িত রয়েছে যে এই সাবজেক্টে কি শিক্ষা দেওয়া হয়।
মানবজীবনে এই সাবজেক্টটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সাবজেক্ট। বিশ্বের প্রতিটি শিশুই মুসলমান হয়ে জন্মগ্রহণ করে। তারপর সে তার পিতা-মাতা, পরিবেশ অনুযায়ী অন্যান্য ধর্ম গ্রহণ করে। কিন্তু,প্রত্যেকের উচিত নিজের বিবেক দিয়ে চিন্তা করে এবং জ্ঞান-অর্জন করে কোন ধর্ম গ্রহণ করা।
ইসলামিক স্টাডিজ সাবজেক্টটি পড়ে আপনি নিজের ব্যক্তিগত জীবন, সামাজিক জীবন, পারিবারিক জীবন, রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে কি করণীয়, কিভাবে সন্তান-সন্ততি কে যোগ্য মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবেন,রাষ্ট্র পরিচালনার আইন,নিজের সৃষ্টিকর্তার ইবাদত করতে হয় সবকিছু জানতে পারবেন। পৃথিবীর এমন কোন বিষয় নেই যা এই সাবজেক্টে আলোচনা করা হয়নি। মানুষের জীবনের সর্বক্ষেত্রেই এই সাবজেক্টের প্রয়োজন।
📖ইসলামিক স্টাডিজ সাবজেক্টে যা পড়ানো হয়?
- বিশ্বের শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ আল কুরআন এবং তাফসীর গ্রন্থাদি এই সাবজেক্টে পড়ানো হয়।
- ৬ টি বিশুদ্ধ হাদিস গ্রন্থ যা সিহাহ সিত্তাহ নামে পরিচিত।
- মুসলিম বিশ্বের ইতিহাস,ফিকাহ গ্রন্থসমূহ ,হাদিস
- ইসলামী আইন
- এছাড়াও অর্থনীতি,রাষ্ট্রবিজ্ঞান,ইংলিশ,স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস ইত্যাদি সাবজেক্টও পড়ানো হয় ইসলামিক স্টাডিজ ডিপার্টমেন্টের স্টুডেন্টদের।
সাম্প্রতিক সময়ে লক্ষ্য করলে দেখতে পাবে ব্রুনাই,আফগানিস্তান এই দিকে শরীয়া আইন জারি করা হয়েছে। ক্রমাগতভাবে এভাবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ শরীয়া আইন অর্থাৎ সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত যে আইন এটা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়বে।
কারণ,গণতন্ত্র, প্রজাতন্ত্র,রাজতন্ত্র, সামন্ততন্ত্র,একনায়কতন্ত্র যাই বলো না কেন এর সবই মানুষের বানানো আইন। এগুলোতে ভুল থাকবেই।কিন্তু, সৃষ্টিকর্তার বানানো আইন কখনো ভুল হওয়া সম্ভব নয়। দিনদিন ইসলামের প্রসার হচ্ছে আরও হবে।তাই,ইসলামিক স্টাডিজ সাবজেক্ট পেলে এটা হাত ছাড়া করা এক ধরণের বোকামি করা হবে।
📖উচ্চশিক্ষার সুযোগ-
বাংলাদেশের বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তো মাস্টার্স, পিএইচডি করার সুযোগ রয়েছেই। তুমি যদি চাও তাহলে আরও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে স্কলারশিপ নিয়ে উচ্চ শিক্ষার জন্য যেতে পারবে।
যেমন-
- সৌদি আরবে মদিনা ইউনিভার্সিটি
- মিশরের আল আজহার ইউনিভার্সিটি
- সৌদি আরবের মক্কা ইউনিভার্সিটি
- তুরষ্কের আঙ্কারা ইউনিভার্সিটি
