একাদশ অধ্যায় : জ্যোতির্বিজ্ঞান, একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির পদার্থবিজ্ঞান ২য় পত্র

প্রশ্ন-১. জ্যোতির্বিজ্ঞান কি?
উত্তর : জ্যোতির্বিজ্ঞান হচ্ছে বিজ্ঞানের এমন একটি শাখা যেখানে মহাকাশ ও মহাজাগতিক বস্তু সম্পর্কে পর্যালােচনা করা হয়।

প্রশ্ন-২. কোন দেশের বিজ্ঞান সর্বপ্রথম ‘চন্দ্রশেখর সীমা’ নির্ধারণ করেছিলেন?
উত্তর : ভারত।

প্রশ্ন-৩. ইথার কি?
উত্তর : ইথার হচ্ছে একটি কাল্পনিক ও অবিচ্ছিন্ন মাধ্যম, যার স্থিতিস্থাপকতা অনেক বেশি কিন্তু ঘনত্ব খুবই কম। এর তরঙ্গদৈর্ঘ্যে অনেক কম এবং আমাদের চোখে নির্দিষ্ট বর্ণের অনুভূতি সৃষ্টি করে। বাস্তবে ইথারের অস্তিত্ব পাওয়া দুষ্কর। বর্তমানে অনেক ক্ষেত্রেই ইথারের উপস্থিতি অস্বীকার করা হয়।

প্রশ্ন-৪. ‘পারসেক’ বলতে কী বুঝ?
উত্তর : আলোক বর্ষ দৈনন্দিন মানদন্ডে বড় একক, কিন্তু মহাবিশ্বের মানদন্ডে ছোট একক। তাই জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা ব্যবহার করেন এর থেকে কিছুটা বড় একক। তাকে বলা হয় ‘পারসেক’ সংক্ষেপে ‘পিসি। পারসেক গঠিত হয়েছে ‘Parallax of one second of arc’ কথাটির Par এবং sec অংশ দুটি যুক্ত করে। এখানে second হচ্ছে কোণের একক, সময়ের একক নয়। ৩.২৬ আলোকবর্ষ = ১ পারসেক। আলফা সেন্টোরি আছে পৃথিবী থেকে প্রায় ১.২৯ পারসেক দূরে। পাকসেকের চেয়ে বড় একক কিলো পারসেক, মেগাপারসেক প্রভৃতি।

প্রশ্ন-৫. সৌরকলঙ্ক কি?
উত্তর : সূর্যের মধ্যে মাঝে মাঝে যে কালো দাগ দেখা যায় তাকে সৌরকলঙ্ক (Sun spot) বলে। সূর্যের অন্যান্য অংশের চেয়ে সৌরকলঙ্কের উত্তাপ কিছুটা কম থাকে।

প্রশ্ন-৬. উন্মুক্ত মহাবিশ্ব কি?
উত্তর : যদি মহাবিশ্বের গড় ঘনত্ব, সংকট ঘনত্বের চেয়ে কম হয় (Ω<1) তাহলে বস্তুসমূহের মহাকর্ষীয় আকর্ষণ বল এর প্রসারণকে থামাতে পারবে না। তার ফলে অনম্বর কাল ধরে মহাবিশ্ব প্রসারিত হতে থাকবে, কখনও সংকুচিত হবে না। তখন এটিকে উন্মুক্ত মহাবিশ্ব বলা হয়। উন্মুক্ত মহাবিশ্বের জ্যামিতিক আকৃতি হবে অধিবৃত্তাকার।

প্রশ্ন-৭. জ্যোতিপদার্থবিজ্ঞান কাকে বলে?
উত্তর : পদার্থবিজ্ঞানের যে শাথায় আকাশ ও মহাকাশের সূর্য, চন্দ্র, গ্রহ, নক্ষত্র, নীহারিকা ইত্যাদি বিষয়ে তথ্যাদির বিবরণসহ আলােচনা ও অনুসন্ধান করে তাকে জ্যোতিপদার্থবিজ্ঞান বলে।

প্রশ্ন-৮. শ্বেত বামন নক্ষত্র কি?
উত্তর : দুই সৌর ভরের চেয়ে কম ভরের কোনাে নক্ষত্র যখন সংকুচিত হতে থাকে, তখন এর শক্তি মুক্ত হতে থাকে। কিন্তু এটি এমন একটি ধাপে বা অবস্থায় পৌঁছায় যে এটি এর বহিঃস্থ আবরণকে ছুঁড়ে দেয়। ফলে হঠাৎ করে প্রচুর পরিমাণ শক্তি নির্গত হয় যা নক্ষত্রের ঔজ্জ্বল্য বাড়িয়ে দেয়। এই ধাপে নক্ষত্রটি এত উজ্জ্বল হয় যে, খালি চোখেও দেখা যায়। এটি এখন নােভা নক্ষত্র এবং একটি নতুন নক্ষত্র। এই বিস্ফোরণে যা অবশিষ্ট থাকে তাকে বলা হয় শ্বেত বামন নক্ষত্র।

