পড়াশোনা

ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন সিস্টেম কি? এর প্রয়োজনীয়তা, সুবিধা, অসুবিধা এবং ব্যবহার।

1 min read

দুই বা ততোধিক ডিভাইসের মধ্যে কোনো ফিজিক্যাল কানেকশন বা ক্যাবল সংযোগ ছাড়া ডেটা কমিউনিকেশনের পদ্ধতি হচ্ছে ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন সিস্টেম। তারবিহীন মাধ্যমের সাহায্যে ওয়্যারলেস ডিভাইসসমূহের মধ্যে যে পদ্ধতিতে ডেটা কমিউনিকেশন হয় তাকে ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন সিস্টেম বলে।

প্রয়োজনীয়তা
যেসব স্থানে তার বা ক্যাবলভিত্তিক যোগাযোগ সম্ভব নয় যেসব স্থানে যোগাযোগের জন্য ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন সিস্টেম অপরিহার্য। আবার প্রযুক্তির উৎকর্ষের ফলে প্রাপ্ত সুবিধাসমূহ পাওয়ার জন্য বিশেষ করে বহনযোগ্য ডিভাইস (ল্যাপটপ, কম্পিউটার, মোবাইল ফোন, স্মার্টফোন, ট্যাবলেট কম্পিউটার) এর ক্ষেত্রে ওয়্যারলেস মাধ্যম ব্যবহার করা আবশ্যকীয়। প্রোডাক্টিভিটি চিন্তা করলে তার সংযোগ, ব্যবহারকারীর জন্য একটি জটিল ও ঝামেলাযুক্ত পদ্ধতি। পক্ষান্তরে ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন সিস্টেমের ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীর কমিউনিকেশন ডিভাইস যদি ওয়্যারলেস সাপোর্টেড হয়, তবে এ সংক্রান্ত জটিলতা খুব কমই থাকে। ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন সিস্টেমে কম দূরত্ব অথবা অধিক দূরত্বের স্থানসমূহের মধ্যে যোগাযোগ অথবা তথ্য স্থানান্তর করা সম্ভব। সেক্ষেত্রে দূরত্ব অনুযায়ী ওয়্যারলেস মাধ্যম নির্বাচন করতে হবে। যেমন-
১. রেডিও ফ্রিকুয়েন্সি কমিউনিকেশন
২. মাইক্রোওয়েভ কমিউনিকেশন
৩. ইনফ্রারেড শর্ট রেঞ্জ কমিউনিকেশন ইত্যাদি।

ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন সিস্টেমের মধ্যে বহুল ব্যবহৃত কয়েকটি সিস্টেম হচ্ছে মোবাইল কমিউনিকেশন সিস্টেম, রেডিও কমিউনিকেশন সিস্টেম, স্যাটেলাইট কমিউনিকেশন সিস্টেম, রিমোট কন্ট্রোল সিস্টেম ইত্যাদি।

ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন সিস্টেমের সুবিধা

  • তার মাধ্যমের দূরত্বগত সীমাবদ্ধতা আছে। ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন সিস্টেম ব্যবহার করে সহজেই এ সীমাবদ্ধতা দূর করা যায়।
  • ডেটা সঞ্চালনের পথে প্রতিবন্ধকতা থাকলে তার মাধ্যমের তুলনায় ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন সিস্টেম বেশি সুবিধাজনক।
  • বহনযোগ্য বা স্থানান্তরযোগ্য ডিভাইসের ক্ষেত্রে সংযোগ পদ্ধতি সহজ।
  • নেটওয়ার্ক স্থাপন পদ্ধতি তার মাধ্যমের তুলনায় সহজ এবং ঝামেলামুক্ত।
  • ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন সিস্টেমে নয়েজের প্রভাব খুবই কম।

 

ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন সিস্টেমের অসুবিধা
  • ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন সিস্টেমে প্রতিবন্ধকতা অনেক সময় ডেটা চলাচলের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করে।
  • ডেটা চলাচল বিঘ্নিত হলে নেটওয়ার্কের দক্ষতা কমে যায়।
  • অনাকাঙ্খিত ব্যবহারকারী কর্তৃক আক্রমনের আশংকা বেশি থাকে।
  • তারযুক্ত নেটওয়ার্কের তুলনায় গতি কম।
  • ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন সিস্টেমে ব্যবহৃত প্রযুক্তি জীববৈচিত্রের জন্য হুমকিস্বরূপ।
ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন সিস্টেমের প্রয়োজনীয়তা ও ব্যবহার
  • ভ্রাম্যমান বা চলমান ব্যক্তির ডেটা কমিউনিকেশনের প্রয়োজন হলে ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন সিস্টেমের মাধ্যমে যোগাযোগ স্থাপন করতে হয়। সময়ের চাহিদা হিসেবে সকলেই এখন ইন্টারনেটের সাথে সার্বক্ষণিক সংযুক্ত থাকতে চায়। কেবলমাত্র ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন সিস্টেমের মাধ্যমেই এটি সম্ভব।
  • যেসকল স্থানে খুব দ্রুত যোগাযোগ স্থাপন করতে হয়, যেমন- দুর্যোগস্থানে, দূর্ঘটনাকবলিত জায়গা, যুদ্ধক্ষেত্র ইত্যাদি ক্ষেত্রে ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন সিস্টেমের প্রয়োজনীয়তা সর্বাধিক।
  • দূর্গম কোন এলাকা যেখানে ক্যাবল সংযোগের মাধ্যমে যোগাযোগ সম্ভব নয় সেখানে ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন সিস্টেমের মাধ্যমে যোগাযোগ স্থাপন করা হয়।
  • GPS (Global Positioning System) এর মাধ্যমে গাড়ি, বিমান, জাহাজ অথবা কোন ব্যক্তির অবস্থান চিহ্নিত করতে এটি ব্যবহৃত হয়। বর্তমানে ট্যাক্সি ক্যাব প্রতিষ্ঠানগুলো এ পদ্ধতিতে তাদের গাড়িগুলোকে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে পরিচালনা করতে পারে। এছাড়া পর্যটন শিল্পে কোন পর্যটকের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করতেও এ পদ্ধতি বেশ কার্যকর।
  • বর্তমান সময়ের সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত যন্ত্র মোবাইল ফোন বা স্মার্টফোন ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন সিস্টেমের সবচেয়ে বড় প্রয়োগ।
  • ব্রডকাস্ট বা সম্প্রচার জাতীয় অ্যাপ্লিকেশনের জন্য (যেমন- টেলিভিশন সম্প্রচার, রেডিও সম্প্রচার ইত্যাদি)। ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন সিস্টেমের ব্যবহার হয়ে থাকে।
  • উড়োজাহাজ বা সমুদ্রগামী জাহাজ চালনায় ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন সিস্টেমের মাধ্যমে ভূ-পৃষ্ঠের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করা হয়।
  • বাসা বাড়িতে নিত্য ব্যবহার্য বিভিন্ন ইলেকট্রিক্যাল এবং ইলেকট্রনিক যন্ত্র দূর থেকে নিয়ন্ত্রণের জন্য ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন সিস্টেম ব্যবহার করা হয়। এক্ষেত্রে রিমোট কন্ট্রোল সিস্টেমের মাধ্যমে টেলিভিশন, এয়ারকন্ডিশনার, কম্পিউটারে ব্যবহৃত মাউস-কিবোর্ড, বাচ্চাদের বিভিন্ন দূরনিয়ন্ত্রিত খেলনা যন্ত্রকে নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা করা হয়।
ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন সিস্টেমের প্রকারভেদ
ওয়্যারলেস কমিউনিকেশনকে ভৌগলিক অবস্থানগত দিক থেকে অথবা ডিভাইসসমূহের মধ্যে দূরত্বের ভিত্তিতে ৪ (চার) ভাগে ভাগ করা যায় যথাঃ

  1. Wireless Personal Area Network (WPAN)
  2. Wireless Local Area Network (WLAN)
  3. Wireless Metropolitan Area Network (WMAN)
  4. Wireless Wide Area Network (WWAN
Rate this post
Mithu Khan

I am a blogger and educator with a passion for sharing knowledge and insights with others. I am currently studying for my honors degree in mathematics at Govt. Edward College, Pabna.

Leave a Comment

x