পড়াশোনা

কম্পিউটার ভাইরাস পরিচিতি।

1 min read

আধুনিক বিজ্ঞানের অতীব প্রায়োগিক ও ফলপ্রসূ প্রযুক্তি হলো কম্পিউটার। যতই দিন যাচ্ছে ততই উন্নত হচ্ছে ইলেকট্রনিক প্রযুক্তি। আর তারই বদৌলতে কম্পিউটার এগিয়ে চলেছে মানুষের কাছে তার চমৎকার কর্মদক্ষতা নিয়ে, একান্ত বিশ্বস্ত বন্ধু হিসেবে। বিশেষ করে মাইক্রো কম্পিউটারের (পিসি)  অগ্রযাত্রা এখন শিখরে, মানুষের কাছে অতি পরিচিত একটা হাতিয়ার হিসাবে।

যন্ত্র এ কম্পিউটারটির কার্যাবলী পরিচালিত হয় কতগুলি সুসজ্জিত নির্দেশের মাধ্যমে যাদেরকে বলা হয় কম্পিউটার প্রোগ্রাম বা সফটওয়্যার। এই সফটওয়্যারগুলো কম্পিউটারের অভ্যন্তরীন স্মৃতি আধারে বসে থেকে কম্পিউটারের যাবতীয় কার্যাবলী পরিচালিত করে। সেদিক থেকে যন্ত্র কম্পিউটারের বাহাদুরী মূলত সফটওয়্যার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। আর তাই কম্পিউটারের যান্ত্রিক অগ্রগতির চাইতে তার সফটওয়্যারের অগ্রগতির ক্ষেত্রেই বেশীরভাগ জনশক্তি নিয়োজিত। এদেরকে বলা হয় কম্পিউটার প্রোগ্রামার। কিন্তু পৃথিবীর সব অগ্রযাত্রা এবং ভালরই কিছু অহিতাকাংখী বা ক্ষতিকারী থাকে যারা সর্বদা এই অগ্রযাত্রাকে ব্যহত বা ভিন্নমুখী পরিচালানার প্রয়াসে লিপ্ত।

কম্পিউটারের প্রায়োগিক অগ্রযাত্রায়ও রয়েছে এরূপ কিছু অহিতাকাংখী। এরা খুবই উচ্চ পর্যায়ের কম্পিউটার প্রোগ্রামার। এদের কেউ কেউ শৌখিনভাবে, কেউ কেউ পরীক্ষামূলক ভাবে, কেউ কেউ ব্যবসায়িক স্বার্থে, কেউ কেউ বা ইচ্ছে করেই আবিস্কার করেছে এমন এক প্রকার কম্পিউটার প্রোগ্রাম যা কম্পিউটারের স্মৃতি আধারে বসে থেকে কম্পিউটার যন্ত্রটিকে প্রয়োগকালীন সময়ে অকেজো করে দেয় বা বহিঃস্থ স্মৃতি আধর “ডিস্কে” রক্ষিত তথ্য ব্যবহারকারীর অজান্তে মুছে ফেলে। এ জাতীয় প্রোগ্রামকে তাদের ক্ষতিকর ভূমিকার জন্যে “কমপিউটার ভাইরাস” নামে অভিহিত করা হয়েছে। আর তাই কম্পিউটারের উত্তরোত্তর অগ্রযাত্রার ক্ষেত্রে এই ভাইরাস এখন একটা ভয়ংকর সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। অবশ্য ডিস্কে এদের অবস্থান, ছড়িয়ে পড়া ও ক্ষতিকর ভূমিকার দিক থেকে ভাইরাসগুলোর মধ্যে কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে। ভাইরাসগুলো আসলে প্রাথমিক পর্যায়ে কোন ডিস্কের সূচী এলাকা (Boot Sector/Area) বা ডিস্কে রক্ষিত কোন ফাইলের মধ্যে সুকৌশলে লুকিয়ে থাকে।

তারপর যখনই ঐ ডিস্কটি বা তার মধ্যস্থিত কোন ফাইল কম্পিউটারকে পড়তে নির্দেশ দেয়া হয় তখন নিজ থেকেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে ব্যবহারকারীর অজান্তে ভাইরাসটি কম্পিউটারের মেমোরিতে অবস্থান নেয়। এবং এই মেমোরিতে বসে থেকেই সে তার যাবতীয় অপকর্ম করে যায়। এদের মধ্যে কিছু কিছু রয়েছে যারা মেমােরিতে বসে থেকে শুধু মেমোরির কিছু জায়গা নষ্ট করে এবং অন্য যেসব ভাল (অনাক্রান্ত) ফাইল বা ডিস্ক চালনো বা ব্যবহার করা হয় তাদের মধ্যে সঞ্চারিত হয়।

এরা তেমন ক্ষতিকর ভাইরাস নয়। আবার কিছু কিছু রয়েছে যেগুলো মেমোরিতে অবস্থান নেয়ার কিছুক্ষণ পর মেমোরিকে অচল করে দেয়। বাকীগুলোর মধ্যে কিছু কিছু রয়েছে যারা ডিস্কের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অংশ যেমন বুট এরিয়া, ফ্যাট (FAT) এরিয়া, পার্টিশন টেবল (Partition Table) ইত্যাদি নষ্ট করে দিয়ে ডিস্কের স্বাভাবিক কার্যকারিতাকে বিকল করে দেয়, কিছু আবার ডিস্কের বিভিন্ন কম্যান্ড ফাইল বা সিস্টেম ফাইল মুছে ফেলে বা ক্ষতিগ্রস্ত করে। স্বভাবতই দেখা যাচ্ছে শেষোক্ত ভাইরাসগুলো কম্পিউটারকে দিয়ে কোন গুরুত্বপূর্ণ কাজ পরিচালনা করা বা সরক্ষণ করার ক্ষেত্রে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ ও ক্ষতিকর।

Rate this post
Mithu Khan

I am a blogger and educator with a passion for sharing knowledge and insights with others. I am currently studying for my honors degree in mathematics at Govt. Edward College, Pabna.

Leave a Comment

x