শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আবারো অনলাইন ক্লাসের সম্ভাবনা

করোনা মহামারীর সংক্রমণ ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশের সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবারো অনলাইন ক্লাস চালু করার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ঈদ-উল-আযহার ছুটির পর এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এদিকে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) প্রশাসন সশরীরে স্নাতকোত্তর ক্লাস বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ ব্যাপারে প্রতিষ্ঠানটির ছাত্র কল্যাণ অধিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক মিজানুর রহমান জানান, দেশের বর্তমান কোভিড পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান প্রফেসর দিল আফরোজা বেগম জানিয়েছেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে কমিশন সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবারও অনলাইন ক্লাস চালুর ব্যাপারে চিঠি দেওয়া হবে। তবে তরুণদের করোনা সংক্রমণের হার কম হওয়ায় আমরা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশের অপেক্ষায় রয়েছি।

এদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, করোনা সংক্রমণ শিক্ষা মন্ত্রণালয় পর্যবেক্ষণ করছে। ঈদের পর সংক্রমণের হার বাড়লে অনলাইনে ক্লাস শুরু করতে নির্দেশনা দেওয়া হবে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর এই ব্যাপারে অতীত অভিজ্ঞতা রয়েছে, তবে দরিদ্র ও গ্রামীণ শিক্ষার্থীদের বিষয়টি বিবেচনায় রাখা হয়েছে।

অন্যদিকে ২০২১ সালে দেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপর ইউজিসির এক সমীক্ষা দেখা গেছে, দেশের প্রায় ৮৭ শতাংশ শিক্ষার্থীর কাছে স্মার্টফোন রয়েছে। তবে অধিকাংশেরই ইন্টারনেট সংযোগ নেই বা মোবাইল ডেটা ক্রয়ের সামর্থ্য নেই।এ ব্যাপারে ঢাবির উপউপাচার্য (অ্যাকাডেমিক) অধ্যাপক একেএম মাকসুদ কামাল জানান, এখন অভিজ্ঞতাসম্পন্ন দক্ষ শিক্ষকদের নিয়ে অনলাইন ক্লাস শুরু করতে তাদের প্রস্তুতি রয়েছে। অধিকাংশ শিক্ষার্থীর কাছে বর্তমানে ডিজিটাল ডিভাইস রয়েছে।

তিনি আরও জানান, অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার জন্য সবকিছুর ব্যবস্থা ও শিক্ষার্থীদের স্মার্টফোনও দেব। তবে ডেটার অভাবে কেউ অনলাইনে ক্লাস করতে পারবে না, এমনটা হবেনা।

নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম জানান, বর্তমানে আমাদের জন্য অনলাইনে ক্লাস ও পরীক্ষা পরিচালনা আরও সহজ হয়ে গেছে। আমাদের প্রতিষ্ঠানে সেই পরিবেশ রয়েছে। আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও সরকারি নির্দেশনা অনুসরণ করবো। করোনাভাইরাস মহামারী জাতীয় কারিগরি উপদেষ্টা কমিটির সদস্য অধ্যাপক নজরুল ইসলাম জানান, সংক্রমণ বাড়ছে। তবে অস্বাভাবিক হারে সংক্রমণ বৃদ্ধি পেলে তারা সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পরামর্শ দেবেন। তবে সরকারকে অবশ্যই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাস্কের ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।

প্রসঙ্গত, করোনা সংক্রমণ বিস্তার রোধে ২০২০ সালে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয় সরকার। একই বছরের ৩০ মার্চ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনলাইনে ক্লাসের অনুমতি দেওয়া হয়। একই দিন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েও অনলাইন-ক্লাস পরীক্ষা শুরু হয়।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *