দ্বিতীয় অধ্যায় : প্রাণীর পরিচিতি, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির জীববিজ্ঞান ২য় পত্র

প্রশ্ন-১। রুই মাছের বৈজ্ঞানিক নাম কি?
উত্তরঃ রুই মাছের বৈজ্ঞানিক নাম হলো— Labeo rohita.

প্রশ্ন-২। ঘাসফড়িংয়ের বৈজ্ঞানিক নাম কি?
উত্তরঃ ঘাসফড়িং-এর বৈজ্ঞানিক নাম হলো Poekilocerus pictus।

প্রশ্ন-৩। লার্ভা কি?
উত্তরঃ লার্ভা হলো পতঙ্গের পরিস্ফুটনের একটি দশা।

প্রশ্ন-৪। ওমাটিডিয়াম কি?
উত্তরঃ ওমাটিডিয়াম হলো পুঞ্জাক্ষি বা যৌগিক চক্ষুর দর্শন একক।

প্রশ্ন-৫। হাইপোস্টোম কী?
উত্তরঃ Hydra-র দেহের সম্মুখ প্রান্তের মুখছিদ্রযুক্ত উঁচু ও ছোট মোচাকৃতি অংশটি হলো হাইপোস্টোম।

প্রশ্ন-৬। সিলোম কি?
উত্তরঃ সিলোম হলো পৌষ্টিকনালি ও দেহপ্রাচীরের মধ্যবর্তী ফাঁকা স্থান যা মেসোডার্মাল পেরিটোনিয়াম কলার আবরণ দ্বারা আবৃত থাকে।

প্রশ্ন-৭। হিমোসিল কি?
উত্তরঃ হিমোসিল হলো আর্থ্রোপোডা পর্বের প্রাণীদেহের পেরিটোনিয়াল আবরণী বিহীন এক ধরনের অপ্রকৃত দেহ গহ্বর যা হিমোলিম্ফ ধারণ করে।

প্রশ্ন-৮। নিডোসাইট কী?
উত্তরঃ Cnidaria পর্বের সকল প্রাণীর এপিডার্মিসের পেশি আবরণী কোষসমূহের মধ্যবর্তীস্থানে অবস্থিত বিশেষায়িত কোষগুলোর নাম হলো নিডোসাইট।

প্রশ্ন-৯। নেমাটোসিস্ট কী?
উত্তরঃ হাইড্রার নিডোব্লাস্ট কোষের অভ্যন্তরস্থ গহ্বর ও সূত্রকযুক্ত থলেটিই হলো নেমাটোসিস্ট।

প্রশ্ন-১০। উপযোজন কী?
উত্তরঃ দর্শনীয় বস্তু ও লেন্সের মধ্যবর্তী দূরত্ব অপরিবর্তিত রেখে বিভিন্ন দূরত্বে অবস্থিত বস্তুকে স্পষ্টভাবে দেখার জন্য চোখে যে বিশেষ ধরনের পরিবর্তন ঘটে তাই হলো উপযোজন।

প্রশ্ন-১১। ইন্টারস্টিশিয়াল কোষ কী?
উত্তরঃ পেশি-আবরণী কোষের অন্তর্মুখী সরুপ্রান্তের ফাঁকে-ফাঁকে গুচ্ছাকারে, মেসোগ্লিয়া ঘেঁষে অবস্থানকারী কোষগুলোই হলো ইন্টারস্টিশিয়াল কোষ।

প্রশ্ন-১২। স্ক্লেরাইট কী?
উত্তরঃ ঘাসফড়িং-এর প্রতিটি দেহখণ্ডকে কঠিন প্লেটের মতো কিউটিকল নির্মিত যে বহিঃকঙ্কাল থাকে তাই স্ক্লেরাইট।

প্রশ্ন-১৩। রক্ত তঞ্চন কী?
উত্তরঃ যে প্রক্রিয়ায় কোনো ক্ষতের মুখে রক্ত জমাট বেঁধে দেহ থেকে অবাঞ্চিত রক্তপাত বন্ধ হয় তাই হলো রক্ত তঞ্চন।

প্রশ্ন-১৪। চলন কী?
উত্তরঃ খাদ্য-অন্বেষণ, আত্মরক্ষা, প্রজনন ও পরিবেশীয় উদ্দীপনায় সাড়া দেওয়ার জন্য প্রাণীর স্বেচ্ছায় ও স্ব-উদ্যোগে স্থান পরিবর্তন করাই হলো চলন।

প্রশ্ন-১৫। মিথোজীবিতা বলতে কী বোঝায়?
উত্তরঃ যখন দুটি ভিন্ন প্রজাতিভুক্ত জীব ঘনিষ্ঠভাবে সহাবস্থানের ফলে পরস্পরের কাছ থেকে উপকৃত হয়, তখন এ ধরনের সহচর্যকে মিথোজীবিতা বলে। যেমন- Chlorohydra viridissima নামক সবুজ হাইড্রা ও Zoochlorella নামক শৈবাল মিথোজীবিতার মাধ্যমে পরস্পরের কাছ থেকে উপকৃত হয়।

প্রশ্ন-১৬। ডিপ্লোব্লাস্টিক প্রাণী বলতে কী বোঝায়?
উত্তরঃ ডিপ্লোব্লাস্টিক অর্থ হলো দ্বিস্তরী। যেসব প্রাণীর ভ্রূণে এক্টোডার্ম ও এন্ডোডার্ম নামক দুটি স্তর বিদ্যমান থাকে তারা হলো দ্বিস্তরী প্রাণী। Cnidaria পর্বের প্রাণীরা দ্বিস্তরী।

প্রশ্ন-১৭। সিলেন্টেরন বলতে কী বোঝায়?
উত্তরঃ Hydra-র দেহ প্রাচীরের ভেতরে আবদ্ধ লম্বা ও নলাকার গহ্বরটির নাম সিলেন্টেরন। পরিপাক ও সংবহনে জড়িত থাকে বলে একে গ্যাস্ট্রোভাস্কুলার গহ্বরও বলে। এর এক প্রান্তে মুখছিদ্র এবং অপর প্রান্ত পদতলে গিয়ে সমাপ্ত হয়।

প্রশ্ন-১৮। হাইড্রাকে কেন Cnidaria পর্বভুক্ত করা হয়েছে?
উত্তরঃ হাইড্রার দেহ দুইটি স্তরে বিভক্ত এবং অরীয় প্রতিসম। এদের দেহে সিলেন্টেরন নামক গহ্বর বিদ্যমান, যা মূলত Cnidaria পর্বের প্রাণীদের বৈশিষ্ট্য। তাই হাইড্রাকে Cnidaria পর্বভুক্ত করা হয়েছে।

প্রশ্ন-১৯। হাইড্রাতে স্বনিষেক ঘটে না কেন?
উত্তরঃ অধিকাংশ হাইড্রা উভলিঙ্গিক হলেও এদের নিজের শুক্রাণুর সাথে ডিম্বাণুর মিলন হয় না অর্থাৎ স্বনিষেক ঘটে না। হাইড্রার স্ত্রীজননাঙ্গ ও পুংজননাঙ্গ ভিন্ন ভিন্ন সময়ে পরিপক্কতা লাভ করে। এ কারণেই হাইড্রাতে স্বনিষেক ঘটে না।

প্রশ্ন-২০। ওসেলাসকে সংবেদী অঙ্গ বলা হয় কেন?
উত্তরঃ ঘাসফড়িং এর অন্যতম আলোক সংবেদী অঙ্গ হলো ওসেলাস। এটি প্রত্যেক অ্যান্টেনার গোড়ায় অবস্থিত। কারণ এর সাহায্যে ঘাসফড়িং আলোকের তীব্রতায় তারতম্য অনুভব করতে পারে। পাশাপাশি বস্তুর প্রতিবিম্বও সৃষ্টি করতে পারে। এজন্যই ওসেলাসকে আলোক সংবেদী অঙ্গ বলা হয়।

প্রশ্ন-২১। লুপিং চলন বলতে কী বোঝায়?
উত্তরঃ হাইড্রা লুপ গঠনের মাধ্যমে যে চলন সম্পন্ন করে তাকে লুপিং চলন বলা হয়। অধিক দূরত্ব অতিক্রম করার জন্য হাইড্রা এই চলন সম্পন্ন করে। এ পদ্ধতিতে হাইড্রা প্রথমে কর্ষিকার উপরে ভর করে সোজা হয়ে দাঁড়ায়। অতঃপর গমন পথের দিকে দেহকে বাঁকিয়ে কর্ষিকা দ্বারা চলন তল স্পর্শ করে এবং লুপ গঠন করে। এভাবে ধীর গতিতে হাইড্রা দেহকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যায়।

প্রশ্ন-২২। ওমাটিডিয়াম বলতে কী বোঝায়?
উত্তরঃ পুঞ্জাক্ষি বা যৌগিক চক্ষুর একককে ওমাটিডিয়াম বলে। এটি আকৃতির দিক দিয়ে সাধারণ চক্ষু থেকে আলাদা ধরনের। এটি ওমাটিডিয়াম, কর্ণিয়া, কর্ণিয়াজেন কোষ, কোন কোষ, ক্রিস্টালাইন কোন, আইরিশ পিগমেন্ট আবরণ, র্যাবডোম, রেটিনুলার কোষ, রেটিনুলার আবরণ, ভিত্তি পর্দা ও স্নায়ুতন্তু নিয়ে গঠিত|

প্রশ্ন-২৩। অসম্পূর্ণ রূপান্তর বলতে কী বোঝায়?
উত্তরঃ অসম্পূর্ণ রূপান্তর হলো এক ধরনের ভূণোত্তর পরিস্ফুটন। এই রূপান্তরে একটি পতঙ্গ ডিম ফুটে বেরিয়ে কয়েকটি নিম্ফ দশা অতিক্রমের পর পূর্ণাঙ্গ প্রাণীতে পরিণত হয়। এ প্রক্রিয়ায় শিশু প্রাণীটি দেখতে পূর্ণাঙ্গ প্রাণীর মতো হয়। শিশু প্রাণীটিকে নিম্ফ বলে। এদের দেহ ছোট, ডানা ও জননাঙ্গ থাকে না। নিম্ফ খোলস মোচনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ প্রাণীতে রূপান্তরিত হয়।

প্রশ্ন-২৪। তরুণাস্থিময় মাছ ও অস্থিময় মাছ এর মধ্যে পার্থক্য কি?
উত্তরঃ তরুণাস্থিময় মাছের অন্তঃকঙ্কাল তরুণাস্থি নির্মিত, অপরদিকে অস্থিময় মাছের অন্তঃকঙ্কাল অস্থি নির্মিত। তরুণাস্থিময় মাছের দেহ প্ল্যাকয়েড আঁইশ দ্বারা আবৃত হলেও অস্থিময় মাছের দেহে সাইক্লয়েড, টিনয়েড বা গ্যানয়েড আঁইশে আবৃত। তরুণাস্থিময় মাছের অঙ্কীয় তলে মুখছিদ্র অবস্থিত এবং ৫-৭ জোড়া উন্মুক্ত ফুলকারন্ধ্র বিদ্যমান। পক্ষান্তরে অস্থিময় মাছের মুখছিদ্র প্রান্তীয় এবং চারজোড়া ফুলকা বিদ্যমান। তরুণাস্থিময় মাছের কানকোয়া নেই যা অস্থিময় মাছে আছে। এছাড়া তরুণাস্থিময় মাছের পুচ্ছ পাখনা হেটেরোসার্কাল ধরনের হলেও অস্থিময় মাছের পুচ্ছ পাখনা হোমোসার্কাল ধরনের হয়।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *