প্রশ্ন-১। অবকাঠামো কাকে বলে?
উত্তরঃ একটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য যেসব অর্থনৈতিক উপাদান অপরিহার্য সেগুলোকে অবকাঠামো বলে।
প্রশ্ন-২। অর্থনৈতিক মন্দা কাকে বলে?
উত্তরঃ একটি দেশের অর্থনীতিতে যখন বেকারত্ব, মুদ্রাসংকোচন, উৎপাদন ঘাটতি দেখা দেয় তখন তাকে অর্থনৈতিক মন্দা বলে।
প্রশ্ন-৩। অর্থনৈতিক কাঠামো বলতে কী বোঝ?
উত্তরঃ অর্থনীতির কাঠামো বলতে সামগ্রিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড, অর্থনীতির খাতসমূহের গঠন ও আকৃতি, অর্থব্যবস্থার গতিধারা ও উন্নয়ন এবং মানুষে মানুষে অর্থনৈতিক সম্পর্কের ধরনকে বোঝায়।
প্রশ্ন-৫। প্রাকৃতিক পরিবেশ কাকে বলে?
উত্তরঃ একটি দেশের ভৌগোলিক অবস্থান, ভূপ্রকৃতি, মাটি, জলবায়ু, নদনদী, খনিজ, বনজ, প্রাণিজ প্রভৃতি প্রাকৃতিক সম্পদের সম্মিলিত প্রভাবে সৃষ্ট পারিপার্শ্বিক অবস্থাকে সে দেশের প্রাকৃতিক পরিবেশ বলে।
প্রশ্ন-৬। প্রাগৈতিহাসিক কাল কী?
উত্তরঃ যে যুগে মানুষ সবচেয়ে বেশি সময় অতিবাহিত করেছে তাকে প্রাগৈতিহাসিক কাল বলে।
প্রশ্ন-৭। কত সালে ভারত উপমহাদেশ ব্রিটিশ শাসনমুক্ত হয়?
উত্তরঃ ১৯৪৭ সালে ভারত উপমহাদেশ ব্রিটিশ শাসনমুক্ত হয়।
প্রশ্ন-৮। ইংরেজ শাসনামলে বাংলার অর্থনৈতিক অবস্থা কীরূপ ছিল?
উত্তরঃ ইংরেজ শাসনামলে বাংলার অর্থনৈতিক অবস্থা ছিল অনুন্নত।
১৭৫৭ সালে পলাশির যুদ্ধে সিরাজ-উদ-দৌলার পতনের মধ্য দিয়ে বাংলার অর্থনৈতিক ভাগ্যে বিপর্যয় নেমে আসে। ক্লাইভের দ্বৈত শাসন, ছিয়াত্তরের মন্বন্তর ও চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক ভিত্তি দুর্বল করে দেয়। এ সময়ে বাংলায় তেমন কোনো শিল্প স্থাপন হয় নাই। ব্রিটিশরা এদেশের কৃষকদের নীল চাষে বাধ্য করে। বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ব্রিটিশরা দু’শ বছর পিছিয়ে দিয়েছে।
প্রশ্ন-৯। মূলধনের স্বল্পতাই কি অর্থনৈতিক পশ্চাৎপদতার প্রধান কারণ? ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ হ্যাঁ, মূলধনের স্বল্পতাই অর্থনৈতিক পশ্চাৎপদতার প্রধান কারণ। মূলধন অর্থনৈতিক উন্নয়নের পূর্বশর্ত। একটি দেশে মূলধন গঠনের হার খুবই কম কারণ জনগণের মাথাপিছু আয় কম। মূলধনের অভাবে প্রাকৃতিক সম্পদ এবং জনশক্তির সুষ্ঠু ব্যবহার সম্ভব হচ্ছে না। নতুন নতুন শিল্পকারখানা স্থাপন করা যাচ্ছে না। ব্যাংক ব্যবস্থা খুব একটা উন্নত হয় না। ফলে পুঁজি গঠনের অভাবে ব্যাপক বিনিয়োগ হয় না এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন স্থবির হয়ে পড়ে। এসব কারণে বলা যায়, মূলধনের স্বল্পতাই অর্থনৈতিক পশ্চাৎপদতার প্রধান কারণ।
প্রশ্ন-১০। স্বাধীনতা পূর্ববর্তী সময়ে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা কেমন ছিল?
