Modal Ad Example
Islamic

তাওয়াফকালে যে ভুলগুলো সংঘটিত হয়ে থাকে

1 min read

প্রশ্নঃ তাওয়াফ করাকালে আমরা খেয়াল করি যে, কিছু মানুষ মাতাফ (তাওয়াফের জায়গা)-এর শুরুতে দাঁড়িয়ে তাওয়াফের নিয়ত করে। আমরা আরও খেয়াল করি যে, কিছু মানুষ হাজারে আসওয়াদে পৌঁছার জন্য প্রচণ্ড ধাক্কাধাক্কি করে; এমনকি মারামারি পর্যন্ত করে। এসব কাজের ব্যাপারে আপনাদের অভিমত কি?

উত্তরঃ আলহামদুলিল্লাহ।

এগুলো এমন কিছু ভুল যেগুলো তাওয়াফ করাকালে সংঘটিত হয়ে থাকে। এ ভুলগুলো কয়েক ধরণের:

এক:

তাওয়াফের শুরুতে নিয়ত উচ্চারণ করা। আপনি দেখবেন যে, কিছু হাজীসাহেব যখন তাওয়াফ শুরু করতে চাচ্ছেন তখন তিনি হাজারে আসওয়াদ অভিমুখী হয়ে দাঁড়িয়ে বলছেন: “হে আল্লাহ্‌! আমি উমরার জন্য সাত চক্কর তাওয়াফ করার নিয়ত করছি”, কিংবা বলছেন: “হে আল্লাহ্‌! আমি হজ্জের জন্য সাত চক্কর তাওয়াফ করার নিয়ত করছি”। কিংবা বলছেন: “হে আল্লাহ্‌! আমি আপনার নৈকট্য হাছিলের জন্য সাত চক্কর তাওয়াফ করার নিয়ত করছি”।

নিয়ত উচ্চারণ করা বিদাত। কেননা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তা করেননি এবং তাঁর উম্মতকে সেটা করার নির্দেশ দেননি। যে ব্যক্তি এমন কোনভাবে আল্লাহ্‌র ইবাদত করবে যেভাবে রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইবাদত করেননি কিংবা তিনি তা করার জন্য তাঁর উম্মতকে নির্দেশ দেননি তাহলে সে ব্যক্তি আল্লাহ্‌র দ্বীনের মধ্যে বিদাত (নতুন বিষয়) চালু করল; যা তাঁর দ্বীনে নেই। অতএব, তাওয়াফকালে নিয়ত উচ্চারণ করা ভুল ও বিদাত। শরয়ি দিক থেকে এটি যেমন ভুল তেমনি বিবেকের বিবেচনায়ও এটি ভুল। নিয়ত উচ্চারণ করার কী আবেদন থাকতে পারে? যেহেতু নিয়ত হচ্ছে আপনি ও আপনার রবের মধ্যস্থিত বিষয়। আল্লাহ্‌ তাআলা আপনার অন্তস্থিত বিষয় সম্যক অবহিত। তিনি অবহিত যে, অচিরেই আপনি এ তাওয়াফটি পালন করবেন। আল্লাহ্‌ যেহেতু জানেন অতএব, আল্লাহ্‌র বান্দাদের কাছে এটি প্রকাশ করার কোন প্রয়োজন নেই।

আপনার পূর্বে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাওয়াফ করেছেন, কিন্তু তিনি তো তাওয়াফের সময় নিয়ত উচ্চারণ করেননি। আপনার পূর্বে সাহাবায়ে কেরাম তাওয়াফ করেছেন, তারা তো নিয়ত উচ্চারণ করেননি। অন্য ইবাদতের ক্ষেত্রেও করেননি। অতএব, এটি ভুল।

দুই:

কিছু তাওয়াফকারী হাজারে আসওয়াদ ও রুকনে ইয়ামেনী স্পর্শ করাকালে তীব্র ধাক্কাধাক্কি করেন; যার কারণে সে ব্যক্তি নিজেও কষ্ট পান এবং অন্যদেরকেও কষ্ট দেন। হতে পারে কখনও কোন মহিলার সাথে ধাক্কাধাক্কি করেন। এক পর্যায়ে শয়তান তাকে প্ররোচিত করে ফলে এ সংকীর্ণ স্থানে এ মহিলার সাথে ধাক্কাধাক্কি করতে গিয়ে তার অন্তরে কামনা-বাসনা জেগে উঠে। মানুষ রক্ত-মাংসের মানুষ। যে কোন সময় তার উপর কু-আত্মা ভর করতে পারে। ফলে বায়তুল্লাহ্‌র সামনেও সে এ ধরণের গর্হিত কাজে লিপ্ত হয়ে যেতে পারে। এ স্থানে এমন কাজ জঘন্য গর্হিত। যদিও সকল স্থানেই এমন কাজ ফিতনা।

হাজারে আসওয়াদ কিংবা রুকনে ইয়ামেনী স্পর্শ করাকালে তীব্র ধাক্কাধাক্কি করা শরিয়ত অনুমোদিত নয়। বরং যদি শান্তভাবে সেটা সম্ভবপর হয় তাহলে সেটা করা উচিত। আর যদি তা সম্ভবপর না হয় তাহলে আপনি হাজারে আসওয়াদের দিকে শুধু ইশারা করবেন। আর রুকনে ইয়ামেনীর দিকে ইশারা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে সাব্যস্ত নয় এবং হাজারে আওয়াদের উপর এটাকে কিয়াস করা যাবে না। কেননা হাজারে আসওয়াদের মর্যাদা রুকনে ইয়ামেনীর চেয়ে অনেক বেশি। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে সাব্যস্ত হয়েছে যে, তিনি হাজারে আসওয়াদের দিকে ইশারা করেছেন।

এ অবস্থায় ধাক্কাধাক্কি করা যেমন শরিয়ত অনুমোদিত নয় তেমনি মহিলার সাথে ধাক্কাধাক্কি করলে এতে ফিতনাগ্রস্ত হওয়ার আশংকা রয়েছে। অনুরূপভাবে এমন ধাক্কাধাক্কি মন ও চিন্তাকে বিক্ষিপ্ত করে দেয়। কেননা মানুষ ধাক্কাধাক্কির মধ্যে অপ্রীতিকর কিছু কথা শুনেই থাকে। ফলে এ স্থান ত্যাগ করার পর ব্যক্তির নিজের উপর নিজের-ই রাগ হয়।

তাওয়াফকারীর উচিত সার্বক্ষণিক শান্ত ও ধীরস্থির থাকা; যাতে করে আল্লাহ্‌র আনুগত্যের অনুভূতি মনে জাগ্রত রাখা যায়। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “বায়তুল্লাহকে তাওয়াফ করা, সাফা-মারওয়ার মাঝে প্রদক্ষিণ ও জমরাতগুলোতে কঙ্কর নিক্ষেপ করার বিধান আল্লাহ্‌র স্মরণকে বুলন্দ করার জন্য আরোপ করা হয়েছে।”

তিন:

কিছু কিছু মানুষ ধারণা করে যে, হাজারে আসওয়াদ পাথরে চুমা না খেলে তাওয়াফ সহিহ হবে না এবং হাজারে আসওয়াদে চুমা খাওয়া তাওয়াফ শুদ্ধ হওয়ার জন্য, হজ্জ কিংবা উমরা শুদ্ধ হওয়ার জন্য শর্ত– এটি ভুল ধারণা। হাজারে আসওয়াদে চুমা খাওয়া সুন্নত। এটি স্বতন্ত্র সুন্নতও নয়। বরং তাওয়াফের একটি সুন্নত। তাওয়াফ ছাড়া অন্য সময় হাজারে আসওয়াদে চুমা খাওয়া সুন্নত মর্মে আমি জানি না। এর ভিত্তিতে আমরা বলব যেহেতু হাজারে আসওয়াদে চুমা খাওয়া সুন্নত; ওয়াজিব নয়, কিংবা শর্ত নয়। সুতরাং যে ব্যক্তি হাজারে আসওয়াদে চুমা দিতে পারেনি আমরা বলব না যে, তার তাওয়াফ সহিহ নয়। কিংবা তার তাওয়াফ অপরিপূর্ণ; যে অপূর্ণতার কারণে সে ব্যক্তি গুনাহগার হবে। বরং তার তাওয়াফ সহিহ। আর যদি তীব্র ভিড় থাকে তখন ইশারা করা স্পর্শ করার চেয়ে উত্তম। কেননা ভিড়ের সময় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেটাই করেছেন। কেননা এর মাধ্যমে মানুষ অন্যকে কষ্ট দেয়া থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারে, কিংবা অন্য মানুষ থেকে কষ্ট পাওয়া থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারে।

যদি কোন প্রশ্নকারী আমাদেরকে জিজ্ঞেস করে যে, যদি মাতাফ বা তাওয়াফের স্থান জনাকীর্ণ হয় সেক্ষেত্রে মানুষের সাথে ধাক্কাধাক্কি করে হাজারে আসওয়াদ চুমো খাওয়া উত্তম; নাকি ইশারা করা উত্তম; আপনার মতামত কি?

আমরা বলব: উত্তম হচ্ছে- ইশারা করা। কেননা ঠিক এভাবেই রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে সুন্নাহ বর্ণিত হয়েছে। আর সর্বোত্তম আদর্শ হচ্ছে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আদর্শ।

চার:

রুকনে ইয়ামেনী চুম্বন করা। রুকনে ইয়ামেনী চুম্বন করা রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে সাব্যস্ত হয়নি। কোন ইবাদত যদি রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে সাব্যস্ত না হয় তাহলে সেটি বিদাত; নেক কাজ নয়। তাই কারো জন্য রুকনে ইয়ামেনী চুমো খাওয়া শরিয়তসম্মত হবে না। কেননা রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে তা সাব্যস্ত হয়নি। বরং এ বিষয়ে একটি দুর্বল হাদিস বর্ণিত হয়েছে; যা দলিলের উপযুক্ত নয়।

পাঁচ:

কিছু কিছু মানুষ যখন হাজারে আসওয়াদ বা রুকনে ইয়ামেনী মাসেহ করে তখন তারা অবজ্ঞাকারীর মত বাম হাত দিয়ে মাসেহ করে। এটি ভুল। কারণ ডানহাত বামহাতের চেয়ে উত্তম। কেবল শৌচকার্য, ঢিলা-কুলুখ ব্যবহার, নাকের শ্লেষ্মা নিষ্কাশন ইত্যাদি মল-ময়লা পরিষ্কার করার কাজে বাম হাত এগিয়ে দেয়া হয়। অন্যদিকে চুমো খাওয়া ও সম্মান প্রদর্শনের কাজে ডানহাতই ব্যবহার করা হয়।

ছয়:

লোকেরা ধারণা করে হাজারে আসওয়াদ ও রুকনে ইয়ামেনী স্পর্শ করা হয় বরকতের জন্য; ইবাদত হিসেবে নয়। ফলে তারা বরকত হিসেবে স্পর্শ করে। এটি নিঃসন্দেহে যে উদ্দেশ্যে স্পর্শ করার বিধান দেয়া হয়েছে সেটার বিপরীত। কারণ হাজারে আসওয়াদ স্পর্শ করা, মোছা বা চুম্বন করার বিধান দেয়া হয়েছে আল্লাহ্‌র প্রতি সম্মান প্রকাশার্থে। এ কারণে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন হাজারে আসওয়াদ স্পর্শ করতেন তখন বলতেন: আল্লাহু আকবার (আল্লাহ্‌ই মহান); এদিকে ইঙ্গিত করার জন্য যে, এ কাজের উদ্দেশ্য হচ্ছে আল্লাহ্‌র মহত্ব প্রকাশ; পাথর মুছে বরকত হাছিল নয়। ঠিক এ কারণেই আমীরুল মুমিনীন উমর (রাঃ) হাজারে আসওয়াদ স্পর্শ করা কালে বলেছেন: “আল্লাহ্‌র শপথ! আমি জানি, তুমি একটি পাথর ছাড়া আর কিছু নও; তুমি উপকার বা অপকার কিছুই করতে পার না। যদি না আমি রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কর্তৃক তোমাকে চুম্বন করতে না দেখতাম তাহলে আমিও তোমাকে চুম্বন করতাম না”

কিছু মানুষের এ ভুল বিশ্বাস (হাজারে আসওয়াদ ও রুকনে ইয়ামেনী বরকতের জন্য স্পর্শ করা) থেকে তারা তাদের ছোট ছোট বাচ্চাদেরকেও রুকনে ইয়ামেনী বা হাজারে আসওয়াদ স্পর্শ করার সময় নিয়ে আসে। নিজের হাত দিয়ে রুকনে ইয়ামেনী বা হাজারে আসওয়াদ স্পর্শ করে সে হাত দিয়ে তার ছোট বাচ্চাকে বা শিশুকে স্পর্শ করে। এ ধরণের ভুল আকিদা থেকে বারণ করা ওয়াজিব এবং মানুষের কাছে তুলে ধরা উচিত যে, এ ধরণের পাথরের উপকার বা অপকার করার ক্ষমতা নেই। বরং স্পর্শকরণ দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে- আল্লাহ্‌র প্রতি সম্মানপ্রদর্শন ও তাঁর যিকিরকে বুলন্দ করা এবং তাঁর রাসূলের অনুসরণ করা।

উল্লেখিত বিষয়গুলো এবং সম ধরণের বিষয়গুলোর পক্ষে শরয়ি কোন দলিল নেই। বরং তা বিদাত; যে কর্মগুলো আমলকারীর কোন উপকার করবে না। তবে, এ ধরণের আমলকারী যদি অজ্ঞ হয় এবং তার মনে যদি উদ্রেক না হয় যে, এগুলো বিদাত তাহলে আশা করা যায়, সে ব্যক্তি ক্ষমা পাবে। আর যদি সে ব্যক্তি আলেম হয় কিংবা অবহেলা করে জিজ্ঞেস না করে তাহলে সে ব্যক্তি গুনাহগার হবে।

সাত:

কেউ কেউ তাওয়াফের প্রত্যেক চক্করের জন্য নির্দিষ্ট দোয়া খাস করে নেয়। এটিও একটি বিদাত যার পক্ষে রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কিংবা তাঁর সাহাবীবর্গ থেকে কোন কিছু উদ্ধৃত হয়নি। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কিংবা তাঁর সাহাবীগণ প্রত্যেক চক্করের জন্য বিশেষ কোন দোয়াকে খাস করতেন না। এ বিষয়ে সর্বোচ্চ যা জানা যায় তা হল নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রুকনে ইয়ামেনী ও হাজারে আসওয়াদের মাঝে বলতেন: “رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ” (অর্থ- হে আমাদের রব্ব! আমাদেরকে দুনিয়াতে কল্যাণ দিন, আখিরাতেও কল্যাণ দিন এবং আমাদেরকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচান)। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: বায়তুল্লাহ্‌কে তাওয়াফ করা, সাফা-মারওয়া পাহাড়দ্বয়ের মাঝে প্রদক্ষিণ করা ও জমরাতসমূহে কঙ্কর নিক্ষেপ করার বিধান আল্লাহ্‌র স্মরণকে বুলন্দ করার জন্য দেয়া হয়েছে।

এ বিদাতটির ভ্রান্তি আরও বেড়ে যায় যখন কোন তাওয়াফকারী একটি পুস্তিকা সাথে বহন করে, যে পুস্তিকাতে প্রত্যেক চক্করের জন্য দোয়া লেখা আছে, আর সে ব্যক্তি ঐ পুস্তিকাটি পড়ে। কিন্তু কী পড়ে সে নিজেও তা জানে না; হয়তো আরবী ভাষা না জানার কারণে অর্থ বুঝে না, কিংবা আরবীভাষী আরবী উচ্চারণ করলেও সে কী বলছে তা সে জানে না। এমনকি আমরা কোন কোন তাওয়াফকারীকে এমন কিছু দোয়া পড়তে শুনেছি সেগুলো আসলে স্পষ্টভাবে বিকৃত। যেমন- কেউ একজনকে বলতে শুনেছি: ‘আল্লাহুম্মা আগনিনি বি জালালিকা আন হারামিকা’। সঠিক হচ্ছে- আল্লাহুম্মা আগনিনি বি হালালিকা আন হারামিকা (হে আল্লাহ্‌! আপনি যা হালাল করেছেন সেটার মাধ্যমে আপনি যা হারাম করেছেন সেটা থেকে আমাকে বিমুখ রাখুন)।

এছাড়াও আমরা দেখেছি কিছু কিছু মানুষ ঐ পুস্তিকা থেকে দোয়া পড়তে থাকে। যখন পুস্তিকাটি পড়া শেষ হয়ে যায় তখন দোয়া করা থামিয়ে দেয়। অবশিষ্ট চক্করে সে আর কোন দোয়া করে না। যদি মাতাফে (তাওয়াফস্থলে) ভিড় না থাকে এবং দোয়া শেষ হওয়ার আগে চক্কর শেষ হয়ে যায় সে ব্যক্তি সাথে সাথে ঐ দোয়াটি বাদ দিয়ে দেয়।

এর প্রতিকার হচ্ছে- আমরা হাজীসাহেবদের কাছে তুলে ধরব যে, মানুষ তাওয়াফকালে যা ইচ্ছা ও যা খুশি দোয়া করতে পারে এবং যা ইচ্ছা আল্লাহ্‌র যিকির করতে পারে। যখন মানুষের কাছে এটি তুলে ধরা হবে তখন এ সমস্যাটি নিরসিত হবে।

যে ব্যক্তি এ বিদাতগুলোতে লিপ্ত হয় তার হুকুম:

এ বিদাতগুলোতে লিপ্ত ব্যক্তি:

হয়তো অজ্ঞ-মূর্খ; তার মনে হয়তো উদ্রেকও হয়নি যে, এগুলো হারাম। এমন ব্যক্তির ক্ষেত্রে আশা করা যায় তার উপর কোন কিছু বর্তাবে না।

কিংবা সে ব্যক্তি আলেম এবং স্বেচ্ছায় নিজে পথভ্রষ্ট ও মানুষকে পথভ্রষ্টকারী। নিঃসন্দেহে এ ব্যক্তি গুনাহগার এবং তার উপরে তার অনুসারীদের গুনাহও বর্তাবে।

কিংবা এ ব্যক্তি হচ্ছে- অজ্ঞ ও আলেমদেরকে জিজ্ঞেস করার ক্ষেত্রে অবহেলাকারী। এ ব্যক্তির ব্যাপারে আশংকা হয় যে, সে তার অবহেলার কারণে ও জিজ্ঞেস না করার কারণে গুনাহগার হবে।

তাওয়াফ সংক্রান্ত যে ভুলগুলো আমরা এখানে উল্লেখ করলাম আমরা আশা করি, আল্লাহ্‌ তাআলা আমাদের মুসলমি ভাইগণকে এ ভুলগুলো সংশোধন করার জন্য হেয়ায়েত দিবেন। যাতে করে তাদের তাওয়াফ পালন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আনিত আদর্শ মোতাবেক হয়। কারণ সর্বোত্তম আদর্শ হচ্ছে- মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আদর্শ। দ্বীনি বিধি-বিধান আবেগ ও ঝোঁকপ্রবণতা দিয়ে গ্রহণ করা যায় না। বরং রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে গ্রহণ করতে হয়।


সূত্র: শাইখ উছাইমীনের “দালিলুল আখতা আল্লাতি ইয়াকাউ ফিহাল হাজ্জ ওয়াল মুতামির” থেকে সমাপ্ত
সূত্র: ইসলামিক জিজ্ঞাসা ও জবাব

Rate this post
Mithu Khan

I am a blogger and educator with a passion for sharing knowledge and insights with others. I am currently studying for my honors degree in mathematics at Govt. Edward College, Pabna.

Leave a Comment

x