এছাড়াও মালয়েশিয়া, আরব-আমিরাত,কাতার,ওমান ইত্যাদি সহ অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটিতেও উচ্চ শিক্ষার জন্য যেতে পারবে।
চাকরির সুযোগ-
ইসলামিক স্টাডিজে পড়ে চাকরির জন্য চিন্তা করতে হয় না। কারণ,এই সাবজেক্ট পড়ে বের হলে সামনে অনেক সুযোগ থাকে। যেমন-
- শিক্ষককা করতে পারবেন। কারণ,ক্লাস থ্রি থেকে ইউনিভার্সিটি পর্যন্ত এই সাবজেক্ট পড়ানো হয়।
- ইসলামি ব্যাংকগুলতে জব করতে পারবেন। এই সাবজেক্টে পড়ার কারণে ইসলামি ব্যাংকগুলো আপনাকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিবে।
- ইচ্ছে থাকলে ইমামতিও করতে পারবেন।
- বিসিএসের সুযোগ তো রয়েছেই।
- চাইলে গবেষক হিসেবেও কাজ করতে পারবেন।আরও অনেক ক্ষেত্রে জব করার সুযোগ রয়েছে।
- বিভিন্ন কর্পোরেট জব করতে পারবেন।
- সরকারি /বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে জব করতে পারবেন।
- মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিগুলোতে জব করতে পারবেন।
- মাদ্রাসায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে জব করতে পারবেন।
মানবিকের অন্য সব সাবজেক্ট থেকে এই সাবজেক্ট তুলনামূলক সহজ এবং রেজাল্ট ভালো করাও সহজ।
এই সাবজেক্টে পড়ে বিসিএসসহ অন্যান্য চাকরির প্রস্তুতি নেওয়াও অনেক সহজ।
যারা এই সাবজেক্ট কে অবহেলার চোখে দেখে তারা নিতান্তই মূর্খ।তারা আসলে এই সাবজেক্ট সম্পর্কে ধারণা রাখে না।তাই,বিরুপ মন্তব্য কবে।যদি জানতো তবে কখনোই অবহেলার চোখে দেখতো না।
মানবিক ইউনিটের বেস্ট দুটি সাবজেক্ট হচ্ছে ইসলামিক স্টাডিজ এবং ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি।
রাষ্ট্রবিজ্ঞান ,সমাজকর্ম, অর্থনীতি, ইতিহাস যাই বলেন না কেন সেগুলোর চেয়ে ইসলামিক স্টাডিজ সাবজেক্ট অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
পরিশেষে, বলবো মেডিকেল,ইঞ্জিনিয়ারিং ছাড়া মানবিকের যে সাবজেক্টেই পড়াশোনা করো না কেন চাকরির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে না পারলে কেউ চাকরি দিবে না। তাই,তুলনামূলক সহজ সাবজেক্টে পড়ে সিজিপিএ ভালো করা এবং তার পাশাপাশি চাকরি পরীক্ষার জন্য ভালোভাবে প্রস্তুতি নেওয়ায় বুদ্ধিমানের কাজ। এইদিক থেকে বিবেচনা করলে ইসলামিক স্টাডিজ এবং ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি সাবজেক্ট বিকল্প নেই বললেই চলে।
যারা ইসলামিক স্টাডিজ সাবজেক্ট পেয়েছ তারা দুশ্চিন্তা না করে নিশ্চিতভাবে ভর্তি হয়ে যাও।নিজের ইচ্ছের সাথে চেষ্টা থাকলে মহান সৃষ্টিকর্তা ভালো কিছু দিবেন ইনশাআল্লাহ।
ইসলামিক স্টাডিজ সাবজেক্ট টি পড়তেও অনেক মজার।যতই পড়বে ততই পড়ার আগ্রহ জাগবে।পড়া এবং শিক্ষা গ্রহণের জন্য সেরা একটি সাবজেক্ট ইসলামিক স্টাডিজ সাবজেক্ট টি।
৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
মুসাফির সাজ্জাদ