উত্তরঃ স্বাধীনতা পূর্ববর্তী সময়ে বাংলাদেশের অর্থনীতি ছিল অত্যন্ত নাজুক প্রকৃতির।
ব্রিটিশ ও পাকিস্তানিদের বৈষম্য ও নির্যাতনমূলক নীতির কারণে এদেশের অর্থনীতি মারাত্মকভাবে বিপর্যাপ্ত হয়। শুরুতে সম্পদ সৃষ্টি ও রপ্তানি আয়ের দিক থেকে পশ্চিম পাকিস্তানের তুলনায় পূর্ব পাকিস্তানের অবস্থা অনুকূল ছিল। কিন্তু পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের বিমাতাসুলভ নীতির কারণে পরবর্তীতে ধীরে ধীরে দেশের পূর্ব অঞল ঘাটতি এলাকায় পরিণত হয়।
প্রশ্ন-১১। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রাথমিক খাতের প্রাধান্য রয়েছে- বলতে তুমি কী বোঝ?
উত্তরঃ কৃষি খাতকে প্রাথমিক খাত বলা হয়। বাংলাদেশ কৃষিনির্ভর একটি উন্নয়নশীল দেশ। এদেশের প্রায় ৭০% লোক প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কৃষির ওপর নির্ভরশীল। আগের চেয়ে কৃষির উৎপাদন অনেক বেড়েছে। জাতীয় আয়ের প্রধান উৎস, প্রধান পেশা, শিল্পের কাঁচামাল ও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের ক্ষেত্রে এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কৃষি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। তাই বলা যায়, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রাথমিক খাতের প্রাধান্য রয়েছে।
প্রশ্ন-১২। বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান কীরূপ?
উত্তরঃ বাংলাদেশ ভারতীয় উপমহাদেশের পূর্বাংশে ২০°৩৪´ হতে ২৬°৩৮´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°০১´ হতে ৯২°৪১´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যে অবস্থিত।
দেশটির তিন দিকেই ভারতের অবস্থান। দক্ষিণ-পূর্বে মায়ানমারের সাথেও কিছুটা সীমান্ত সংযোগ রয়েছে। দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর। ভারত ও মায়ামনারের সাথে বাংলাদেশের সীমান্ত দৈর্ঘ্য যথাক্রমে ৩,৭১৫ কি.মি এবং ২৮০ কি.মি। বঙ্গোপসাগরের সাথে ৭১৬ কি. মি. এর উপকূল রেখা রয়েছে।
প্রশ্ন-১৩। পৃথিবীতে মানুষের বসবাসের ইতিহাসকে কয় ভাগে ভাগ করা হয়?
উত্তরঃ পৃথিবীতে মানুষের বসবাসের ইতিহাস ২৫ লক্ষ বছর পুরোনো। এ সময়কালকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়। যথা-১. প্রাগৈতিহাসিক যুগ; ২. সুপ্ত ঐতিহাসিক যুগ; ৩. ঐতিহাসিক যুগ।
প্রশ্ন-১৪। কেন পশ্চিম পাকিস্তানের তুলনায় পূর্ব পাকিস্তানের মাথাপিছু আয় কম ছিল?
উত্তরঃ পশ্চিম পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের ভ্রান্ত নীতির ফলে পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে অর্থনৈতিক বৈষম্য ব্যাপক আকারে ছিল। দেশ বিভাগের পর ১৯৪৯-৫০ সনে পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মাথাপিছু আয় ছিল যথাক্রমে ৩০৫ টাকা ও ৩৩০ টাকা। ১৯৬৪-৬৫ অর্থবছরে পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মাথাপিছু আয়ের ব্যবধান আরও বৃদ্ধি পায় এবং এই দুই অঞ্চলের মাথাপিছু আয় যথাক্রমে ৩২৭ টাকা ও ৪৬৫ টাকায় দাঁড়ায়। অর্থনৈতিক বৈষম্য কারণে ১৯৭০ সাল নাগাদ পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মাথাপিছু আয়ের ব্যবধান বৃদ্ধি পেয়ে ৩৪% ভাগে দাঁড়ায়।