রসায়ন প্রশ্ন ও উত্তর (পর্ব-১০)
প্রশ্ন-১। পারমাণবিক শক্তি কাকে বলে?
উত্তরঃ পরমাণুর কেন্দ্রে কণিকাসমূহ অত্যন্ত শক্তিশালী বল দ্বারা একসাথে অবস্থান করে। শক্তি প্রয়োগ করে পরমাণুর কণিকাসমূহকে বিচ্ছিন্ন করলে যে শক্তি পাওয়া যায় তাকে পারমাণবিক শক্তি বলে।
প্রশ্ন-২। লাইম ওয়াটার (Lime water) কি?
উত্তরঃ লাইম ওয়াটার (Lime water) হল ক্যালসিয়াম হাইড্রোক্সাইডের পাতলা দ্রবণ, যা ঘরবাড়ি হোয়াইট ওয়াশ করতে ব্যবহার করা হয়।
প্রশ্ন-৩। কাঁচা আমের স্বাদ টক কেন?
উত্তরঃ কাঁচা আমে ভিটামিন সি বা অ্যাসকরবিক এসিড থাকে। আর এ এসিড সাধারণত টক স্বাদযুক্ত। তাই কাঁচা আমের স্বাদ টক হয়।
প্রশ্ন-৪। আমলকি খাওয়া প্রয়োজন কেন?
উত্তরঃ আমলকি হচ্ছে ভিটামিন সি জাতীয় খাদ্য। এটি পেশি ও দাঁত মজবুত করে, ক্ষত নিরাময় ও ত্বকের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। আমলকি দেহের হাড়ের গঠন শক্ত করে থাকে। স্কার্ভি ও ভিটামিন সি এর অভাবজনিত রোগ প্রতিরোধে আমলকি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই আমলকি খাওয়া প্রয়োজন।
প্রশ্ন-৫। সার্বজনীন দ্রাবক কাকে বলে? সার্বজনীন দ্রাবকের উদাহরণ
উত্তরঃ যে দ্রাবক জৈব ও অজৈব সব রকমের পদার্থকে দ্রবীভূত করে, তাকে সার্বজনীন দ্রাবক বলে। যেমন, পানি একটি সার্বজনীন দ্রাবক। কেননা পানি সব রকমের পদার্থকে দ্রবীভূত করতে পারে।
প্রশ্ন-৬। তরল কঠিন দ্রবণ কাকে বলে?
উত্তরঃ যেসব দ্রবণে দ্রাবক হিসেবে তরল পদার্থ আর দ্রব হিসেবে কঠিন পদার্থ ব্যবহৃত হয় সেগুলোকে তরল-কঠিন দ্রবণ বলে।
প্রশ্ন-৭। স্ফটিকীকরণ কাকে বলে?
উত্তরঃ যে পদ্ধতিতে লবণাক্ত পানি হতে দানাদার লবণ তৈরি করা হয় সেই পদ্ধতিকে স্ফটিকীকরণ বলে।
প্রশ্ন-৮। পরিস্রাবণ কাকে বলে?
উত্তরঃ ভাসমান কঠিন অদ্রবণীয় পদার্থকে তরল পদার্থ থেকে ছেঁকে আলাদা করার পদ্ধতিকে পরিস্রাবণ বলে।
প্রশ্ন-৯। ইউরিয়া কাকে বলে?
উত্তরঃ প্রাণিদেহের প্রোটিন বিয়োজনের ফলে যে নাইট্রোজেনঘটিত জৈব রাসায়নিক পদার্থ পাওয়া যায় তাকে ইউরিয়া বলে। এটি সার তৈরিতে ও প্লাস্টিক শিল্পে ব্যবহৃত হয়।
প্রশ্ন-১০। ক্যালামাইন কি?
উত্তরঃ ক্যালামাইন হচ্ছে জিংকের একটি আকরিক। এর রাসায়নিক সংকেত ZnCO₃। ক্যালামাইন থেকে কার্বন বিজারণ পদ্ধতিতে জিংক ধাতু নিষ্কাশন করা হয়।
প্রশ্ন-১১। ঘন দ্রবণ ও পাতলা দ্রবণ কাকে বলে?
উত্তরঃ যে দ্রবণে দ্রবের পরিমাণ বেশি থাকে তাকে ঘন দ্রবণ আর যে দ্রবণে দ্রবের পরিমাণ কম থাকে তাকে পাতলা দ্রবণ বলে।
প্রশ্ন-১১। ব্রিটিশ থার্মাল ইউনিট (BTU) কাকে বলে?
