রাষ্ট্রবিজ্ঞান একটি গতিশীল শাস্ত্র। এর ইংরেজি প্রতিশব্দ হলো Political Science. এটি গ্রীক শব্দ Polis থেকে এসেছে। এর অর্থ নগর। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সংজ্ঞা ও ধারণা তার আলােচনা ক্ষেত্রের পরিধির দ্বারাই নির্ধারিত হয়। অন্যান্য সামাজিক বিজ্ঞানের ন্যায় রাষ্ট্রবিজ্ঞানও হল গতিশীল বিজ্ঞান। মানুষের সমাজ ও সভ্যতার ক্রমবিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলােচনার পরিধিও পরিমার্জিত এবং পরিবর্তিত হয়েছে। তার ফলে রাষ্ট্রবিজ্ঞান সম্বন্ধে ধারণারও বিবর্তন ঘটেছে। এই কারণে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বিভিন্ন সংজ্ঞার সৃষ্টি হয়েছে।
রাষ্ট্রবিজ্ঞান কাকে বলে?
প্রাচীন গ্রীস ও রোমে প্রত্যেকটি নগরকে একটি করে রাষ্ট্র হিসেবে বিবেচনা করা হতো। তাই শাব্দিকভাবে বলা যায় যে, নগররাষ্ট্র সম্পর্কে এবং নগররাষ্ট্রের যাবতীয় সমস্যা ও সমাধান নিয়ে যে শাস্ত্রে আলোচনা করা হয় তাকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বলে।
যে বিজ্ঞান রাষ্ট্র সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা করে এবং রাষ্ট্রের কার্যাবলি ও জনগণের অধিকার নিয়ে আলোচনা করে তাকে রাষ্ট্র বিজ্ঞান বলে।
পল জানের ভাষায়, “রাষ্ট্রবিজ্ঞান একটি সামাজিক বিজ্ঞান এবং ইহা রাষ্ট্রের উদ্ভব ও সরকারের বৈশিষ্ট্য লইয়া আলোচনা করে।”
অধ্যাপক গিলক্রিস্টের মতে, “Political science deals with the state and government.”
অধ্যাপক গেটেলের মতে, “রাষ্ট্রবিজ্ঞান রাষ্ট্রের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যত নিয়ে আলোচনা করে।”
অধ্যাপক গার্নারের মতে, “রাষ্ট্রের লইয়াই রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচনার সূত্রপাত ও উপসংহার।”
অধ্যাপক বার্জেস বলেন, “রাষ্ট্রবিজ্ঞান হলো স্বাধীনতা ও সার্বভৌমিকতার বিজ্ঞান।”
আধুনিক লেখকের মতে, “যেখানেই সামাজিক সম্পর্কের মধ্যে ক্ষমতা ব্যবহার আছে সেখানেই রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ক্ষেত্র প্রসারিত। বিভিন্ন প্রকার সামাজিক সংস্থায় কীভাবে ক্ষমতার ব্যবহার দ্বারা কর্তৃত্ব স্থাপন করা হয় এবং মানুষ কীভাবে কর্তৃত্বের সহিত নিজের জীবনকে মানাইয়া লয়, তাহাই রাষ্ট্রবিজ্ঞানে আলোচনা হয়।”