জাতীয় আয়ের ধারণা বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে মোট জাতীয় উৎপাদন (GNP) এবং নিট জাতীয় উৎপাদন (NNP) ধারণা দুটি অত্যন্ত গুরুত্ব বহন করে। উভয় ধারণার মধ্যে কিছু মৌলিক পার্থক্য রয়েছে- যা নিচে আলোচনা করা হলো:
- কোনো নির্দিষ্ট সময়ে (সাধারণত এক বছরে) কোনো দেশে যে পরিমাণ চূড়ান্ত দ্রব্যসামগ্রী ও সেবাকর্ম উৎপাদিত হয় তার সমষ্টিকে মোট জাতীয় উৎপাদন (GNP) বলা হয়। মোট জাতীয় উৎপাদনের অর্থমূল্যকে মোট জাতীয় আয় (GNI) বলা হয়। অপরদিকে, মোট জাতীয় উৎপাদন থেকে মূলধন সামগ্রীর ক্ষয়ক্ষতিজনিত ব্যয় বা অবচয়জনিত ব্যয় বাদ দিলে যা অবশিষ্ট থাকে তাকে নিট জাতীয় উৎপাদন (NNP) বলা হয়। নিট জাতীয় উৎপাদনের আর্থিক মূল্যকে নিট জাতীয় আয় (NNI) বলা হয়।
- মোট জাতীয় আয়ের পরিধি তুলনামূলকভাবে বিস্তৃত। কিন্তু নিট জাতীয় আয়ের পরিধি তুলনামূলকভাবে সংকীর্ণ।
- GNI পরিমাপ করা সহজ। কিন্তু NNI পরিমাপ করা বেশ কঠিন।
- GNI থেকে কোনো দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার সঠিক নির্দেশনা পাওয়া যায় না। কিন্তু NNI থেকে তা পাওয়া যায়।
- GNP দিয়ে একটি দেশকে অন্য দেশের সাথে তুলনা করা যায় না। কিন্তু NNP দ্বারা একটি দেশকে অন্য দেশের সাথে তুলনা করা যায়।
- GNI থেকে একটি দেশের জনগণের জীবনযাত্রার মান জানা যায় না। কিন্তু NNI দ্বারা কোনো দেশের জনগণের জীবনযাত্রার মান জানা যায়।
- কোনো দেশের জনগণের মাথাপিছু আয় GNI থেকে বের করা যায় না। কিন্তু NNI থেকে মাথাপিছু আয় বের করা যায়।
- মোট জাতীয় উৎপাদনের সূত্র হলো: GNI = NNI + অবচয়জনিত ব্যয়। পক্ষান্তরে, নিট জাতীয় উৎপাদনের সূত্র হলো: NNI = GNI – অবচয়জনিত ব্যয়।