আমরা জেনেছি যে, কোনো যৌগে মৌলসমূহ তাদের মধ্যে পারস্পরিক শক্তি দ্বারা যুক্ত থাকে। মৌলসমূহের একে অপরের সাথে যুক্ত হওয়ার শক্তিই হলো রাসায়নিক বন্ধন। তাছাড়াও কোনো পদার্থের অণু বা আয়নসমূহ একে অপরের সাথে নানা শক্তির সমন্বয়ে গঠিত ‘আন্তঃআণবিক শক্তি’ নামক শক্তির মাধ্যমে কাছাকাছি থেকে একটি নির্দিষ্ট অবস্থা, যেমনঃ কঠিন, তরল বা বায়বীয় অবস্থার সৃষ্টি করে।
কোনো দ্রবের অণু বা আয়নসমূহের মধ্যে আন্তঃআণবিক শক্তি বেশি হলে কঠিন, কম হলে তরল ও আরও কম হলে- বায়বীয় অবস্থার সৃষ্টি হয়। তাহলে একই দ্রবের অবস্থাভেদে আন্তঃআণবিক শক্তি ভিন্নতর হয়। যেমন বরফ, পানি ও জলীয়বাষ্প হলো পানির কঠিন, তরল ও বায়বীয় অবস্থা। পানিকে তাপ (শক্তি) দিলে জলীয়বাষ্পের সৃষ্টি হয়, অর্থাৎ পানি তাপ শোষণ করে তরল থেকে বায়বীয় পদার্থে পরিণত
হয়। আবার পানিকে ঠাণ্ডা করলে, অর্থাৎ পানি থেকে তাপ বের করে নিলে পানি কঠিন (বরফ) দ্রবে পরিণত হয়।
অন্যদিকে, রাসায়নিক বন্ধন তৈরির সাথেও শক্তি জড়িত। ভিন্ন যৌগে অণুসমূহ ভিন্ন বন্ধনশক্তি দ্বারা যুক্ত থাকে। যদি বিক্রিয়ায় উৎপন্ন যৌগের মোট শক্তি বিক্রিয়কসমূহের মোট শক্তির চেয়ে কম হয় অথবা বেশি হয় তাহলে কী হতে পারে চল ভেবে দেখা যাক। উৎপন্ন যৌগে মোট শক্তির পরিমাণ কম হলে বিক্রিয়ার ফলে শক্তির উদ্ভব হবে, এবং বেশি হলে শক্তির শোষণ ঘটবে।
মোটকথা, যে কোনো রাসায়নিক পরিবর্তনে কমবেশি শক্তির উদ্ভব বা শোষণ হয়ে থাকে, যদিও তা সবসময়ই আমরা অনুভব করতে পারি না। তাহলে এটা স্পষ্ট যে, দ্রবের অবস্থার পরিবর্তনের সাথে যেমন শক্তি জড়িত, রাসায়নিক বিক্রিয়ায় মাধ্যমে নতুন পদার্থে পরিণত হবার প্রক্রিয়ার সাথে তেমন শক্তি জড়িত।