শরিয়ত কি? শরিয়তের উৎস কয়টি ও কি কি? শরিয়তের গুরুত্ব।
শরিয়ত আরবি শব্দ। এর অর্থ পথ, রাস্তা। এটি জীবনপদ্ধতি, আইন-কানুন, বিধি-বিধান অর্থেও ব্যবহৃত হয়। ব্যাপক অর্থে শরিয়ত হলো এমন সুদৃঢ় ও সুস্পষ্ট পথ, যা অনুসরণ করলে মানুষ সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে নিজ গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে।
ইসলামি পরিভাষায় ইসলামি কার্যনীতি বা জীবনপদ্ধতিকে শরিয়ত বলা হয়। অন্য কথায়, ইসলামি আইন-কানুন বা বিধি-বিধানকে একত্রে শরিয়ত বলা হয়। অর্থাৎ মহান আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (স.) যেসব আদেশ-নিষেধ ও পথনির্দেশনা মানুষকে জীবন পরিচালনার জন্য প্রদান করেছেন তাকে শরিয়ত বলে।
শরিয়তের উৎসসমূহ
শরিয়ত হলো ইসলামি জীবনপদ্ধতি। এটি আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর রাসুলের আদেশ-নিষেধ ও দিকনির্দেশনার সমষ্টি। অতএব, শরিয়ত এর প্রধান উৎস দুটি। যথা- আল-কুরআন ও আল-হাদিস বা সুন্নাহ।
পরবর্তীতে কুরআন ও সুন্নাহ এর স্বীকৃতি ও নির্দেশনার ভিত্তিতে শরিয়তের আরও দুটি উৎস নির্ধারণ করা হয়। এগুলো হলো ইজমা ও কিয়াস। সুতরাং আমরা বলতে পারি- শরিয়ত এর উৎস চারটি। যথা-
১। আল-কুরআন;
২। সুন্নাহ;
৩। ইজমা;
৪। কিয়াস।
শরিয়তের গুরুত্ব
মানবজীবনের শরিতের গুরুত্ব অপরিসীম। শরীয়ত হলো মহান আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রদত্ত আদেশ-নিষেধ ও বিধি-বিধান। সুতরাং শরিয়ত মেনে চললে আল্লাহ তায়লা ও তাঁর রাসূল খুশি হন। অন্যদিকে শরিয়ত অস্বীকার করা আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর রাসূল কে অস্বীকার করার শামিল। কোন মুসলমান এরূপ কাজ করতে পারে না। এমন কি শরিয়তের এক অংশ পালন করা আর অন্য অংশ অস্বীকার করাও মারাত্মক পাপ। যে ব্যক্তি এরূপ করে তার জন্য কঠিন শাস্তি রয়েছে। আল্লাহ তা’আলা বলেন, “তবে কি তোমরা কিতাবের কিছু অংশ বিশ্বাস করো, আর কিছু অংশ প্রত্যাখ্যান করো? তোমাদের মধ্যে যারা এরূপ করে তাদের একমাত্র প্রতিফল হলো পার্থিব জীবনে লাঞ্ছনা-গঞ্জনা। আর কেয়ামতের দিন তারা কঠিন শাস্তির দিকে নিক্ষিপ্ত হবে।” (সূরা আল বাকারা, আয়াত 85)
শরীয়ত হল জীবন পরিচালনার দিকনির্দেশনা। এর দ্বারা জীবনের নানা ক্ষেত্রে ইসলামী বিধি নিষেধ জানা যায়। কোনটি হালাল আর কোনটি হারাম তা সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পাওয়া যায়। ফরজ, ওয়াজীব, সুন্নত, নফল ইত্যাদি বিষয়ের জ্ঞান ও শরীয়তের শিক্ষার মাধ্যমেই লাভ করা যায়। উত্তম চরিত্র ও নৈতিকতার নানা শিক্ষা ও ইসলামী শরীয়তে বিবৃত হয়েছে। সুতরাং সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে জীবন যাপনের জন্য শরীয়ত অপরিহার্য।