চলন্ত বাসে ডাকাতি-ধর্ষণ: আরও ২ জন গ্রেফতার
টাঙ্গাইলে ঈগল পরিবহনের চলন্ত বাসে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে সকল যাত্রীর কাছ থেকে সর্বস্ব লুট ও এক নারীকে গণধর্ষণের ঘটনায় আরো দুই ডাকাত সদস্যকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে গাজীপুর উপজেলার কালিয়াকৈর বাসস্ট্যান্ড এবং সোহাগ পল্লী থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা বাসের ডাকাতির সাথে জড়িত রয়েছে।
শুক্রবার (৫ আগস্ট) সকালে পুলিশ সূত্রে এ তথ্য জানা যায়। তবে দুপুর ১২টার দিকে পুলিশ সুপার সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানাবেন বলে জানা গেছে৷
সূত্র জানায়, গ্রেফতারকৃতরা তথ্যের ভিত্তিতে ডিবি পুলিশ অভিযান চালিয়ে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়। তারা ধর্ষণের সাথে জড়িত থাকতে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিস্তারিত সংবাদ সম্মেলনে জানানো হবে।
এর আগে এ ঘটনায় জড়িত বৃহস্পতিবার ভোরে টাঙ্গাইল শহরের দেওলা এলাকা থেকে রাজা মিয়াকে (৩২) গ্রেফতার করা হয়। সময় তার কাছ থেকে তিনটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
এদিকে গ্রেফতারকৃত রাজাকে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে তোলা হলে, শুনানি শেষে বিচারক ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। অন্যদিকে ভুক্তভোগী নারী আদালতে ২২ ধারায়। জবানবন্দি দেন।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার দিবাগতরাতে কুষ্টিয়া থেকে ঈগল পরিবহনের একটি বাস অন্তত ২৪ জন যাত্রী নিয়ে নারায়ণগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। পরে রাত ১১টার দিকে সিরাজগঞ্জে জনতা নামে একটি হোটেলে খাবারের জন্য বিরতি দেওয়া হয়। সেখান থেকে সাড়ে ১১টার দিকে যাত্রা করলে তিন দফায় বাসটিতে ১০ জন যাত্রীবেসে ডাকাত দলের সদস্যরা উঠেন।
বাসটি বঙ্গবন্ধু সেতু পার হওয়ার পর আনুমানিক রাত দেড়টার দিকে যাত্রীরা ঘুমানোর এক পর্যায়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের টাঙ্গাইলের নাটিয়াপাড়া এলাকা পৌঁছালে ডাকাত দলের সদস্যরা অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে পুরো বাসের নিয়ন্ত্রণ নেন। প্রথমে পুরুষ যাত্রীদেরকে তাদের পোশাক খুলে হাত মুখ বাধা হয়। অপরদিকে নারী যাত্রীদেরকে বাসের পর্দা ও সিটের কভারখুলে মুখ এবং হাত বেঁধে ফেলা হয়। পরে অস্ত্রের মুখে বাসের চালক ও হেলপারকে জিম্মি করা হয়।
এ সময় ডাকাতদলের সদস্য রাজা বাস চালায়। টাঙ্গাইলের গোড়াই এলাকা থেকে বাসটিকে ইউর্টান করে এলেঙ্গা হয়ে ময়মনসিংহ রোড ধরে যেতে থাকে। এরই মধ্যে যাত্রীদের কাছে থাকা মোবাইল, টাকা, কানের দুল, হাতের বালা, গলার চেইন লুট করে নেয়া হয়। পরে ৫ থেকে ৬ জন ডাকাত সংঘবদ্ধভাবে গাড়িতে থাকা এক নারীকে ধর্ষণ করে। রাত সাড়ে ৩টার দিকে টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার রক্তিপাড়া জামে মসজিদের পাশে বালুর ঢিবির কাছে বাসের গতি থামিয়ে পালিয়ে যায় তারা। এ ব্যাপারে যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি ও ধর্ষণ মামলা দায়ের করা হয়েছে।