সড়কে ডাকাতি, যাত্রীদের জিম্মি করে চলে ডাকাতি নির্যাতন ও ধর্ষণ

টাঙ্গাইলে চলন্ত বাসে ডাকাতি শেষে এক নারী যাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় বাসের এক যাত্রী অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মধুপুর থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

কুষ্টিয়া থেকে যাত্রী নিয়ে নারায়ণগঞ্জগামী ঈগল পরিবহনের একটি চলন্ত বাসে এক নারীকে গণধর্ষণ ও যাত্রীদের কাছ থেকে সর্বস্ব লুট করে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে।

মঙ্গলবার মধ্যে রাত থেকে ভোর পর্যন্ত এ ঘটনা ঘটে। বুধবার ভোরে ডাকাতদলের সদস্যরা টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার রক্তিপাড়া এলাকায় বাস থেকে নেমে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ওই নারী বুধবার (৩ আগস্ট) বিকেলে মধুপুর থানায় ধর্ষণ ও ডাকাতির মামলা দায়ের করেছেন।

পুলিশ এবং সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (২ আগস্ট) রাতে কুষ্টিয়া থেকে ঈগল পরিবহনের একটি বাস অন্তত ২৪ জন যাত্রী নিয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। পরে রাত ১১টার দিকে সিরাজগঞ্জের একটি হোটেলে খাবারের জন্য বিরতি দেওয়া হয়। সেখান থেকে ৫ মিনিট যাওয়ার পর মূল সড়ক থেকে প্রথমে ৩ জন যাত্রী উঠেন। কিছুদূর যাওয়ার পর আরো ৪ জন যাত্রী উঠেন। নির্ধারিত স্টেশন ছাড়া কিছুদূর যাওয়ার পর আরো ৩ জন যাত্রী সেজে বাসে উঠেন। আনুমানিক রাত ১২টার দিকে যাত্রীরা ঘুমানোর এক পর্যায়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের টাঙ্গাইলের নাটিয়াপাড়া এলাকা পৌঁছালে ডাকাত দলের সদস্যরা হঠাৎ করে অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে পুরো বাসের নিয়ন্ত্রণ নেয়। কিছুদূর যাওয়ার পরে বাসটিকে ঘুরিয়ে ডাতকালদের সদস্যরা কালিহাতী হয়ে মধুপুরে আসেন। এরই মধ্যে ডাকাত দলের সদস্যরা সবার হাত-মুখ ও চোখ বেঁধে জিম্মি করে। এরপর যাত্রীদের কাছে থাকা মোবাইল, টাকা, স্বর্ণালংকার লুট করে নেয়। পরে ডাকাত দলের সদস্যেরা গাড়িতে থাকা এক নারীকে গণধর্ষণ করেন। বুধবার ভোর সাড়ে তিনটার দিকে টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার রক্তিপাড়া জামে মসজিদের পাশে বাসটি বালুর টিবির মধ্যে উল্টিয়ে ফেলে পালিয়ে যায় ডাকাতদলের সদস্যরা। এই পুরো সময় বাসটি চলন্ত অবস্থায় ছিল।

বাস যাত্রীরা বলেন, টানা তিন ঘণ্টা যাত্রীদের ওপর চালানো নির্যাতনের পর মধুপুর উপজেলার রক্তিপাড়া এলাকায় এসে বাসটির গতি থামিয়ে ডাকাত দল নেমে যায়। মুহূর্তের মধ্যেই চোখ-মুখ ও হাত বাঁধা যাত্রীদের নিয়ে বাসটি রাস্তার পাশের বালুর ঢিবিতে কাত হয়ে পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়। স্থানীয়রা এগিয়ে এসে তাঁদের উদ্ধার করেন।

এ ব্যাপারে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার বলেন, ঈগল পরিবহনের ওই বাসে যাত্রী সেজে ডাকাতদলের সদস্যরা উঠেন। পরে তারা টাঙ্গাইলের সীমান্তে এসে এক নারীকে ধর্ষণ ও যাত্রীদের সর্বস্ব লুট করে নিয়ে যায়।

এ ব্যাপারে পুলিশের ডিবিসহ একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে। আশা করছি, দ্রুতই আসামিদের গ্রেপ্তার করা হবে।

তিনি আরো বলেন, ভুক্তভোগী ওই নারী টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের রয়েছেন। আগামীকাল বৃহস্পতিবার তার ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হবে।

এ ব্যাপারে মধুপুর থানার ওসি মোহাম্মদ মাজহারুল আমিন বলেন, এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী থানায় ধর্ষণ ও ডাকাতির মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে। ওই নারীর বয়স আনুমানিক ২৫ থেকে ২৬ বছর হবে। আশা করছি, অতিদ্রুতই আসামিদের গ্রেপ্তার করা হবে।

আপডেটঃ ঈগল বাসে ডাকাতি শেষে ধর্ষণ, ‘মূল হোতা’ গ্রেফতার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *