সামাজিক, আত্মাজৈবনিক, রাজনৈতিক এবং ত্রয়ী উপন্যাস বলতে কী বোঝায়?

সামাজিক উপন্যাসঃ সামাজিক উপন্যাস হচ্ছে উপন্যাসের একটি বিশেষ শ্রেণী, যেখানে সামাজিক বিষয়, রীতি-নীতি, ব্যক্তি মানুষের দ্বন্দ্ব, আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রধান্য থাকে। বঙ্কিমচন্দ্রের ‘কৃষ্ণকান্তের উইল’, রবীন্দ্রনাথের ‘চোখের বালি’, শরৎচন্দ্রের ‘গৃহদাহ’, নজিবর রহমানের ‘আনোয়ারা’, কাজী ইমদাদুল হকের ‘আবদুল্লাহ’, সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ ‘লালসালু’ প্রভৃতি সামাজিক উপন্যাসের উদাহরণ।

আত্মাজৈবনিক উপন্যাসঃ ঔপন্যাসিক তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের নানা ঘাত-প্রতিঘাতকে যখন আন্তরিক শিল্পকুশতায় উপন্যাসে রূপদান করেন তখন তাকে আত্মাজৈবনিক উপন্যাস বলে। এ ধরনের উপন্যাসে লেখকের ঔপন্যাসিক কল্পনার উপর প্রভাব বিস্তার করে থাকে তাঁর ব্যক্তি জীবনের নানা অন্তর্ময় বৈশিষ্ট্য মন্ডিত ঘটনাসূত্র। অপরাজেয় কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘শ্রীকান্ত’, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘পথের পাঁচালী’, ‘অপরাজিত’ এ ধরনের উপন্যাসের দৃষ্টান্ত।

রাজনৈতিক উপন্যাসঃ সমাজ বিকাশের অন্যতম চালিকাশক্তি যে রাজনীতি সেই রাজনৈতিক ঘটনাবলি, রাজনৈতিক মতাদর্শ এবং রাজনীতি-সংশ্লিষ্ট চরিত্রের কর্মকাণ্ড যে উপন্যাসে প্রধান্য লাভ করে তাকে রাজনৈতিক উপন্যাস বলে। এ ধরনের উপন্যাসে রাজনৈতিক ক্ষোভ-বিক্ষোভ, আন্দোলন-সংগ্রাম, স্বাধীনতা ও মুক্তির আকাঙ্ক্ষা, সমাজ ও রাষ্ট্রের বিপুল পরিবর্তনের ইঙ্গিত স্পষ্ট হয়ে ওঠে। রাজনৈতিক উপন্যাসের দৃষ্টান্ত রবীন্দ্রনাথের ‘গোরা’, শরৎচন্দ্রের পথের ‘দাবী’, গোপাল হালদারের ‘ত্রয়ী’।

ত্রয়ী উপন্যাসঃ ত্রয়ী উপন্যাস বলতে মূলত স্বাভাবিক যোগসূত্র ও ধারাবাহিকতায় এক সাথে তিনটি উপন্যাসকে বোঝানো হয়। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা এরূপ ত্রয়ী উপন্যাস হলো- আনন্দমঠ, দেবী চৌধুরানী এবং সীতারাম।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *