অগ্ন্যাশয় এর কাজ বর্ণনা করো।

খাদ্য পাকস্থলি থেকে ক্ষুদ্রান্ত্রে যাওয়ার সময় ক্ষারীয় তরলরূপী অগ্ন্যাশয় রস নিঃসৃত হয়। অগ্ন্যাশয়ের বহিঃক্ষরা অংশ থেকে দুধরনের ক্ষরণ মিলে অগ্ন্যাশয় রস গঠন করেঃ (১) পরিপাক এনজাইম এবং (২) একটি ক্ষারীয় তরল।

এ রসে যে ৩টি প্রধান এনজাইম থাকে তা হচ্ছে অ্যামাইলেজ, লাইপেজ ও প্রোটিয়েজ। অ্যামাইলেজ স্টার্চকে ভেঙ্গে ক্ষুদ্রতর কার্বোহাইড্রেট ও চিনির অণুতে পরিণত করে। লাইপেজ পিত্ত লবণের উপস্থিতিতে ফ্যাটকে ফ্যাটি এসিড ও গ্লিসারলে পরিণত করে। প্রোটিন বিশ্লেষকারী বিভিন্ন এনজাইম (প্রোটিয়েজ) পেপটাইড অণুকে ক্ষুদ্রতর পেপটাইডে পরিণত করে।

দেহে অধিকাংশ প্রোটিন পরিপাক হয় অগ্ন্যাশয় রসের বিভিন্ন প্রোটিয়েজের মাধ্যমে। অগ্ন্যাশয়ের বহিঃক্ষরা অংশ যে সব প্রোটিয়েজ ক্ষরণ করে তার মধ্যে প্রধান দুটি হচেছ ট্রিপসিন ও কাইমোট্রিপসিন। এগুলো বড় প্রোটিন অণুকে ভেঙ্গে ক্ষুদ্রতর পেপটাইডে পরিণত করে। (পেপটাইড থেকে অ্যামিনো এসিডে পরিণত হওয়ার বিষয়টি অন্যান্য পেপটাইডেজের ক্রিয়ায় ক্ষুদ্রান্ত্রে সংঘটিত হয়)।

অগ্ন্যাশয়ের বহিঃক্ষরা অংশ থেকে অগ্ন্যাশয় রসের অংশ হিসেবে ক্ষরিত হয় বাইকার্বনেট আয়ন। পাকস্থলিতে আংশিক পাচিত খাদ্য (অর্থাৎ কাইম) গ্যাট্রিনের কর্মকান্ডে অতিমাত্রায় আম্লিক থাকে। বাইকার্বনেটের প্রকৃতি ক্ষারীয় হওয়ায় অধপাচিত খাদ্য নিরপেক্ষ হয়ে যায়। ফলে এ খাদ্য ক্ষুদ্রান্ত্রে গেলেও আন্ত্রিক প্রাচীরের কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। বাইকার্বনেট আয়ন ক্ষরিত হয় বহিঃক্ষরা অগ্ন্যাশয়ের নালিপ্রাচীরের কোষ থেকে। অগ্ন্যাশয় রস এভাবে অম্ল-ক্ষারের সাম্য, পানিসাম্য, দেহতাপ প্রভৃতি নিয়ন্ত্রণ করে।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *