মাইক্রোপ্রসেসর (Microprocessor) হল একক ভিএলএসআই (VLSI-Very Large Scale Integration) চিলিকন চিপ। এটি মাইক্রোকম্পিউটারের সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট বা সিপিইউ। মাইক্রোপ্রসেসর একক চিপ বা আইসি আকারে মাইক্রোকম্পিউটারের ভেতরে সন্নিবিষ্ট থাকে। মাইক্রোপ্রসেসর দিয়ে মাইক্রোকম্পিউটারের অভ্যন্তরীণ কাজ সমাধান করা হয়। এর প্রকৃতি ও ক্ষমতার উপর নির্ভর করে মাইক্রোকম্পিউটারের অভ্যন্তরীণ কার্যক্ষমতা।
মাইক্রোপ্রসেসরের গঠন (Structure of Microprocessor)
মাইক্রোপ্রসেসরের ভেতরের সংগঠনকে তিনটি অংশে ভাগ করা যায়। যথা:
১. নিয়ন্ত্রণ অংশ;
২. গাণিতিক যুক্তি অংশ;
৩. স্মৃতি (Memory)।
মাইক্রোপ্রসেসরের প্রকারভেদ (Types of Microprocessor)
সংগঠন অনুযায়ী Microprocessor মূলত তিন প্রকার।
১. Bit Slice Microprocessor : একাধিক মাইক্রোপ্রসেসর মিলে একটি বৃহৎ আকার মাইক্রোপ্রসেসর তৈরি করলে তাকে Bit Slice Microprocessor বলে।
২. Single Chip Microprocessor : এ ধরনের Microprocessor এ Computer এর মূল গঠনের প্রায় সব অংশই বিদ্যমান থাকে। তাই একে ছোট কম্পিউটার বা Microcontroller বলে।
৩. General Purpose Microprocessor : এটি হচ্ছে সাধারণ ক্ষেত্রে ব্যবহৃত মাইক্রো প্রসেসর।
মাইক্রোপ্রসেসর ইতিহাস (History of Microprocessor)
কম্পিউটারের সবচেয়ে বড় বিপ্লব ঘটে মাইক্রোপ্রসেসর আবিষ্কারের মধ্যে দিয়ে। ১৯৭১ সালে আমেরিকার ইন্টেল (Intel) নামক কোম্পানি সর্বপ্রথম ইন্টেল ৪০৪০ নামের মাইক্রোপ্রসেসর (Microprocessor) তৈরি করে। মাইক্রোপ্রসেসর হচ্ছে এক বর্গইঞ্চি মাপের অতি অল্প আয়তন বিশিষ্ট সিলিকন নামক পাতে হাজার হাজার ট্রানজিষ্টর সন্নিবেশিত একটি যন্ত্রাংশ। মাইক্রোপ্রসেসর ব্যবহার করে কম্পিউটার তৈরি করায় কম্পিউটারের আয়তন ছােট একটি ১০/১২ ইঞ্চি টেলিভিশনের সমান হয়ে যায়। ফলে দাম কমে যায়, ব্যবহারের সুবিধা বেড়ে যায় এবং কাজের ক্ষমতা হাজার হাজার গুণ বেড়ে যায়। মাইক্রোপ্রসেসর দিয়ে তৈরি কম্পিউটারকেই আধুনিক মাইক্রোকম্পিউটার বা পার্সোনাল কম্পিউটার বলা হয়।
মাইক্রোপ্রসেসরের কাজ (Function of Microprocessor)
মাইক্রোপ্রসেসরের ক্ষমতার উপর কম্পিউটারের ক্ষমতা নির্ভর করে। তাই মাইক্রোপ্রসেসরকে কম্পিউটারের মস্তিষ্ক বলা হয়৷ মাইক্রোপ্রসেসরের কাজগুলো নিচে তুলে ধরা হলো:
- কম্পিউটারের সকল অংশের নিয়ন্ত্রণ ও সময় নির্ধারণ সংকেত প্রদান করে থাকে।
- এটি মেমোরি থেকে ডাটা ও নির্দেশ নিয়ে থাকে।
- মেমোরি ও ইনপুট/আউটপুট ডিভাইসের মধ্যে ডাটা আদান-প্রদান করে।
- এটি নির্দেশ ডিকোড করে থাকে।
- এটি গাণিতিক ও যুক্তিমূলক কাজ করে থাকে।
- এটি কম্পিউটারের মেমোরিতে সংরক্ষিত প্রোগ্রাম নির্বাহ করে থাকে।
- এটি ইনপুট ও আউটপুট অংশগুলোর সাথে সমন্বয় সাধন করে।
- এটি ইলেকট্রনিক মুভি ডিসপ্লে তৈরি করে থাকে।
মাইক্রোপ্রসেসরকে কম্পিউটারের মস্তিষ্ক বলা হয় কেন?
মাইক্রোপ্রসেসরকে নিম্নলিখিত কারণে কম্পিউটারের মস্তিষ্ক বলা হয় :
i. এটি মাইক্রো কম্পিউটারের প্রোগ্রাম নির্বাহের প্রধান অংশ;
ii. গাণিতিক ও যুক্তি বিশ্লেষণের ক্ষমতাসম্পন্ন বর্তনী; এবং
iii. এর উপরই নির্ভর করে কম্পিউটারের ক্ষমতা।
এ সম্পর্কিত বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও উত্তরঃ–
১। মাইক্রোপ্রসেসর কত সালে আবিষ্কৃত হয়?
ক) ১৯৭০
খ) ১৯৭১
গ) ১৯৭২
ঘ) ১৯৭৩
সঠিক উত্তর : খ) ১৯৭১