উত্তরঃ এক পাউন্ড পানির তাপমাত্রা এক ডিগ্রি ফারেনহাইট বাড়াতে যে পরিমাণ তাপের প্রয়োজন তাকে ব্রিটিশ থার্মাল ইউনিট (BTU) বলে। কয়লার ক্যালরিফিক মানকে BTU দ্বারা প্রকাশ করা হয়। কোনো জ্বালানির ক্যালরিফিক মান যত বেশি হবে সেই জ্বালানি তত ভাল। 1BTU = 1055J।
প্রশ্ন-১২। দ্রব ও দ্রাবক কাকে বলে?
উত্তরঃ দ্রবণে সাধারণত যেটি কম পরিমাণে থাকে অর্থাৎ দ্রবীভূত হয় তাকে দ্রব বলে। আর যেটি বেশি পরিমাণে থাকে অর্থাৎ দ্রবীভূত হয় তাকে দ্রাবক বলে।
প্রশ্ন-১৩। বিস্ফোরক দ্রব্য কাকে বলে?
উত্তরঃ যে দ্রব্য নিজে নিজেই বিক্রিয়া করতে পারে এবং অস্থিত অবস্থায় থাকে তাকে বিস্ফোরক দ্রব্য বলে।
প্রশ্ন-১৪। রসায়নকে কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান বলা হয় কেন?
উত্তরঃ বিজ্ঞানের সব শাখার সাথে রসায়নের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। মেডিকেল সাইন্সে জীবনের রহস্য বুঝতে, রোগ-ব্যাধির কারণ অনুসন্ধান, এর নিরাময় এবং পথ্য নিরূপণে রসায়ন অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। পদার্থবিজ্ঞান মূলত কাজ করে বস্তু নিয়ে, যা পরমাণু ও অণু দ্বারা গঠিত। সুতরাং পদার্থবিজ্ঞানে নিখুঁত জ্ঞান চর্চার জন্য রসায়নের সহায়তা দরকার। কম্পিউটার বিজ্ঞানের মূলে রয়েছে সেমিকন্ডাক্টর ও কম্পিউটার চিপস এবং LCD যাতে প্রয়োজন হয় তরল স্ফটিক। এগুলোর প্রস্তুতি ও বিশোধনে রসায়ন মূখ্য ভূমিকা পালন করে। এ সব কারণেই রসায়নকে কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান বলা হয়।
প্রশ্ন-১৫। থার্মোপ্লাস্টিক পলিমারকে কেন সহজে বর্ধিতকরণ, বাঁকানো ও গলানো এবং তাপ দেওয়া যায়?
উত্তরঃ থার্মোপ্লাস্টিক পলিমার শিকলের কার্বনসমূহের মধ্যে শক্তিশালী বন্ধন গঠিত হয় কিন্তু পার্শ্ববর্তী শিকলসমূহের মধ্যে দুর্বল আকর্ষণ বল কাজ করে। এই শিকলগুলো একটি অপরটির উপর দিয়ে চলাচল করতে পারে। ফলে এ জাতীয় পলিমারকে সহজে সম্প্রসারিত, বাঁকানো ও তাপ প্রয়োগে গলানো যায়। যেমন– পলিথিন, PVC ইত্যাদি।
প্রশ্ন-১৬। এক মোলার দ্রবণ কাকে বলে?
উত্তরঃ একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় ১ লিটার দ্রবণের মধ্যে যদি এক মোল দ্রব দ্রবীভূত থাকে তবে, ঐ দ্রবণকে এক মোলার দ্রবণ বলে।
প্রশ্ন-১৭। জলীয় দ্রবণ কাকে বলে?
উত্তরঃ পানিকে দ্রাবক হিসেবে ব্যবহার করলে যে দ্রবণ তৈরি হয় তাকে জলীয় দ্রবণ বলে।
প্রশ্ন-১৮। মোল সংখ্যা কাকে বলে?
উত্তরঃ কোনো পদার্থে উপস্থিত অণু বা পরমাণুর সংখ্যাকে অ্যাভোগেড্রো সংখ্যা দ্বারা ভাগ করলে যে পরিমাণ পাওয়া যায় সেই পরিমাণকে মোল সংখ্যা বলে।
প্রশ্ন-১৯। রেকটিফাইড স্পিরিট কাকে বলে?
উত্তরঃ 95.6% ইথানল এবং 4.4% পানির মিশ্রণকে রেকটিফাইড স্পিরিট বলে।
প্রশ্ন-২০। দুই এর নিয়ম কাকে বলে?
উত্তরঃ বিভিন্ন মৌলের পরমাণুসমূহ নিজেদের মধ্যে ইলেকট্রন আদান-প্রদান এবং শেয়ারের মাধ্যমে পরমাণুসমূহের শেষ শক্তিস্তরে ২টি ইলেকট্রনের বিন্যাস লাভ করাকে দুই এর নিয়ম বলে।