শরিয়ত অর্থ কি? শরিয়তের গুরুত্ব এবং এর পরিধি

শরিয়ত একটি আরবী শব্দ। এর অর্থ পথ বা রাস্তা। এটি জীবন পদ্ধতি, আইনকানুন বিধি বিধান অর্থ ব্যবহৃত হয়। ব্যাপক অর্থে শরিয়ত হলো এমন সুদৃঢ় ও সুস্পষ্ট পথ, যা অনুসরণ করলে মানুষ সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে নিজ গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে।

শরিয়ত কি?

ইসলামী পরিভাষায় ইসলামিক কার্যনীতি জীবন পদ্ধতিকে শরিয়ত বলা হয়। অন্য কথায়, ইসলামী আইন কানুন বিধিবিধানকে একত্রে শরিয়ত বলা হয়। অর্থাৎ মহান আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সা:) যেসব আদেশ-নিষেধ ও পথনির্দেশনা মানুষকে জীবন পরিচালনার জন্য প্রদান করেছেন তাকে শরিয়ত বলে।

শরিয়ত সম্পর্কে আল্লাহ তা’আলা বলেন, “অতঃপর আমি আপনাকে শরীয়তের উপর প্রতিষ্ঠিত করেছি। সুতরাং আপনি তার অনুসরণ করুন। আর আপনি অজ্ঞদের খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করবেন না। (সূরা আল জাসিয়া, আয়াত 18)

শরিয়তের গুরুত্ব

মানবজীবনের শরিতের গুরুত্ব অপরিসীম। শরীয়ত হলো মহান আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রদত্ত আদেশ-নিষেধ ও বিধি-বিধান। সুতরাং শরিয়ত মেনে চললে আল্লাহ তায়লা ও তাঁর রাসূল খুশি হন। অন্যদিকে শরিয়ত অস্বীকার করা আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর রাসূল কে অস্বীকার করার শামিল। কোন মুসলমান এরূপ কাজ করতে পারে না। এমন কি শরিয়তের এক অংশ পালন করা আর অন্য অংশ অস্বীকার করাও মারাত্মক পাপ। যে ব্যক্তি এরূপ করে তার জন্য কঠিন শাস্তি রয়েছে। আল্লাহ তা’আলা বলেন, “তবে কি তোমরা কিতাবের কিছু অংশ বিশ্বাস করো, আর কিছু অংশ প্রত্যাখ্যান করো? তোমাদের মধ্যে যারা এরূপ করে তাদের একমাত্র প্রতিফল হলো পার্থিব জীবনে লাঞ্ছনা-গঞ্জনা। আর কেয়ামতের দিন তারা কঠিন শাস্তির দিকে নিক্ষিপ্ত হবে।” (সূরা আল বাকারা, আয়াত 85)

শরীয়ত হল জীবন পরিচালনার দিকনির্দেশনা। এর দ্বারা জীবনের নানা ক্ষেত্রে ইসলামী বিধি নিষেধ জানা যায়। কোনটি হালাল আর কোনটি হারাম তা সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পাওয়া যায়। ফরজ, ওয়াজীব, সুন্নত, নফল ইত্যাদি বিষয়ের জ্ঞান ও শরীয়তের শিক্ষার মাধ্যমেই লাভ করা যায়। উত্তম চরিত্র ও নৈতিকতার নানা শিক্ষা ও ইসলামী শরীয়তে বিবৃত হয়েছে। সুতরাং সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে জীবন যাপনের জন্য শরীয়ত অপরিহার্য।

শরীয়তের উৎস সমূহ

শরীয়ত হলো ইসলামী জীবন পদ্ধতি। এটি আল্লাহতালা ও তাঁর রাসূলের আদেশ-নিষেধ ও দিকনির্দেশনা সমষ্টি। এর থেকে বোঝা যায়, শরীয়তের প্রধান উৎস হল দুটি। একটি আল-কোরআন এবং অপরটি হচ্ছে আল হাদিস বা সুন্নাহ।

পরবর্তীতে কুরআন ও সুন্নাহের স্বীকৃতি ও দিক নির্দেশনার ভিত্তিতে শরীয়তের আরও দুটি উৎস নির্ধারণ করা হয়। এগুলো হলো ইজমা এবং কিয়াস। অতএব আমরা বলতে পারি শরীয়তের উৎস হলো চারটি।

  1. আল কোরআন
  2. আল হাদিস বা সুন্নাহ
  3. ইজমা
  4. কিয়াস

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *