রসায়ন প্রশ্ন ও উত্তর (পর্ব-২১)
প্রশ্ন-১। রাসায়নিক সাম্যাবস্থা কাকে বলে?
উত্তরঃ বিক্রিয়ার যে অবস্থায় বিক্রিয়ক ও উৎপাদের ঘনমাত্রার কোনো পরিবর্তন হয় না এবং সম্মুখমুখী ও বিপরীতমুখী উভয় বিক্রিয়ার গতিবেগ সমান হয় ও অপরিবর্তিত থাকে তাকে রাসায়নিক সাম্যাবস্থা বলে।
প্রশ্ন-২। গ্লাস ক্লিনার কাকে বলে? গ্লাস ক্লিনারের মূল উপাদান কি?
উত্তরঃ যে রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে গ্লাস পরিষ্কার করা যায় তাকে গ্লাস ক্লিনার বলে। গ্লাস ক্লিনারের মূল উপাদান হলো তরল অ্যামোনিয়া (NH₃)।
প্রশ্ন-৩। লবণ কি? লবণের রাসায়নিক নাম কি?
উত্তরঃ লবণ হচ্ছে একটি যৌগিক পদার্থ, যা মূলত সোডিয়াম ও ক্লোরিন নামের দুই রকম মৌলিক পদার্থের উপাদান দিয়ে তৈরি। লবণের রাসায়নিক নাম হলো সোডিয়াম ক্লোরাইড (NaCl)। এটি খাবার লবণ হিসেবে বেশি পরিচিত।
প্রশ্ন-৪। জারক ও বিজারক কাকে বলে?
উত্তরঃ জারণ বিজারণ ইলেক্ট্রনীয় মতবাদ অনুসারে, যে সব মৌল, মূলক বা আয়ন বিক্রিয়াকালে ইলেকট্রন গ্রহণ করে তাকে জারক বলে এবং যেসব মৌল, মূলক বা আয়ন বিক্রিয়াকালে ইলেকট্রন বর্জন বা ত্যাগ করে তাকে বিজারক বলে।
প্রশ্ন-৫। শতকরা সংযুক্তি কাকে বলে?
উত্তরঃ কোন যৌগের ১০০ ভাগ ভরে তার উপাদান মৌলসমূহের কোন কোন মৌল কত ভাগ ভরে বিদ্যমান থাকে, তাকে ঐ যৌগের শতকরা সংযুক্তি বলে।
প্রশ্ন-৬। রাসায়নিক পরিবর্তন কাকে বলে? রাসায়নিক পরিবর্তনের উদাহরণ
উত্তরঃ যে পরিবর্তনের ফলে এক বা একাধিক পদার্থ পরিবর্তিত হয়ে সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী নতুন পদার্থে পরিণত হয়, তাকে রাসায়নিক পরিবর্তন বলে। যেমন– লোহায় মরিচা পড়া রাসায়নিক পরিবর্তনের উদাহরণ।
প্রশ্ন-৭। সাম্য ধ্রুবক কাকে বলে?
উত্তরঃ নির্দিষ্ট তাপমাত্রা ও চাপে কোনো একটি উভমুখী বিক্রিয়ার সাম্যাবস্থায় উৎপাদসমূহের যথাযথ ঘাতসহ সক্রিয়ভরের গুণফল ও বিক্রিয়কসমূহের যথাযথ ঘাতসহ সক্রিয়ভরের গুণফলের অনুপাত সর্বদাই ধ্রুবক হয়, একেই সাম্য ধ্রুবক বলে।
প্রশ্ন-৮। রাসায়নিক গণনা কী?
উত্তরঃ বিভিন্ন রাসায়নিক পরিবর্তনের ক্ষেত্রে বিক্রিয়ক ও উৎপাদের পরিমাণগত হিসাব-নিকাশ হলো রাসায়নিক গণনা।
প্রশ্ন-৯। রাসায়নিক বিক্রিয়ার বেগ বা গতি কি?
উত্তরঃ রাসায়নিক বিক্রিয়ার বেগ বা গতি হচ্ছে সময়ের সাথে ঘনমাত্রার পরিবর্তনের হার। বেগ শব্দটির অর্থ হলাে সময়ের সাথে কোন কিছুর পরিবর্তন। রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটার সময় বিক্রিয়কের পরিমাণ কমতে থাকে এবং উৎপাদের পরিমাণ বাড়তে থাকে। কোন বিক্রিয়ার বিক্রিয়ক বা উৎপাদের ঘনমাত্রা একক সময়ে কতটুকু হ্রাস পায় বা বৃদ্ধি পায় তাকে ঐ বিক্রিয়ার বেগ বা গতি বলা হয়। সাধারণত বিক্রিয়ার গতির একককে মােল লিটার-1 সেকেন্ড-1 এ প্রকাশ করা হয়।
প্রশ্ন-১০। অ্যাসিড অ্যানহাইড্রাইড কাকে বলে?
উত্তরঃ কোন কোন অম্লীয় অক্সাইড পানির সাথে বিক্রিয়া করে একটি মাত্র এসিড গঠন করে। সেই অম্লীয় অক্সাইডগুলিকে অ্যাসিড অ্যানহাইড্রাইড বলে। যেমনঃ N₂O₅ পানির সাথে বিক্রিয়া করে HNO₃ এসিড উৎপন্ন করে।
প্রশ্ন-১১। স্থূল সংকেত কাকে বলে?
উত্তরঃ কোন যৌগের যে সরলতম সংকেত উহার অণুস্থিত পরমাণুসমূহের সংখ্যার অনুপাত নির্দেশ করে তাকে ঐ যৌগের স্থূল সংকেত বলে।
প্রশ্ন-১২। অ্যানালার কি?
উত্তরঃ রাসায়নিক বিক্রিয়ার সময় সবচেয়ে বিশুদ্ধ (99%) বিক্রিয়ককে অ্যানালার বলে।
প্রশ্ন-১৩। লিমিটিং বিক্রিয়ক কাকে বলে?
উত্তরঃ রাসায়নিক বিক্রিয়ার সময় একাধিক বিক্রিয়কের মধ্যে যে বিক্রিয়ক বিক্রিয়া করার পর আর অবশিষ্ট থাকে না তাকে লিমিটিং বিক্রিয়ক বলে।
প্রশ্ন-১৪। দুই-এর নিয়ম কাকে বলে?
উত্তরঃ বিভিন্ন মৌলের পরমাণুসমূহ নিজেদের মধ্যে ইলেকট্রন আদান-প্রদান এবং শেয়ারের মাধ্যমে পরমাণুর যোজ্যতা স্তরে ২টি ইলেকট্রন বিন্যাস লাভ করাকে দুই-এর নিয়ম বলে।
প্রশ্ন-১৫। আয়নিক বন্ধন কাকে বলে?
উত্তরঃ ইলেকট্রন আদান-প্রদানের মাধ্যমে গঠিত ক্যাটায়ন এবং অ্যানায়নসমূহ যে স্থির বৈদ্যুতিক আকর্ষণ বল দ্বারা যৌগের অণুতে আবদ্ধ থাকে তাকে আয়নিক বন্ধন বলে।
প্রশ্ন-১৬। তেজস্ক্রিয় আইসােটোপ কাকে বলে?
উত্তরঃ নিউক্লিয়ার বিক্রিয়ায় বিভিন্ন কণা (যেমন আলফা, বিটা ও গামা) বিকিরণের মাধ্যমে যে আইসােটোপ তৈরি হয়, তাকে তেজস্ক্রিয় আইসােটোপ বলে।
প্রশ্ন-১৭। ইলেকট্রন বিন্যাস কাকে বলে?
উত্তরঃ কোনাে পরমাণুর বিভিন্ন স্তরে কয়টি ইলেকট্রন কীভাবে আছে তার প্রকাশকে ইলেকট্রন বিন্যাস বলে।
প্রশ্ন-১৮। শত্তিস্তর কাকে বলে?
উত্তরঃ কোন পরমাণুর নিউক্লিয়াসের বাহিরে ইলেকট্রনগুলাে যে নির্দিষ্ট কক্ষপথে অবস্থান করে, সেই কক্ষপথগুলােকে এ পরমাণুর শত্তিস্তর বলে।
প্রশ্ন-১৯। পরমাণু কাকে বলে?
উত্তরঃ মৌলিক পদার্থের বৈশিষ্ট্য রক্ষাকারী ক্ষুদ্রতম কণা, যা সরাসরি রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে তাকে পরমাণু বলে।
প্রশ্ন-২০। পারমাণবিক সংখ্যা কাকে বলে?
উত্তরঃ কোনাে মৌলের একটি পরমাণুর নিউক্রিয়াসে বিদ্যমান প্রােটনের সংখ্যাকে ঐ মৌলের পারমাণবিক সংখ্যা বলে।