দীর্ঘদৃষ্টি বা দূরদৃষ্টি বলতে কি বোঝায়?
দূরদৃষ্টি/ক্ষীণদৃষ্টি/ হাইপারোপিয়া বলতে কি বোঝায়?
দীর্ঘদৃষ্টি বা দূরদৃষ্টি (Hypermetropia, Hyperopia or Farsightedness):
যখন কোনো চোখ দূরের বস্তু দেখে কিন্তু কাছের বস্তু দেখতে পায় না তখন এই ত্রুটিকে দীর্ঘদৃষ্টি বলে। সাধারণত বয়স্ক ব্যক্তিদের মধ্যে এই ত্রুটি দেখা যায়। নিম্নলিখিত দুটি কারণে এই ত্রুটি ঘটে।
(i) চোখের লেন্সের অভিসারী ক্ষমতা হ্রাস পেলে বা চোখের লেন্সের ফোকাস দূরত্ব বেড়ে গেলে।
(ii) কোনো কারণে অক্ষিগোলকের ব্যাসার্ধ কমে গেলে।
হ্রস্বদৃষ্টি বা ক্ষীণদৃষ্টি (Myopia or Nearsightedness):
যখন চোখ কাছের বস্তু দেখতে পায় কিন্তু দূরের বস্তু দেখতে পায় না, তখন চোখের এই ত্রুটিকে হ্রস্বদৃষ্টি বলে। এরূপ চোখের দূরবিন্দুটি অসীম দূরত্ব না হয়ে কাছে থাকে এবং বস্তুকে স্পষ্ট দৃষ্টির ন্যূনতম দুরত্ব থেকে আরও কাছে আনলে অধিকতর স্পষ্ট দেখায়। নিম্নলিখিত দুটি কারণে এই ত্রুটি হয়ে থাকে।
(1) চোখের লেন্সের অভিসারী শক্তি বৃদ্ধি পেলে বা ফোকাস দূরত্ব কমে গেলে ও
(2) কোনো কারণে অক্ষিগোলকের ব্যাসার্ধ বৃদ্ধি পেলে।
এছাড়াও হাইপারোপিয়া কি?
হাইপারোপিয়া (Hyperopia) বা দূরদৃষ্টি হচ্ছে এক ধরনের সাধারণ দৃষ্টিত্রুটি। আমাদের জনসংখ্যার প্রায় একটা বিশাল অংশের লোকই কম-বেশি হাইপারোপিয়াতে আক্রান্ত হয়। এটি হাইপারমেট্রোপিয়া নামে বেশি পরিচিত।
হাইপারোপিয়ার লক্ষণঃ
হাইপারোপিয়া আক্রান্ত ব্যাক্তি কাছের জিনিস ঝাপসা দেখে কিন্তু দূরের জিনিস ভাল দেখে। হাইপারোপিয়ার সাথে মাথা ব্যাথা, চোখে চাপ পড়া অথবা চোখ ট্যারা হয়ে যাওয়ার মত সমস্যা যুক্ত থাকে। হাইপারোপিয়ার জন্য যারা আগে থেকেই চশমা পরেন তাদের এমন সমস্যা হলে চোখ আবার দেখানো উচিত।
হাইপারোপিয়া কিভাবে হয়?
হাইপারোপিয়ার ক্ষেত্রে চোখে প্রবেশ করা আলোকরশ্মি রেটিনাতে না এসে রেটিনার পেছনে মিলিত হয়। হাইপারোপিয়া রোগীর অক্ষিগোলক স্বাভাবিকের তুলনায় আকারে ছোট হয়। জন্মগতভাবে শিশুরা হাইপারোপিক থাকে কারণ তাদের অক্ষিগোলক স্বাভাবিকের তুলনায় ছোট থাকে। বয়স বৃদ্ধির সাথে শরীরের অন্য অঙ্গগুলোর মত অক্ষিগোলকও আকারে বড় হয়, তখন চোখের পাওয়ার স্বাভাবিক হয়ে যায়। বয়স্ক লোকের কাছে দেখার সমস্যা (চালশে দৃষ্টি) এবং হাইপারোপিয়া সম্পূর্ণ আলাদা রোগ।
হাইপারোপিয়ার চিকিৎসাঃ
হাইপারোপিয়া রোগীকে পরিষ্কার দেখার জন্য উত্তল লেন্সের চশমা বা কন্টাক্ট লেন্স পরতে হয় এবং এই পাওয়ার হয় প্লাস। হাইপারোপিয়ার মাত্রা বেশি হলে ল্যাসিক বা এফাকিয়া সার্জারি করা যেতে পারে।