প্রশ্ন-৯. সমতল মহাবিশ্ব কি?
উত্তর : মহাবিশ্বের গড় ঘনত্ব যদি সংকট ঘনত্বের সমান হয় (Ω=1) তাহলে মহাকর্ষীয় আকর্ষণ প্রসারণের কাছে অল্পের জন্য পরাজিত হবে। ফলে প্রসারণ একেবারে থেমে যাবে না, শুধু ধীর গতিতে অনন্তকাল ধরে প্রসারিত হতে থাকবে। এ ক্ষেত্রে প্রসারণজনিত ধাবমান সবকিছু সােজা পথে চলতে থাকবে। স্থান হবে অসীম সমতল অর্থাৎ বক্রতাশূন্য। তখন এটিকে বলা হয় সমতল মহাবিশ্ব। সমতল মহাবিশ্বের জ্যামিতিক আকৃতি হবে সমতল।

প্রশ্ন-১০. এক আলোক বর্ষ = কত মিটার?
উত্তর : এক আলোক বর্ষ = 9.46 x 105 মিটার।

প্রশ্ন-১১. একটি তারার মৃত্যু ঘটে কীভাবে?
উত্তর : তারা হলাে প্লাজমা দশাস্থিত অতি উজ্জ্বল এবং সুবৃহৎ গােলাকার বস্তুপিণ্ড যা গ্যাস ও ধূলিকণার সমন্বয়ে গঠিত। উচ্চ তাপে তারা নিউক্লীয় বিক্রিয়ার মাধ্যমে ক্রমাগত নিজের জ্বালানী উৎপন্ন করে, যা শেষ হয়ে গেলে এর মৃত্যু ঘটে এবং শ্বেত বামন, নিউট্রন তারা বা কৃষ্ণ বিবরের সৃষ্টি হয়।

প্রশ্ন-১২. কক্ষপথ কাকে বলে?
উত্তর : যে বৃত্তাকার বা উপবৃত্তাকার পথে চাঁদ বা যেকোনো কৃত্রিম উপগ্রহ পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করতে থাকে, তাকে কক্ষপথ বলে।

প্রশ্ন-১৩. মহাকাশ অভিযান কাকে বলে?
উত্তর : পৃথিবীর বাইরে মহাশূন্যের রহস্য আবিষ্কারের উদ্দেশ্যে চালিত অনুসন্ধান বা অভিযানকে মহাকাশ অভিযান বলে। মহাকাশ অভিযানের জন্য ব্যবহৃত নভোযানগুলোতে মানুষ থাকতেও পারে আবার নাও থাকতে পারে।

প্রশ্ন-১৪. সূর্য কৃষ্ণগহ্বরে পরিণত হলে পৃথিবী কি সূর্যের চারিদিকে ঘুরবে?
উত্তর : সূর্য কৃষ্ণগহ্বরে পরিণত হলে এর আকার অত্যন্ত ছোট হবে কিন্তু ভরের কোনরূপ পরিবর্তন হবে না এবং সূর্যের ভরকেন্দ্র থেকে পৃথিবীর দূরত্বের কোনো পরিবর্তন হবে না। এতে সূর্য ও পৃথিবীর আকর্ষণ বলেরও কোনো পরিবর্তন হবে না। ফলে পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘুরতে থাকবে।

প্রশ্ন-১৫. গ্রহ কাকে বলে?
উত্তর : মহাকর্ষ বলের প্রভাবে মহাকাশে কতকগুলো জ্যোতিষ্ক সূর্যের চারিদিকে নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট পথে পরিভ্রমণ করে। এসব জ্যোতিষ্ককে গ্রহ বলে। বুধ, শুক্র, পৃথিবী প্রভৃতি সৌরজগতের গ্রহ। এদের নিজেদের কোন আলো বা তাপ নেই৷ এরা তারার মতো মিটমিট করে জ্বলে না।

প্রশ্ন-১৬. পালসার কি?
উত্তর : পালসার হল ‘ঘূর্ণায়মান নিউট্রন নক্ষত্র’ এবং তা বেতার তরঙ্গের অন্যতম উৎস।

প্রশ্ন-১৭. প্লাংক কাল কাকে বলে?
উত্তর : মহাবিস্ফোরণের মুহূর্ত হতে শুরু করে পরবর্তী 10-43sec -ক্ষুদ্র সময়কালটিকে প্লাংক কাল বলে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *