পরিফেরা (Porifera) বা ছিদ্রাল প্রাণী

[ল্যাটিন, porus = ছিদ্র + ferre = বহন করা। ১৮৩৬ সালে Grant সর্বপ্রথম পর্বটির নামকরণ করেন। এ পর্বের শনাক্তকৃত জীবন্ত প্রজাতির সংখ্যা ৮,৬৫৯ টি৷]

সংক্ষিপ্ত পরিচিতি : বহুকোষী প্রাণিদের মধ্যে Porifera পর্বের প্রাণীরা প্রাচীনতম ও সরল প্রকৃতির। দেহে অসংখ্য ছিদ্র থাকায় এদের ছিদ্রাল প্রাণী বলে। সাধারণতভাবে এরা স্পঞ্জ (sponge) নামে পরিচিত। দেখতে ডাল-পালাযুক্ত গাছের মতো, ফুলদানি, ঘন্টা বা বাটি এবং দৈহিক ব্যাস এক মিলিমিটার থেকে প্রায় দুই মিটার। কারও রং অনুজ্জ্বল ধূসর, আবার কোনটি লাল, কমলা, নীল, বেগুনি প্রভৃতি উজ্জ্বল বর্ণের। অধিকাংশ সামুদ্রিক। প্রায় দেড়শ প্রজাতি মিঠাপানির বাসিন্দা।

Porifera-পর্বের বৈশিষ্ট্য
১। বহুকোষী, কিন্তু কোষগুলো সুবিন্যস্ত নয়, টিস্যুতন্ত্র নেই, অর্থাৎ এরা কোষীয় মাত্রার (cellular grade) গঠন সম্বলিত প্রাণী।

২। দেহপ্রাচীর অস্টিয়া (ostia) নামক অসংখ্য ছিদ্রযুক্ত।

৩। দেহে সংবহনতন্ত্রের বিকল্প হিসেবে পানি প্রবাহের জন্য বৈশিষ্ট্যপূর্ণ নালিতন্ত্র (canal system) দেখা যায়। অস্টিয়াপথে নালিকার মধ্য দিয়ে পানিস্রোতের মাধ্যমে খাদ্য, অক্সিজেন ও শুক্রাণু দেহাভ্যন্তরে প্রবেশ করে।

৪। স্পিকিউল (spicule) নামক অসংখ্য চুনময় ক্ষুদ্র কাঁটা অথবা স্পঞ্জিন (spongin) নামক এক ধরনের জৈবতন্ত্র দেহের কাঠামো গঠন করে।

৫। দেহে কোয়ানোসাইট (choanocyte) নামে বিশেষ ফ্লাজেলাযুক্ত কোষে পরিবেষ্টিত এক বা একাধিক প্রকোষ্ঠ রয়েছে। প্রকোষ্ঠগুলো নালিতন্ত্রে মুক্ত।

৬। নালিতন্ত্র দেহের ভেতরে অবস্থিত স্পঞ্জোসিল (spongocoel) নামে একটি প্রশস্ত গহ্বরে মিলিত হয়, এবং সবশেষে দেহের বাইরে অসক্যুলাম (osculum) নামে একটি বড় প্রান্তিক ছিদ্রপথে উন্মুক্ত হয়।

৭। পূর্ণাঙ্গ প্রাণীরা নিশ্চল (sessile); অর্থাৎ কোন বস্তুর সাথে স্থায়ীভাবে যুক্ত থাকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *