লাইলাতুল কদরের বা শবে কদরের গুরুত্ব ও তাৎপর্য

লাইলাতুল কদর অর্থ কি

হাজার বছরের সর্বশ্রেষ্ঠ বরকতময় রাত হল শবে কদর । পবিত্র আল-কুরআন এ রাতেই প্রথম নাযিল হয়েছিল । আরবিতে লাইলাতুল কদর বা   কদর রজনী , এর  ফারসি শব্দ হলো শবে কদর । এর অর্থ সম্মানিত মর্যাদাপূর্ণ, মহিমান্বিত, সম্ভাবনাময়, ভাগ্য নির্ধারণী ।পবিত্র কুরআন নাযিলের মাস রমজান মাস, কোরআন নাজিল  এর রাত শবে কদর । এ রাতে  প্রথম পবিত্র মক্কা মুকাররমার জাবালে রহমত হীরা পর্বতের গুহায় আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের পক্ষ থেকে জিব্রাইল (আঃ) মাধ্যমে বিশ্ব নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর প্রতি  কোরআন কারীম  অবর্তনের  সূচনা হয় ।

মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, পবিত্র রমজান মাস, !যে মাসে কোরআন নাজিল হয়েছে মানবের দিশারী রূপে নির্দেশন হিসেবে দিয়েছেন নবী করিম সাঃ বলেছেন তোমরা রমজানের শেষ দশ দিকের বেজো রাতগুলোকে  শবে কদরের সন্ধান করো । ২১,২৩,২৫,২৭,২৯  । শবে কদর পবিত্র কুরআন নাযিল হয়েছে ।মূলত এজন্যে রমজান মাস কিংবা এ রাতের এত গুরুত্ব ও তাৎপর্য । পবিত্র কোরআন যদি রমজান ব্যতীত অন্য কোন মাসে নাযিল হতো তাহলে ওই মাসের গুরুত্ব ফজিলত থাকতো । এ মাসের গুরুত্ব এমন হাজার মাস অপেক্ষায় উত্তম । রমজানের শেষ শুক্রবার জুম্মাতুল বিদ্যা পালিত হয় ।তাই উভয়ের গুরুত্ব তাৎপর্য অনেক । আল্লাহতালা পবিত্র কুরআনে কদর নামে একটি সূরা নাযিল করেছেন । আল্লাহতালা এরশাদ করেছেন আমি একে নাযিল করেছি শবে কদর হিসেবে । কদর হল হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ মাস ।

কদরের আরেক অর্থ হলো তাকদীর ও হুকুম । সৃষ্টির প্রথম দিনে প্রত্যেক মানুষের ভাগ্যে যা কিছু লেখা থাকে,   এক রমজান হতে অপর রমজান পর্যন্ত তা সরবরাহের হুকুম ওর দায়-দায়িত্ব আল্লাহ পাকের ফেরেশতাদের দিয়ে দেন ।

লাইলাতুল কদর সম্পর্কে হাদিস

হাদিসে রয়েছে পবিত্র রমজান মাসের শেষ দশকের বেজোর রজনীতে শবে কদর নিহিত । কথা হলো, তাহলে আমরা রমজানের ২৬ তম দিবাগত রাত কেন শবে কদর উদযাপনে এত ব্যস্ত হয়ে পড়ি ?

শবে কদরকে গোপন রাখার মধ্যে রয়েছে আল্লাহ তায়ালার বিরাট  ও রহস্য আছে । প্রত্যেক মূল্যবান বস্তু হাসিল করা যেমন কষ্টসাধ্য ব্যাপার, তেমনি আল্লাহর উদ্দেশ্যে হলো এই মহামূল্যবান রাতের অনুসন্ধানে বান্দাগণ সাধনা করুক রাতের জন্য ৩০ টি রাত জাগ্রত থাকুক । মানুষ দুনিয়ায় কত তুচ্ছ চোখ জিনিসের জন্য কত রাতে নিন্দা হারাম করে দেয় । এজন্য উচিত হল শেষ দশকের প্রতি বেজোড়াতে জাগ্রত থেকে কিছু জিকির- আজকার, তসবি, কোরআন তেলাওয়াত নফল নামাজ প্রভৃতির মাধ্যমে শবে   কদরের ফজিলত অর্জনে চেষ্টা  করা । অনন্ত এশা ও ফজর নামাজ জামাতের সাথে আদায় করা । হাদিসে রয়েছে এবং ফজরের  নামাজ জামাতে আদায় করা প্রকারান্তরে সম্পূর্ণ রাত এবাদত করার সমতুল্য ।

শবে কদরের ফজিলত সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে অল্পকথার ব্যাপক কথা বলা হয়েছে-শবে কদর হাজার মাস অপেক্ষায় উত্তম । তাই শবে কদরের ইবাদত মানব জীবনের পাপ মুক্তি ও আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টির জন্য অপরিসীম কল্যাণকর। শবে কদরের ইবাদতের মধ্যে রয়েছে নফল নামাজ আদায় করা, কুরআন তেলাওয়াত করা, জিকির করা ইত্যাদি । তাইতো প্রতিটি মুসলমানের উচিত এ রাতে আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করে বা প্রার্থী ক্ষমা করে নেওয়া । কারণ নবী করীম সাল্লাল্লাহু বলেছেন যে ব্যক্তি রমজানের মধ্যে মাস  পেয়েও তার পাশে ক্ষমা করে নিতে ব্যর্থ হয় তার ধ্বংস অনিবার্য ।

বছরে সর্বশ্রেষ্ঠ বরকতময় রাত হল শবে কদর । আরবিতে লাইলাতুল কদর বা কদর রজনী।  রজনী অর্থ সম্মানিত  মর্যাদা পূর্ণ । পবিত্র এ রাতে ইবাদত বন্দুকের মাধ্যমে আমরা মহান আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি লাভ করতে পারি ।অর্জন করতে পারি তার অসীম রহমত বরকত ও মাগফেরাত । পবিত্র শবে কদরের রাত ধর্মপ্রাণ মুসলমান আল্লাহর নৈকট্ঠা রহমত লাভের আশায়  ইবাদত বন্দেগী করেন । পবিত্র কুরআন নাযিলের মাস রমজান মাস, কোরআন নাজিলের  রাত শবে কদর। এ রাতে প্রথম পবিত্র মক্কা  জাবালে রহমত তথা হীরা পরবর্তী গুহায় আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের পক্ষ থেকে জিব্রাইল  ।(আ.)মাধ্যমে বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম এর প্রতি কোরান নাযিল হয় । তাই আমরা মুসলমানগণ সবই কদরের বা লাইলাতুল কদরের রাতে বেশি বেশি করে  ইবাদত করব ।আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীকে ইবাদত করতে হবে । স্বয়ং  শবে কদরের গুরুত্ব ও তাৎপর্য ও ফজিলত লাভের আশায় আমরা এই রাতকে ইবাদত বন্দেগির মাধ্যমে  কেটে দিব।এই রাত হচ্ছে হাজার বছরের অপেক্ষা শ্রেষ্ঠতম মাস ।তাই আমরা শবে কদরের পূর্ণ সওয়াবের আশায় বেশি বেশি করে  ইবাদত করব ।

আশা করি আপনাদর এই পোষ্টের মাধ্যমে শবে কদর বা লাইলাতুল কদরের গুরুত্ব সম্পর্কে তুলে ধরলাম যাতে করে আপনারা এই ইবাদতগুলো করতে পারেন সোয়াবের আশায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *