ত্রয়োদশ অধ্যায় : খাদ্য ও পুষ্টি, অষ্টম শ্রেণির বিজ্ঞান
প্রশ্ন-১. খাদ্য কি?
উত্তর : জীবের দেহ গঠন, ক্ষয়পূরণ এবং শক্তি উৎপাদনে ব্যবহৃত জৈব উপাদানই হলো খাদ্য।
প্রশ্ন-২. পুষ্টি কি? (What is nutrition?)
উত্তর : পুষ্টি হলো এমন একটি শক্তি যা সঠিক পরিমানে পুষ্টিকর খাবার গ্রহনের মাধ্যমে তৈরি হয়। অন্যভাবে বললে, পুষ্টি হলো বিজ্ঞান ও গবেষণার মাধ্যমে প্রাপ্ত জ্ঞান যা খাদ্য এবং পুষ্টি শক্তির সাথে সম্পর্কিত।
প্রশ্ন-৩. পুষ্টিমান বা পুষ্টিমূল্য কী?
উত্তর : কোনো খাদ্যে কী পরিমাণ এবং কত রকম খাদ্য উপাদান নিহিত আছে তার সম্বন্বিত গুণাগুণই ঐ খাদ্যের পুষ্টিমান বা পুষ্টিমূল্য।
প্রশ্ন-৪. খাদ্যের উপাদান কয়টি?
উত্তর : খাদ্যের উপাদান ৬ টি।
প্রশ্ন-৫. খাদ্যের উপাদান কী?
উত্তর : খাদ্যে বিদ্যমান রাসায়নিক উপাদানগুলোই খাদ্য উপাদান হিসেবে পরিচিত।
প্রশ্ন-৬. শক্তিদায়ক খাদ্য উপাদান কী?
উত্তর : শক্তিদায়ক খাদ্য উপাদান হলো শর্করা।
প্রশ্ন-৭. মিশ্র খাদ্য কাকে বলে?
উত্তর : যে খাদ্যে একের অধিক পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান থাকে তাকে মিশ্র খাদ্য বলে।
প্রশ্ন-৮. বিশুদ্ধ খাদ্য কাকে বলে?
উত্তর : যে খাদ্যে শুধু একটি পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান থাকে তাকে বিশুদ্ধ খাদ্য বলে।
প্রশ্ন-৯. মৌলবিপাক কাকে বলে?
উত্তর : দেহে বিপাক ক্রিয়া চালানোর জন্য যে শক্তি প্রয়োজন তাকে মৌলবিপাক বলে।
প্রশ্ন-১০. শর্করায় মৌলিক উপাদানগুলো কি?
উত্তর : সব শর্করাই কার্বন, হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন এই তিনটি মৌলিক উপাদানের সমন্বেয় গঠিত।
প্রশ্ন-১১. গ্লুকোজ কি?
উত্তর : গ্লুকোজ হলো এক ধরনের শর্করা।
প্রশ্ন-১২. ১ গ্রাম শর্করা কত কিলোক্যালরি তাপশক্তি উৎপন্ন করে?
উত্তর : ১ গ্রাম শর্করা ৪ কিলোক্যালরি তাপশক্তি উৎপন্ন করে।
প্রশ্ন-১৩. আমিষে নাইট্রোজেনের পরিমাণ কত?
উত্তর : আমিষে নাইট্রোজেনের পরিমাণ ১৬%।
প্রশ্ন-১৪. ১ গ্রাম চর্বি থেকে কত কিলোক্যালরি শক্তি উৎপন্ন হয়?
উত্তর : ১ গ্রাম চর্বি থেকে ৯ কিলোক্যালরি শক্তি উৎপন্ন হয়।
প্রশ্ন-১৫. স্নেহ পদার্থকে কী বলা হয়?
উত্তর : শক্তি উৎপাদনকারী উপাদান।
প্রশ্ন-১৬. স্নেহ জাতীয় পদার্থে কোন কোন ভিটামিন দ্রবণীয়?
উত্তর : স্নেহ পদার্থে, এ, ডি, ই এবং কে ভিটামিন দ্রবণীয়।
প্রশ্ন-১৭. প্রোটিন কি?
উত্তর : প্রোটিন হলো অ্যামাইনো এসিডের একটি জটিল যৌগ যা হাইড্রোজেন, অক্সিজেন, নাইট্রোজেন ও ফসফরাসের সমন্বয়ে গঠিত।
প্রশ্ন-১৮. সুষম খাদ্য কাকে বলে?
উত্তর : বিভিন্ন খাদ্যবস্তুর এমন সমাহার, যার মধ্যে খাদ্য উপাদানের সবগুলোই পরিমাণ মতো থাকে এবং যা থেকে স্বাভাবিক কাজ কর্মের জন্য উপযুক্ত পরিমাণ ক্যালরি পাওয়া যায়। এমন খাদ্যকে সুষম খাদ্য বলে।
প্রশ্ন-১৯. কিলোক্যালরি কি?
উত্তর : খাদ্যে তাপশক্তি মাপার একক হলো কিলোক্যালরি।
প্রশ্ন-২০. ভিটামিন কাকে বলে?
উত্তর : দেহের স্বাভাবিক পুষ্টি, বৃদ্ধি ও অন্যান্য কার্যাবলি সুষ্ঠুভাবে সস্পাদনসহ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে অতি প্রয়োজনীয় এবং স্বল্প পরিমাণে খাদ্যে উপস্থিত জৈব রাসায়নিক পদার্থকে ভিটামিন বলে।
প্রশ্ন-২১. উপাদান অনুযায়ী খাদ্য বস্তুকে কয়ভাগে ভাগ করা হয়েছে?
উত্তর : উপাদান অনুযায়ী খাদ্য বস্তুকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
প্রশ্ন-২২. পানিতে দ্রবণীয় ভিটামিন কোনটি?
উত্তর : পানিতে দ্রবণীয় ভিটামিন হলো ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স ও সি।
প্রশ্ন-২৩. সূর্যরশ্মি থেকে কোন ভিটামিন পাওয়া যায়?
উত্তর : সূর্যরশ্মি থেকে ভিটামিন ‘ডি’ পাওয়া যায়।
প্রশ্ন-২৪. বুকের হাড় বা পাঁজরের হাড় বেঁকে যাওয়া কোন রোগের লক্ষণ?
উত্তর : রিকেটস।
প্রশ্ন-২৫. বয়স্কদের রিকেটস কী নামে পরিচিত?
উত্তর : বয়স্কদের রিকেটস অস্টিওম্যালেশিয়া নামে পরিচিত।
প্রশ্ন-২৬. কোন রোগে কর্নিয়ার আচ্ছাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়?
উত্তর : জেরপথলিমিয়া রোগে চেখের কর্ণিয়ার আচ্ছাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
প্রশ্ন-২৭. ক্রোটিনিজম কী?
উত্তর : দেহে আয়োডিনের অভাবজনিত একটি রোগ। এটি শিশুদের হয়।
প্রশ্ন-২৮. গলগন্ড রোগের লক্ষণ কী?
উত্তর : গলায় অবস্থিত থাইরয়েড গ্রন্থি ফুলে যায়। গলায় আওয়াজ ফ্যাস ফেসে হয় এবং খাবার গিলতে অসুবিধা হয়।
প্রশ্ন-২৯. অস্টিওম্যালেশিয়া কাকে বলে?
উত্তর : বয়স্কদের রিকেটস রোগকে অস্টিওম্যালেশিয়া বলে।
‘চাল’ কে শ্বেতসার জাতীয় পদার্থ বলা হয় কেন?
উত্তর : চাল আমাদের অন্যতম খাদ্য উপাদান। চাল হতে ভাত পাওয়া যায় যা আমাদের দেশের প্রধান খাদ্য। চাল কার্বন, হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন দ্বারা গঠিত। চাল থেকে উৎপন্ন ভাত আমাদের দেহের কর্মক্ষমতা জোগায়। এটি সহজপাচ্য ও দেহে শোষিত হওয়ার পর খুব কম সময়ে দেহে তাপ উৎপন্ন করার মাধ্যমে দেহে শক্তি জোগায়। উপরোক্ত বৈশিষ্ট্যগুলো শ্বেতসারের সাধারণ বৈশিষ্ট্য। তাই বলা যায়, চাল একটি শ্বেতসার জাতীয় খাদ্য বা পদার্থ।
মানুষের জন্য সামুদ্রিক মাছ গুরুত্বপূর্ণ কেন?
উত্তর : সামুদ্রিক মাছ হলো অতীব প্রয়োজনীয় খনিজ লবণ আয়োডিনের সর্বোৎকৃষ্ট উৎস। এই আয়োডিনের অভাবে মানুষের গলায় অবস্থিত থাইরয়েড গ্রন্থি ক্রমশ আকারে বড় হতে থাকে। এতে গলা ফুলে যায়, যা ঘ্যাগ বা গলগণ্ড রোগ হিসেবে পরিচিত। এই রোগ হতে বাঁচতে আয়োডিন যুক্ত খাবার নিয়মিত গ্রহণ করা উচিত। এজন্যই সামুদ্রিক মাছ মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
প্রশ্ন-৩০. রিকেটস রোগের লক্ষণ কী কী?
উত্তর : রিকেটস রোগের লক্ষণ হলো–
- ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়ামের অভাবে শিশুদের হার নরম হয়ে যায় এবং বৃদ্ধি ব্যাহত হয়।
- পায়ের হাড় ধনুকের মতো বেঁকে যায় এবং দেহের চাপে অন্যান্য হাড়গুলো ও বেঁকে যায়।
- হাত-পায়ের অস্থিসন্ধি বা গিট ফুলে যায়।
- বুকের হাড় বা পাঁজরের হাড় বেঁকে যায়।
প্রশ্ন-৩১. রক্তে হিমোগ্লোবিনের প্রয়োজনীয়তা কি?
উত্তর : লোহিত রক্তকণিকার হিমোগ্লোবিনের গঠন উপাদান হলো লোহা হিমোগ্লোবিনের কারণে রক্তের রং লাল হয়। রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে গেলে–
- দুর্বলতাবোধ, মাথা, গা ঝিমঝিম করে।
- বুক ধড়ফড় করে।
- মাথা ঘোরানো, অল্প পরিশ্রমে হাঁপিয়ে উঠে।
- ওজন হ্রাস ও খাওয়ায় অরুচি দেখা দেয়।