আজ আমাদের আলোচ্য বিষয় হলঃ হিজরত কি? হিজরত শব্দের অর্থ কি? হিজরত কত প্রকার ও কি কি?
হিজরত শব্দের অর্থ কি?
হিজরত আরবী শব্দ। হিজরুন শব্দ হতে মাসদার এটি। এর মূল বর্ণ হা, জীম, রা। এর অর্থ হচ্ছে ত্যাগ করা, ছেড়ে দেওয়া, ছিন্ন করা, পরিত্যাগ করা, সম্পর্ক শেষ করা, এক স্থান থেকে অন্য স্থানে চলে যাওয়া, দেশত্যাগ করা ইত্যাদি।
হিজরত কি?
কামুসুল ফিকহ্ এর গ্রন্থাগারের মতে, “হিজরত বলতে কাফির শাসিত দেশের গন্ডি পেরিয়ে ইসলামী রাষ্ট্রে গমন করা।”
আলামা খাত্তাবী বলেন, “রাসূল (সাঃ) এর সাথে আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধের জন্য ধৈর্য্যের সাথে বের হওয়ার নামই হিজরত।”
আল্লামা ইবনে হাজার আসকালীন বলেন, “আল্লাহ যা নিষেধ করেছেন তা পরিত্যাগ করার নামই হিজরত।”
এক কথায়, ইসলাম প্রচারের স্বার্থে নিজ দেশ ছেড়ে অন্য দেশে চলে যাওয়ার নামই হিজরত।
হিজরতের প্রকারভেদ
হিজরত মোট ৫ প্রকার। এগুলো হলো –
- মক্কা থেকে মদীনায় হিজরত
- পাপ কাজ থেকে বিরত থাকা
- ইসলাম প্রচারের জন্য প্রতিকূল স্থান থেকে অনুকূলে গমন করা
- শান্তি লাভের জন্য এক মুসলিম দেশ থেকে অন্য মুসলিম দেশে গমন করা
- প্রবৃত্তির চাহিদা পরিত্যাগ করে আল্লাহর নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে নিজেকে উৎসর্গ করা।
মুহাম্মাদ (সাঃ) এর হিজরত
মক্কার শ্ত্রুদের দ্বারা মুহাম্মাদ (সাঃ) কে হত্যা করার পরিকল্পনার কথা জানতে পেরে ৬২২ সালের জুন মাসের শেষের দিকে নবী মুহাম্মাদ তার একান্ত অনুসারী আবু বকর সিদ্দিকীকে সাথে নিয়ে গোপনে মক্কা ত্যাগ করেন। মুহাম্মাদ এবং তার অনুসারীরা মক্কা থেকে উত্তরে অবস্থিত ইয়াসরিব শহরে গমন করে। শীঘ্রই ইয়াসরিব-এর নাম হয়ে যায় মদীনাত উন-নবী, যার অর্থ: “নবীর শহর”, কিন্তু কিছুদিন পরই উন-নবী বাদ দিয়ে দেয়া হয়, ফলে এর নাম হয় মদীনা, যার অর্থ: শহর।
ইসলামের ইতিহাসে মহানবী (সাঃ) এর আদেশে সাহাবায়ে কেরাম এবং তিনি নিজেও হিজরত করেছেন। এটি ইসলামে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে ঈমানী দৃঢ়তা, একনিষ্ঠতা ও আত্মত্যাগের বহিঃপ্রকাশ ঘটে। মোটকথা, ইসলামের অস্তিত্বের জন্য হিজরত একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।